কলকাতা 

রাজ্যপালের অপসারণ চেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : সংবিধান মতে রাজ্যের রাজ্যপাল নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে প্রশাসন চালাবেন । এটাই ভারতের রাজনীতি হয়ে আসছে । সংঘাত যে একেবারে হয়নি তা নয় । তবে সেই সংঘাত সাময়িক ছিল । ইদানিং রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করা তো দূর-অস্ত তিনি প্রতিনিয়ত সংঘাতে যাচ্ছেন । সংবিধান মতে রাজ্যপালের খুব বেশি কিছু করার থাকে না। তবে বিধানসভা হাং হলে সেক্ষেত্রে রাজ্যপালের ভূমিকা খুব বেশি থাকে । রাজ্যপালরা সাধারণ এই সময় স্বেচ্ছাচারিতা করে থাকেন । কিন্ত যে বিধানসভায় রাজনৈতিক এককভাবে গরিষ্ঠতা পেয়েছে তার কাছে রাজ্যপালের ক্ষমতা তেমন কিছু থাকে না । কিন্ত দুঃখের হলেও সত্য রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়[ অহেতুক সংঘাত করে চলেছেন বলে অভিযোগ ।

এতদিন ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়টি তেমনভাবে গুরুত্ব দেননি । এবার তিনি বিষয়টিতে নজর দিয়েছেন বলে জানা গেছে । আজ মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী নিজে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন , ধনকড়ের অপসারণ চেয়ে । কারণ তৃতীয় বিপুল গরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসার পরেও রাজ্যপাল যেভাবে সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন তা আর সহ্য করা যাচ্ছে না বলে তৃণমূল সূত্রে খবর । তাই এবার শাসক দল আদা জল খেয়ে রাজ্যপালের অপসারনের দাবিতে আন্দোলন নামতে পারে শোনা যাচ্ছে । এমনকি বিধানভাতেও এ বিষয়ে প্রস্তাব পাশ করা হতে পারে । জনমতকে সংগঠিত করার চেষ্টা চলছে । সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালানো হচ্ছে । সব মিলিয়ে রাজ্যপালের অপসারণ নিয়ে এবার রাস্তায় নামতে পারে তৃণমূল । এমনকি রাজ্যপালকে বয়কট করার ডাকও দিতে পারে শাসক দলে ।

Advertisement

রাজ্যপালের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ চরমে উঠেছে দুটি ঘটনায়। প্রথমত, রাজ্য সরকারের অনুমতি না নিয়ে তিনি বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়েছিলেন ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ খতিয়ে দেখতে। এবং দ্বিতীয়ত তৃতীয় মন্ত্রিসভার শপথের ঠিক আগে তিনি রাজ্যের মন্ত্রী এবং বিধায়কদের বিরুদ্ধে নারদ মামলায় পদক্ষেপ করার অনুমতি দিয়ে দেন। যার জেরে গতকাল রাজ্যের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক ও এক প্রাক্তন মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। গতকাল যখন তৃণমূল কর্মীরা সিজিও  কমপ্লেক্সের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তখনও রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। এমনকী, সিজিও কমপ্লেক্সে থাকাকালীনই তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেন বলে সুত্রের খবর। দু’জনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়।

সুত্রের খবর, এরপরই ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে মুখ্যমন্ত্রীর। এবার রাজ্যপালকে অপসারণের ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন তিনি। প্রথমে তিনি প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখবেন। তারপর রাজ্য বিধানসভায় রাজ্যপালের অপসারণের দাবিতে প্রস্তাবও পাশ করাবে তৃণমূল। এই রাজ্যপালকে ‘বয়কট’ করার ডাকও দেওয়া হতে পারে।

বামফ্রন্ট সরকারের আমলে কেন্দ্রের শাসক দল কংগ্রেস এপি শর্মাকে এই রাজ্যের রাজ্যপাল করে পাঠিয়েছিলেন । তিনিও অনেক সিদ্ধান্ত সরকারকে না জানিয়ে নিতেন । ফলে জ্যোতি বসু সরকারের সঙ্গে তাঁর বিবাদ হয়েছিল । তাই বামফ্রন্ট সরকার এপি শর্মা বয়কট করেছিল, সেই পথেই এবার জগদীপ ধনকড়কে বয়কট করতে পারে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

5 × 1 =