নলহাটির অবৈধ পাথর খাদানে ৬ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু, শোকাহত পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করলেন এসডিপিআই-এর প্রতিনিধি দল
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বীরভূম: বীরভূম জেলার নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের বাহাদুরপুর পাথর খাদানে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন ৬ জন পরিশ্রমী শ্রমিক। তাদের মধ্যে বাগানপাড়া গ্রামের দুই তরুণ— মোঃ হযরত আলি (২২) ও জিয়ারুল শেখ (২৪)। এ ছাড়া মহল্লা গ্রামের আরও চারজন শ্রমিক নিহত হন এবং অনেকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকে স্তব্ধ গ্রাম। এই অবস্থায় মৃতদের পরিবারগুলির সাথে সাক্ষাৎ করলেন এসডিপিআই-এর প্রতিনিধি দল। এদিন বীরভূম জেলা কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম, সদস্য নাজিরুল ইসলাম, সহিদুল শেখ ও কিয়াম শেখ। রাজ্য কমিটির প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আব্দুত তওয়াব ও উত্তর মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি মোঃ জাকির হোসেন।

সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থা জিয়ারুল শেখের পরিবারে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। বড় ভাই বজ্রাঘাতে মারা যাওয়ার পর ১১ বছরের এক ভাতিজার ভরণপোষণের দায়িত্বও ছিল তার উপর। এখন তার মৃত্যুর পর পরিবারটি সম্পূর্ণ অসহায়। অথচ এখনো পর্যন্ত কোনো সরকারি প্রতিনিধি বা আধিকারিক তাদের খোঁজ নেননি।
প্রতিনিধি দল ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানায়— নলহাটির অবৈধ খাদানগুলিতে কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই, অথচ প্রশাসন নীরব দর্শক। প্রতিনিয়ত শ্রমিক মরছে, অথচ সরকার নড়ছে না।” জেলা কমিটির সদস্য কিয়াম শেখ বলেন, “অন্তত বিধায়ক ও সাংসদের তহবিল থেকে পরিবারগুলিকে সাহায্য করা উচিত, না হলে জনগণের প্রতিনিধি হয়ে তারা কী করছেন?
এই খাদান থেকে জীবিত ফিরে আসা শ্রমিক এশারফ হোসেন আতঙ্কে বলেন— নয় মাস আগে আমার ভাই মারা গিয়েছিল এই খাদানেই। কোনো সরকারি সাহায্য পাইনি। আজ আবার চোখের সামনে ছয়জনের লাশ পড়ে গেল।
রাজ্য প্রতিনিধি মোঃ জাকির হোসেন সরকারের নীরবতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে বলেন— শ্রমিকদের ঘামেই সভ্যতা দাঁড়িয়ে থাকে। অথচ তারাই আজ মশার মতো মরছে। এই মৃত্যু ঠেকাতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি দাবি জানান—
প্রতিটি মৃত শ্রমিকের পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
পরিবারের জন্য স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
অবৈধ খাদানগুলির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ ও সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।