শতাধিক বিধায়ক বিধানসভায় নিষ্ক্রিয়, সক্রিয় করতে উদ্যোগ তৃণমূলের পরিষদীয় দলের!
বাংলার জনরব ডেস্ক : আসনের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ২২২ জন সদস্য আছে তৃণমূল কংগ্রেসের। কিন্তু এর মধ্যে ১১৮ জন বিধায়ক বিগত চার বছরে কোন বক্তব্যই রাখেননি বিধানসভার অভ্যন্তরে। আর এতেই অস্বস্তি দেখা দিয়েছে শাসকদলের অভ্যন্তরে। জানা গেছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই ১১৮ জন বিধায়ককে এবার বিধানসভার অভ্যন্তরে সক্রিয় করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে চলেছে পরিষদীয় দল। পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে ডিজিটাল আনন্দবাজার সূত্রে জানা গেছে।
আর এই বাজেট অধিবেশনেই নিষ্ক্রিয় বিধায়কদের সক্রিয় করতে উদ্যোগ নিয়েছে শাসক দল।তৃণমূল পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, সোম এবং মঙ্গলবার রাজ্যপালের ভাষণের উপর যে আলোচনা হবে, তাতে যোগ দেননি এমন কিছু বিধায়ক, যাঁরা সপ্তদশ বিধানসভার সদস্য হয়ে প্রথম বক্তৃতা করবেন অধিবেশনে।বক্তার তালিকায় রাখা হয়েছে আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল, বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়, হরিপালের বিধায়ক করবী মান্না, চাঁপদানির বিধায়ক অরিন্দম গুঁইদের। সদ্য উপনির্বাচনে জয়ী বিধায়কদেরও এই বিতর্কে বক্তৃতা করতে হবে বলে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে মেদিনীপুরের বিধায়ক সুজয় হাজরা, নৈহাটির বিধায়ক সনৎ দে, তালড্যাংরার বিধায়ক ফাল্গুনী সিংহবাবু, হাড়োয়ার বিধায়ক শেখ রবিউল ইসলাম এবং সিতাইয়ের বিধায়ক সঙ্গীতা রায়ের।
তবে প্রথমবার বিধায়ক নির্বাচিত হয়ে ২০২১ সাল থেকেই যেভাবে বিধানসভার অভ্যন্তরে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন লালগোলার বিধায়ক মোহাম্মদ আলী তাতে তৃণমূল দল অত্যন্ত খুশি বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য মোহাম্মদ আলী একজন শিক্ষক সেই সূত্রে তিনি প্রথম দিন থেকে বিধানসভার কাজকর্ম রপ্ত করে নিয়েছিলেন। প্রশ্ন উঠেছে শাসকদলের ১১৮ জন বিধায়ক বিধানসভায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনায় চার বছর ধরে অংশ না নেওয়ায়। এই ধরনের মৌনি বাবাদের কেন বিধায়ক হিসাবে টিকিট দেওয়া হয়েছিল? প্রশ্ন উঠেছে সুকান্ত পালের মত একজন বিধায়ক যদি বিধানসভায় কথা বলতে না পারেন বক্তব্য না রাখেন তাহলে তাকে বিধায়ক করার উদ্দেশ্যটা কি ছিল? শুধু তাই নয়, এই ধরনের মানুষদের জনপ্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের মধ্যে কি আর কোন লোক ছিল না যাদেরকে মনোনয়ন দিলে এবং যারা বিধায়ক নির্বাচিত হলে অন্তত বিধানসভাতে বিরোধীদলের বক্তব্যকে খারিজ করে বক্তব্য রাখতে পারেন। নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেখিয়ে ভোটে জিতে বিধায়ক হয়ে এলাকায় দাদাগিরি করা ছাড়া ওই সকল নেতাদের অন্য কোন কাজ নেই! এবার অন্তত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে এই ধরনের মৌনিবাবাদের টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে কড়া অবস্থান নেওয়াটাই যুক্তিযুক্ত! এখন দেখার বিষয় বিগত চার বছর ধরে যে ১১৮ জন বিধায়ক বিধানসভায় কোন বক্তব্য না রেখেই বিধায়ক হয়ে থেকে গেলেন তাদেরকে আগামী নির্বাচনে বিধায়ক পদে মনোনয়ন দেয় কিনা।