Bandwidth Transit :হাসিনা সরকারের আমলে ‘ব্যান্ডউইথ ট্রানজিট’ চুক্তি বাতিল করে দিল ইউনূস সরকার
বাংলার জনরব ডেস্ক : উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপনের জন্য বাংলাদেশের মাটিকে ব্যবহার করার যে সিদ্ধান্ত হাসিনা সরকার ভারত সরকারকে দিয়েছিল তা প্রত্যাহার করে নিল বর্তমান বাংলাদেশ সরকার। উত্তেজনার এই আবহাওয়া বাংলাদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। মোবাইল ইন্টারনেট টাওয়ার বসানোর সিদ্ধান্ত বাতিলের পর ভারত সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সম্পর্ক আরো খারাপ হয়েছে হয়ে যাবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। শোনা যাচ্ছে, আদানী বিদ্যুৎ প্রকল্পের বাতিল করে দিতে পারে বাংলাদেশ সরকার।
উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ‘ব্যান্ডউইথ ট্রানজিট’ সুবিধার জন্য আবেদন জানিয়েছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে ‘বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন’ (বিটিআরসি)। প্রসঙ্গত, প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ তথ্য পাঠানো যায় তাকে ব্যান্ডউইথ বা ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড বলা হয়।
মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, আঞ্চলিক ডিজিটাল হাব হিসেবে বাংলাদেশের ভূমিকা দুর্বল হতে পারে, এমন আশঙ্কায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত ১ ডিসেম্বর এ বিষয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে বিটিআরসি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের জমানায় বাংলাদেশের ‘সামিট কমিউনিকেশনস্’ এবং ‘ফাইবার অ্যাট হোম’, ভারতীয় কোম্পানি ‘ভারতী এয়ারটেল লিমিটেড’-এর সঙ্গে আখাউড়া থেকে সিঙ্গাপুর পর্যন্ত ট্রানজিট সংযোগ স্থাপনের অনুমতি চেয়ে বিটিআরসিতে আবেদন করেছিল। তাতে প্রাথমিক সম্মতিও মিলেছিল।
আখাউড়া সীমান্তে একটি ইন্টারনেট সার্কিট স্থাপনের মাধ্যমে এই ট্রানজিট সংযোগ স্থাপনের প্রস্তাব ছিল ওই আবেদনে। কিন্তু স্থলপথে কেবল্ যোগাযোগ (টেরেস্ট্রিয়াল কেবল্) স্থাপনের জন্য ওই ট্রানজিট সংযোগে বাংলাদেশের তেমন কোনও লাভ হত না বলে বিটিআরসির একটি সূত্র জানাচ্ছে। তাদের দাবি, ব্যান্ডইউথের সুযোগ পেয়ে লাভবান হত ভারত। কিন্তু ইউনূস সরকারের এই পদক্ষেপের নেপথ্যে ঘরোয়া রাজনীতি মূল দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে। ‘সামিট কমিউনিকেশনস্’ এবং ‘ফাইবার অ্যাট হোম’ প্রাক্তন শাসকদল আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ। ‘সামিট কমিউনিকেশনস্’-এর চেয়ারম্যান মহম্মদ ফরিদ খান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য তথা গোপালগঞ্জ-১ আসন থেকে পাঁচ বার জাতীয় সংসদে নির্বাচিত ফারুক খানের ছোট ভাই।
বাংলাদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্তে ভারত সরকার অনেকটাই উত্তর পূর্ব ভারতে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা ধাক্কা খাবে বলে আন্তর্জাতিক মহল মনে করছে।
সৌজন্যে ডিজিটাল আনন্দবাজার।