গুরুগ্রামের এক বেসরকারি হাসপাতালে অসুস্থ বিমান সেবিকাকে আইসিইউতে ডিজিটাল ধর্ষণ,গ্রেফতার অভিযুক্ত
চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন নামী হাসপাতালে। কিন্তু আইসিইউ-এর মধ্যে বাংলার বাসিন্দা এক বিমানসেবিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ হরিয়ানার গুরুগ্রামে। অবশেষে ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ‘ডিজিটাল ধর্ষণে’ অভিযুক্ত হাসপাতালের এক কর্মীকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। ধৃত ওই হাসপাতালেরই প্রযুক্তিকর্মী। তাঁর বাড়ি বিহারের মুজফ্ফরপুরে। চাকরির সুবাদে বেশ কিছু দিন ধরে তিনি গুরুগ্রামে ছিলেন। ২৫ বছরের যুবককে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ।
গুরুগ্রামের একটি হোটেলের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে কাটতে অসুস্থ হয়ে পড়েন ৪৬ বছরের বিমানসেবিকা। ট্রেনিংয়ের জন্য তিনি গুরুগ্রামে ছিলেন। গত ৫ এপ্রিল মহিলাকে ভর্তি করানো হয় সেখানকার নাম করা একটি হাসপাতালে। ১৩ এপ্রিল তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে স্বামীর মাধ্যমে থানায় যোগাযোগ করেন মহিলা। ১৪ এপ্রিল তিনি ‘ডিজিটাল ধর্ষণের’ অভিযোগ করেন। ‘নির্যাতিতা’ জানান, ওই হাসপাতালের কয়েক জন কর্মী আইসিইউ কেবিনে তাঁকে যৌন নির্যাতন করেছেন।
বিমানসেবিকা তাঁর অভিযোগে বলেন, তিনি আইসিইউ কেবিনে যখন কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না, সেই সময়ে তাঁকে যৌন নির্যাতন করা হয়। সেই সময় দু’জন নার্স উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তাঁরা অভিযুক্তদের বাধা তো দেননি। বরং সাহায্য করেছিলেন!
পুলিশের কাছে ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে ‘নির্যাতিতা’ জানান, ৬ এপ্রিল রাত ৯টা নাগাদ দু’জন নার্স তাঁর পোশাক পরিবর্তন করতে যান। তখন তিনি অর্ধচেতন অবস্থায় ছিলেন। ওই সময়ে পুরুষকণ্ঠ শুনতে পান। মহিলার কথায়, ‘‘আমার শরীরের মাপ জানতে চাইছিলেন এক জন লোক। নার্সেরা তাঁকে সেই তথ্য দিচ্ছিলেন। তার পর আমি শুনতে পেলাম, লোকটি নার্সকে আমার কোমরের আকার জানতে চাইছে। তার পর সে বলে, নিজেই পরীক্ষা করবে। এর পর আমার ডান দিকে চাদরের তলা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দেয়।’’ উল্লেখ্য, ভিআর প্ল্যাটফর্ম, সমাজমাধ্যমের মতো ভার্চুয়াল কোনও জায়গায় যৌন হেনস্থা ‘ডিজিটাল ধর্ষণ’-এর আওতায় পড়ে। ভারতীয় আইনে এই ধরনের যৌন নির্যাতনকে ‘ডিজিটাল ধর্ষণ’ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কোনও মহিলার যোনিতে হাত বা পায়ের আঙুল প্রবেশ করানো ‘ডিজিটাল ধর্ষণ’-এর আওতায় পড়ে। অতীতে আইনের বইয়ে ডিজিটাল ধর্ষণের উল্লেখ না থাকলেও ২০১২ সালের দিল্লিতে প্যারা মেডিক্যাল ছাত্রীর ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর থেকে এই শব্দবন্ধ আইনে চালু হয়। যদিও ২০১২ সালের পকসো আইনেও সরাসরি তা উল্লেখ করা হয়নি। প্রসঙ্গত, ডিজিটাল শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘ডিজিটাস’ থেকে, যার অর্থ আঙুল।
গুরুগ্রাম-কাণ্ডের প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত মাস পাঁচেক আগে ওই হাসপাতালে চাকরি পান। তিনি আইসিইউ-র প্রযুক্তিকর্মী ছিলেন। যৌন নির্যাতনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হয়। কর্মরত অবস্থায় এক রোগিণীকে যৌন নির্যাতন করার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যুবকের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার নির্দিষ্ট ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শনিবারই আদালতে হাজির করানো হচ্ছে।
সৌজন্যে ডিজিটাল আনন্দবাজার