অন্যান্য কলকাতা 

বাংলাদেশের ইসলামের ধ্বজাধারী, উগ্র ইসলাম ধর্ম ব্যবসায়ী ও মানবতাবাদী শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন সমস্ত নাগরিকদের প্রতি আমার আবেদন/ এস এম শামসুদ্দিন

শেয়ার করুন

*বাংলাদেশের ইসলামের ধ্বজাধারী, উগ্র ইসলাম ধর্ম ব্যবসায়ী ও মানবতাবাদী শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন সমস্ত নাগরিকদের প্রতি আমার আবেদন*

*এস এম শামসুদ্দিন* : একরাশ ঘৃণা ,ধিক্কার জানাই বাংলাদেশের উগ্র ইসলাম পন্থীদের। যাঁরা দিনের পর দিন বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অমানুষিক- অমানবিক অত্যাচার করে চলেছে তাঁরা মানবতার শুধু নয় ইসলামের নামে লজ্জা ,ধিক্কার ঘৃণা জানাই ওদের । ইসলাম ধর্মকে নবী সা মানবতা ও সহনশীল আদর্শকে তাঁরা কালিমালিপ্ত করে নিজেদের অন্ধ হিংস্র পাশবিক রূপকে একটা অসহায় শ্রেণীর উপর বীরত্ব দেখিয়ে চলেছে।

একটা অকৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে তাঁরা নিজেদের প্রমাণ করে চলেছে । কেউ কেউ তো শুনছি নাকি আমাদের বাংলা- ভারত আক্রমণ করে দখল করে নেবে বলে আস্ফালন করে চলেছেন । টা ভালো বামনের চাঁদে হাত বাড়ানোর আলিক স্বপ্ন দেখছেন।

Advertisement

ছিঃ।করুনা হচ্ছে আপনাদের কথা শুনে । 1971 তো এই তো মাত্র সেদিনের কথা,ভুলে গেলেন ,, পাকিস্তান সেনারা লক্ষ লক্ষ বাঙালি নারীদের আপনাদের দাদি ঠাকুরমাদের ধর্ষণ – বলাৎকার ,হত্যাকে ভুলে গেলেন !আমাদের ভারত সেদিন সেনা পাঠিয়ে আপনাদের করুনা করে বাঁচিয়ে ছিল ।সেদিন সমস্ত শক্তি দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিল আমাদের ভারত ।না ধর্ম হিসেবে নয় ।মানবতার বিবেক থেকে ।স্বাধীন হল বাংলাদেশ ।আর আজ সেই বাংলাদেশিদের আস্ফালন হুংকার দেখে হাসব না কাঁদব। শুধু মনে একরাশ ঘৃণা ধিক্কার জানাই ।একটা অকৃতজ্ঞ নেমেক হারাম জাতির নাম কি বাংলাদেশী জাতি ?প্রশ্ন জাগে মনে।

আমাদের ভারত নয় এই বাংলার কোটি কোটি মানুষ যদি হেঁটে যাই তোমরা পিষ্ট হয়ে যাবে ভুলে যেও না।

হিন্দিতে একটা কথা আছে ,” কুত্তা আপনা গলি মে শের বানজাতা হ্যায় ”

এই ফেস বুকের মাধ্যমে নিশ্চিত বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যাবে একজন গর্বিত ভারতীয় নাগরিক হিসেবে আমাদের আবেদন।

ইসলামের ধর্মের কথা বলে যাঁরা সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করছেন ।শুনুন আপনারা ইসলামের নামে ধান্দাবাজি ও শক্তি অর্থ হাসিল করতে সচেষ্ট ।ইসলামের নামে ব্যবসা করছেন ।

কারণ আমাদের নবী সা নির্দেশ দিয়েছেন, যদি আপনার প্রতিবেশী কিংবা কোনো আত্মীয় অমুসলিম হয়, ইসলামের নির্দেশনা হলো- তার সঙ্গেও প্রতিবেশী বা আত্মীয়ের হক রক্ষা করে চলতে হবে। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এ দু’টি সম্পর্ক রক্ষা করার ওপর যথেষ্ট জোর দেওয়া হয়েছে।

সাহাবি হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, একজন প্রতিবেশীর ওপর আরেকজন প্রতিবেশীর কী হক রয়েছে উত্তরে তিনি বললেন, ‘যদি সে তোমার কাছে

ঋণ চায় তাহলে ঋণ দেবে, যদি তোমার সহযোগিতা চায় তাহলে তাকে সহযোগিতা করবে, যদি সে অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে তার খোঁজখবর নেবে, তার কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে তাকে তা দেবে,সে অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়লে তার খোঁজখবর নেবে, যখন সে ভালো কিছু লাভ করবে তখন তাকে শুভেচ্ছা জানাবে,

যদি সে বিপদে পড়ে তাহলে সান্ত্বনা দেবে, মৃত্যুবরণ করলে তার জানাজায় শরিক হবে, তার অনুমতি ছাড়া তোমার ঘর এত উঁচু করবে না যে তার ঘরে বাতাস ঢুকতে পারে না।

কোনো ভালো খাবার রান্না করলে তাকে এর ঘ্রাণ ছড়িয়ে কষ্ট দেবে না বরং তার ঘরেও সে খাবার থেকে কিছু পৌঁছে দাও,

যখন কোনো ফল কিনে তোমার বাড়িতে নেবে তখন হাদিয়া উপধৌকন স্বরূপ তাকে সেখান থেকে কিছু দেবে, অন্যথায় সে ফল তুমি গোপনে তোমার বাড়িতে নেবে। এমন যেন না হয়, তোমার ছেলে এ ফল নিয়ে বাইরে বের হলো আর তার ছেলে তা দেখে অস্থির হয়ে ।

আরেক হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) স্পষ্ট বলেছেন, হজরত জিবরাইল (আ.) প্রতিবেশীর বিষয়ে আমাকে এমনভাবে উপদেশ দিচ্ছিলেন যে, আমি ভাবছিলাম- তিনি হয়তো তাদেরকে ওয়ারিশই বানিয়ে দেবেন। -সহিহ বোখারি ৬০১৫

আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখার বিষয়ে নির্দেশনা তো আরও স্পষ্ট।

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে আল্লাহ ও পরকালে ঈমান এনেছে সে যেন তার আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখে। -সহিহ বোখারি ৬১৩৮

প্রতিবেশী ও আত্মীয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করে চলার এই যে নির্দেশনা, তাতে মুসলিম-অমুসলিমের মাঝে কোনো পার্থক্য করা হয়নি।

এমনটি বলা হয়নি- তোমার প্রতিবেশী কিংবা আত্মীয় যদি মুসলমান হয়, ধার্মিক হয়, ভালো মানুষ হয়, তাহলে তার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করে চলবে। বরং প্রতিবেশী ও আত্মীয় যেমনই হোক, ধার্মিক হোক কিংবা না হোক, এমনকি মুসলিম হোক কিংবা না হোক, তার অধিকার অকাট্য ও অনস্বীকার্য। একজন মুসলমানকে এ অধিকার রক্ষা করেই জীবনযাপন করতে হবে।

পবিত্র কোরআন ও হাদিসের কিছু নির্দেশনা এমনও রয়েছে, যেখানে সুস্পষ্ট ভাষায় অমুসলিম আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করতে বলা হয়েছে।

যেমন সূরা লুকমানে বলা হয়েছে, ‘পৃথিবীতে তাদের সঙ্গে সদ্ভাবে বসবাস করো। ’ -সূরা লুকমান ১৫

কোরআনে কারিমের উক্ত আয়াত থেকে স্পষ্ট প্রতিভাত হয়, যদি কোনো মুশরিক বা বিধর্মী হয় , বাবা-মা তাদের মুসলিম কোনো সন্তানকে ইসলাম ধর্ম ছেড়ে দিয়ে আল্লাহতায়ালার সঙ্গে শিরক করতে বলে, তাহলে তাদের এ আদেশটুকু মানা যাবে না। কিন্তু এমতাবস্থায়ও তাদের সঙ্গে সুন্দর আচরণ করতে হবে। বাবা-মায়ের অধিকারসমূহ আদায় করতে হবে।

প্রতিবেশীর অধিকার সম্বলিত যে সব হাদিস বর্ণিত হয়েছে, সেসবে মুসলিম-অমুসলিমের মাঝে যে কোনো পার্থক্য করা হয়নি। সাহাবাদের জীবনী থেকেও এর দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)-এর ঘটনা। একদিন তার ঘরে একটি বকরি জবাই করা হলো। খাবার রান্না হলে তিনি তার গোলামকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমাদের ইহুদি প্রতিবেশীর নিকট কি এ খাবার হাদিয়া পাঠিয়েছো আমাদের ইহুদি প্রতিবেশীকে কি এ খাবার দিয়েছো এরপর তিনি বললেন, আমি হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, প্রতিবেশীর বিষয়ে জিবরাইল আমাকে এত উপদেশ দিচ্ছিল, আমি মনে করছিলাম- সে হয়তো তাদেরকে ওয়ারিশই বানিয়ে দেবে। ’ -সুনানে তিরমিজি ১৯৪৩

সুন্দর আচরণও অনেক সময় দাওয়াতের ভূমিকা পালন করে। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর এমন মহানুভব আচরণে মুগ্ধ হয়েও তো অনেকে ইসলাম কবুল করেছেন এবং পরবর্তীতেও সাহাবাদের যুগ থেকে শুরু করে যারা ইসলামের সুন্দর আচারগুলো নিজেদের মাঝে লালন করে গেছেন, তাদের আচরণ নীরবে অমুসলিমদের ইসলামের দিকে আহ্বান জানাতো।

এই মানবতার শত্রু উগ্র ধার্মিকদের প্রতি এক রাশ ঘৃণা ও ধিক্কার জানাই।অবিলম্বে ওই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষদের কাছে আবেদন আপনার সজাগ হন । সাবধান হন । আমরা বিশ্বাস করি যে অসংখ্য বাংলাদেশী মানুষ এই নির্মমতার সাথে এক মত নয়। তাঁরা যদি সত্যি ইসলামের আদর্শে বিশ্বাস করেন তাহলে আমাদের নবী সা কথা ও নির্দেশ মেনে প্রতিবেশীর যে কোনো ধর্মেরই হোক তাঁদের পাশে থাকুন , সহয্যের হাত বাড়িয়ে প্রকৃত ধার্মিক হয়ে ধর্মীয় সত্ত্বা রক্ষা করুন – প্রতিষ্ঠা করুন মানবিক সমাজ।

এস এম শামসুদ্দিন

বি গার্ডেন ,হাওড়া , পশ্চিমবঙ্গ


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ