কলকাতা 

Jahangirpuri Clash : মমতার নির্দেশে সাম্প্রদায়িক হিংসা বিধ্বস্ত জাহাঙ্গীরপুরীতে শুক্রবার যাচ্ছেন তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধিদল

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : চার দিন আগে দিল্লীতে যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়েছে তা নিয়ে সারা দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। চারদিন আগে এই ঘটনা ঘটলেও এই প্রথম তৃণমূল কংগ্রেস ঘটনাস্থলে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরি তে যে সাম্প্রদায়িক অশান্তি হয়েছে তার সঙ্গে পশ্চিমবাংলার যোগ স্পষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের একটা বড় অংশ পশ্চিমবাংলার পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা বলে জানা গেছে, এরা সকলেই মুসলিম। পশ্চিমবাংলার বাঙালি মুসলমানদের উপর আঘাত আসার পরও তৃণমূল কংগ্রেস এতদিন চুপ করে ছিল, গতকাল বাম নেত্রী বৃন্দা কারাত ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরে তৃণমূল সংসদীয় দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার এই সংসদীয় দল ঘটনাস্থলে যাবেন বলে জানা গেছে। তাঁরা ওখান থেকে ফিরে এসে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রিপোর্ট পেশ করবেন।

হনুমান জয়ন্তি শোভাযাত্রা কে কেন্দ্র করে দিল্লির জাহাঙ্গীর পুরীতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়। এই শোভাযাত্রা মিশ্র এলাকার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল এবং যে সময় যাচ্ছিল শেষ সময় ইফতারের সময় ছিল। জাহাঙ্গীরপুরি মসজিদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মুসলিম এবং ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে নানারকম কটুক্তি শোভাযাত্রা থেকে করা হয় তারই পাল্টা হিসেবে সহিংসতা হয় বলে জানা গেছে।

Advertisement

এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে যায় বাঙালি মুসলিমরা। রুটি রুজির সন্ধানে অনেক বাঙালি কে এখন দিল্লী মুম্বাই গুজরাট মহারাষ্ট্র রাজস্থানে যেতে হয়। তেমনি দিল্লি সিমাপুরি এবং জাহাঙ্গীর পুরীতে পশ্চিমবাংলার বহু মানুষ বাস করে। কাজের সন্ধানে গিয়ে তারা এই সকল বস্তি এলাকায় বসবাস করে এদের অধিকাংশই মুসলিম। বাঙালি মুসলিমদের নাম জড়িয়ে যাওয়ার পরেও আশ্চর্যজনক হলেও লক্ষ্য করা গেল পশ্চিমবাংলার তৃণমূল কংগ্রেস দিল্লির সহিংসতা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

গতকাল আবার ওই এলাকায় বেআইনি নির্মাণ হয়েছে এই অজুহাত তুলে দিল্লি কর্পোরেশন ভাঙচুর শুরু করে। বুলডোজার গাড়ি নিয়ে ভাঙচুর করা হয়। এরপর প্রশান্ত ভূষণের নেতৃত্বে এক আইনজীবী দল দেশের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। প্রধান বিচারপতি ঘটনাটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। কিন্তু তারপরও দেখা যায় প্রায় কয়েক ঘণ্টা ভাঙচুর চালাতে থাকে বুলডোজার। এমন সময় জাহাঙ্গীরপুরিতে এসে হাজির হন সিপিআইএম নেত্রী বৃন্দা কারাত। তিনি সুপ্রিম কোর্টের আদেশের কপি নিয়ে বুলডোজারের সামনে দাঁড়িয়ে যান আর বলেন সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারকে কার্যকর করতে হবে।

সিপিএম একতরফাভাবে বঙ্গ রাজনীতিকে ফায়দা তুলতে পারেন এটা ভেবে এবার মাঠে নামেন তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেসের এক সংসদীয় প্রতিনিধিদল আগামী শুক্রবার জাহাঙ্গীরপুরি যাবেন বলে ঠিক হয়েছে। এই সংসদীয় দলে আছেন শুখেন্দু শেখর রায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন, মহুয়া মৈত্র প্রমুখ।জাহাঙ্গিরপুরীতে বাঙালি সংখ্যালঘুদের উপর যে আক্রমণ হয়েছে, আগেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে তার প্রতিবাদ করা হয়। গরিব মানুষের জীবন-জীবিকা এবং মাথার ছাদের উপর যেভাবে বুলডোজার চালানো হয়েছে তৃণমূলের তরফে তার তীব্র নিন্দা করা হয়।

জাহাঙ্গিরপুরী (Jahangirpuri) এলাকার একটি মসজিদের সামনে দিয়ে হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রা যাওয়ার সময় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ শুরু হয়ে। একটি গোষ্ঠীর দাবি, শোভাযাত্রা চলাকালীন স্থানীয়রা ইট-পাথর ছোঁড়া শুরু করে। অপর গোষ্ঠীর আবার দাবি, শোভাযাত্রা থেকেই স্থানীয় দোকানপাটে ভাঙচুর চালানো হয়, মসজিদে ভাঙচুর চালানোর চেষ্টা করা হয়। জানা গিয়েছে, সংঘর্ষে দুই পক্ষেরই বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। হিংসায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

 

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ