দেশ 

‘এক দেশ এক ভোট’ বিলটি জেপিসিতে পাঠালো মোদি সরকার

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : এক দেশ এক ভোট বিল সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের ব্যবধানে পাস হবে না এটা জেনে যাওয়ার পর মোদি সরকার বাধ্য হয়ে জয়েন্ট পার্লামেন্টারি কমিটির কাছে বা যৌথ সংসদীয় কমিটিতে এই বিলকে পাঠানো হলো। আজ মঙ্গলবার সংসদের অধিবেশনে এই বিলকে জেপিসি তে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।

নির্ধারিত সময় মেনে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় সংসদে এক দেশ, এক নির্বাচন বিল লোকসভায় পেশ করেন কেন্দ্রীয় আইন প্রতিমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল। এর পর আলোচনা পর্বে বিলের বিরোধিতায় সরব হন ইন্ডিয়া জোটের সাংসদদের। চড়া সুরে বিলটির বিরোধিতা করে তৃণমূল কংগ্রেস। বিলটি লোকসভায় পেশ হওয়ার পর বিলের বিরোধিতায় সরব হন কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি। তিনি বলেন, এই পদ্ধতি গণতন্ত্রের মূল ভাবনার পরিপন্থী।

Advertisement

পাশাপাশি সপা সাংসদ ধর্মেন্দ্র যাদব বলেন, যারা একসঙ্গে ৮ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন করাতে পারছে না, তারা কোন মুখে গোটা দেশে একসঙ্গে নির্বাচনের কথা বলে। এর পর বক্তব্য রাখতে উঠে এই বিলের বিরুদ্ধে বিজেপিকে নিশানা করেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সবমিলিয়ে তুমুল হই হট্টগোল বেঁধে যায় লোকসভায়। এর মাঝেই বিলটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য জেপিসি-তে পাঠানো হল বিলটি।

এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, “ছাড়পত্রের জন্য ‘এক দেশ, এক ভোট’ বিল মন্ত্রিসভায় পেশ করা হয়েছিল। তখনই বিস্তারিত আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদি বিলটি জেপিসি-তে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। আইনমন্ত্রী যদি রাজি থাকেন তাহলে বিলটি জেপিসিতে পাঠানো হোক।” বিলটি লোকসভায় পেশের পরই তা জেপিসি-তে পাঠানোর কথা জানান কেন্দ্রীয় আইন প্রতিমন্ত্রী।

বিরোধীরা বরাবর অভিযোগ, বারবার সংসদের মর্যাদা লঙ্ঘন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিরোধী ভাষ্যকে মোটেও গুরুত্ব দেওয়া হয় না। এই অভিযোগ যে একেবারেই পলকা নয়, তার ভূরি ভূরি দৃষ্টান্ত রয়েছে। এবারের লোকসভায় একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারিয়ে বিজেপি অনেকটাই সমঝে চলছে। প্রধানমন্ত্রী মোদির মুখে বিজেপি সরকারের বদলে, বারবার শোনা গিয়েছে এনডিএ সরকারের কথা। এই প্রেক্ষাপটে নতুন বিল নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সাবধানী কেন্দ্রের শাসকদল। তাড়াহুড়ো নয়, বরং আলোচনার মাধ্যমে বিলটি পাশ করিয়ে নিতে চাইছে মোদি সরকার।

বিলটি নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের অন্দরেই মতানৈক্য রয়েছে। ফলে বিল পাশের ক্ষেত্রে সেই ‘ফাটল’ অন্তরায় হতে পারে বলে আশঙ্কা। তাই এধরনের কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না গেরুয়া শিবির। তা স্পষ্ট করেই বিলটি জেপিসি-তে পাঠাচ্ছে তারা। কমিটিতে শাসকদলের পাশাপাশি বিরোধী দলের প্রতিনিধিরাও থাকেন। তাই সেখানে বিলটি নিয়ে ‘গণতান্ত্রিক’ আলোচনা হবে। জেপিসি-তে পাঠানোর আরও একটি সুবিধা রয়েছে। কমিটিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিজেদের সংশোধনী পেশ করতে হয়। তার পর বিলটি লোকসভায় পেশ করে ভোটাভুটির প্রস্তাব দেবে বিজেপি।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ