কলকাতা 

ছোটো থেকেই ইংরেজি ছড়া ও সাধারণ শব্দের সঙ্গে পরিচিত করাতে হবে শিশুকে : প্রাথমিকের ইংরেজি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের অভিমত

শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রাথমিক ও প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে অনুসন্ধান সোসাইটির উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে পাঁচ পর্বের এক মাস ব্যাপী আলোচনা পর্ব। রবিবার (১লা ডিসেম্বর) ছিল এই আয়োজনের তৃতীয় পর্ব। এ’দিনের আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল ইংরেজি। শিশুকে ইংরেজি শেখানো উচিত কোন বয়স থেকে, কোন কোন ক্লাসে কতটা শেখানো হবে এবং ইংরেজি শিক্ষার বিশেষ রীতি ও পদ্ধতি নিয়ে এদিন আলোচনা হয়। আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন ঋতা বসু, কুহেলী মুখার্জি, ডঃ পার্থ সারথী দাস ও অধ্যাপিকা দীপশ্রী দাস সরকার। এছাড়াও ইংরেজি পড়াতে গিয়ে কোন কোন দিকে সমস্যার সম্মুখীন হন সে বিষয়ে বলেন শিক্ষিকা ডঃ শর্মিষ্ঠা শীল এবং ইংরেজি নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন শিক্ষিকা তামিম ইসলাম।

এদিন স্বাগত বক্তৃতা দিতে গিয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাব্রতী ও অনুসন্ধান সোসাইটির সহ-সভাপতি বিশ্বনাথ দাশগুপ্ত বলেন প্রাথমিক স্তর থেকে ইংরেজি তুলে দেয়ার কুফল আমরা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। বাঙালি চিরকাল মননে-চিন্তায় যেমন এগিয়ে, তেমন জগত সভায় তার প্রকাশও যথেষ্ট উজ্জ্বল। বাঙালির দ্বিভাষিক এই সত্ত্বা চিরকাল অন্যের সমিহ আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। এই ট্রাডিশন আজ আরো জোরে-শোরে ফিরিয়ে আনার সময় হয়েছে। সময় ও প্রযুক্তির নয়া আঙ্গিকে নতুন করে চিন্তা ভাবনা করলে নিশ্চয়ই তাতে সফল হব আমরা। সেই দিন আর বেশি দূরে নয়। সেদিকে তাকিয়ে আজকের এই সভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের আশা এই কথোপকথন আমাদেরকে আরো সমৃদ্ধ করবে ও আমাদের শিক্ষাঙ্গন আরো উন্নত শিক্ষার্থী তৈরি করতে সামর্থ্যবান হবে।

Advertisement

ঋতা বসু সভায় বক্তব্য রাখছেন।

এদিনের কথোপকথনে বারবার উঠে আসে যে কথাগুলি, সেগুলি হল– শিশুদের শেখানোর ক্ষেত্রে বাংলার সাথে সাথে ইংরেজি ছোটো ছোটো শব্দ পরিচিত করানো প্রয়োজন, লক্ষ রাখতে হবে বাংলা ছড়ার সঙ্গে ইংরেজি ছড়াও শিখতে যাতে তার কোনো অসুবিধা হয় না। শিক্ষককে সচেতন থাকতে হবে কখনো কোনোভাবেই যেন কোনো বিষয়েই শিক্ষার্থীর নিকট বোঝা বা ভয়ের কারণ না হয়ে যায়, উদ্বেগ-আশঙ্কার মধ্যে থেকে কোনো শক্তিশালী নির্মাণ সম্ভব হয় না। পড়াশোনায় উৎসাহ তখনই আসে যখন সেটা তার কাছে সহজ ভাবে বোধগম্য হয়। শিক্ষককেই ভেবে বার করতে হবে তাঁর শিক্ষার্থীর দিকে তাকিয়ে, শেখানোর কোন রীতি-পদ্ধতি সেখানে প্রয়োগ যথার্থতা পাবে। এই চ্যালেঞ্জ তাঁকেই নিতে হবে।

এদিন ইংরেজি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের বিভিন্ন সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়। যেমন, শিক্ষাঙ্গনে পরিকাঠামোর অভাব, ফার্স্ট জেনারেশন লার্নার, পাঠ্যপুস্তকের গ্রেডেশন ঠিক নেই, শিক্ষকরা যথাযথভাবে প্রশিক্ষণ পান না। এসব সত্ত্বেও আমাদের যে রিসোর্স আছে তা নিয়ে আমরা অনেকটাই অগ্রসর হতে পারি বলে মত প্রকাশ করেন বিশিষ্ট শিশু শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ঋতা বসু।

অনুসন্ধান সোসাইটির মুখ্য পরামর্শদাতা বিজ্ঞানী মতিয়ার রহমান খান কথোপকথনের এদিনের এই সভায় অংশ নেয়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং আগামী বর্ষে নির্বাচিত কয়েকটি স্কুলকে সামনে রেখে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে কাজের ব্যাপারে প্রত্যক্ষ সহযোগিতার আহ্বান জানান।

আগামী ১৫ ডিসেম্বর কথোপকথনের এই আয়োজনে চতুর্থ সভার বিষয় স্কুলে অনুপস্থিতির ক্রমবর্ধমান হার ও স্কুলছুট : এর কারণ ও তার প্রতিকার। ২২ ডিসেম্বর জাতীয় গণিত দিবসে পঞ্চম সভার বিষয় প্রাথমিকে গণিত ও বিজ্ঞান। অনলাইনে পাঁচটি পর্বের শেষে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের উপস্থিতিতে সামনাসামনি বিশেষ সভার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানান অনুসন্ধান সোসাইটির সম্পাদক ও বিশিষ্ট শিক্ষক গৌরাঙ্গ সরখেল। এদিন কথোপকথনের এই সভা সঞ্চালনা করেন শিক্ষক নায়ীমুল হক।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ