দ্রোহের কার্নিভালে অনুমতি দিল উচ্চ আদালত, ফের ধাক্কা খেলো নবান্ন
বিশেষ প্রতিনিধি : দ্রোহের কার্নিভাল ঘুরিয়ে বন্ধ করার উদ্দেশ্যে ১৬৩ ধারা জারি করেছিল কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় জুনিয়র চিকিৎসকরা। আজ মঙ্গলবার সকালেই প্রধান বিচারপতিকে ইমেইল করেন জুনিয়র চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে আইনজীবী। তারপরেই গঠিত হয় বেঞ্চ। যে বেঞ্চের দুপুর দুটোর পর শুনানি শুরু হয়। রাজ্য সরকার এবং জুনিয়র চিকিৎসকদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি দ্রোহের কার্নিভাল করার অনুমতি দেন।
বিচারপতি রবি কিষান কর্পূরের বেঞ্চে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। মামলার শুরুতেই ১৬৩ ধারা প্রয়োগ নিয়ে বিচারপতি কটাক্ষের সুরে রাজ্যের কাছে জানতে চান আপনারা কোথায় 163 ধারা জারি করতে বাকি রেখেছেন। আইনজীবী বিকাশ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য জুনিয়র চিকিৎসকদের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে বলেন,মঙ্গলবার দ্রোহ কার্নিভাল আয়োজন করতে চেয়ে ১১ অক্টোবর চিঠি দেওয়া হয়েছিল। যদিও রাজ্যের আইনজীবী জানান, ওই কর্মসূচির তাৎপর্য কী, তা আয়োজকেরা জানাননি। বিকাশ এর আগে জানিয়েছিলেন রেড রোড থেকে দূরেই আয়োজন হচ্ছে কর্মসূচি। তবে রাজ্যের আইনজীবী জানান, রেড রোড এবং রানি রাসমণি রোডের সংযোগও রয়েছে।

রাজ্যের আইনজীবীর বক্তব্য,“বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে (পুজোর) কার্নিভাল শুরু হবে। যথাযথ কারণেই জন্য ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে। অন্য কোনও দিন কর্মসূচি করা হোক।” রাজ্য আরও জানায়, পুলিশ স্ট্যাচু থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি। আগামিকাল এই প্রতিবাদী কর্মসূচি করার প্রস্তাব দেন তিনি। রাজ্যের আইনজীবী আরও জানান, এর আগেও কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে এই আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি করেছেন বলেও আদালতে জানান তিনি।
এরপর বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য জুনিয়র চিকিৎসকদের হয়ে বলেন,“ডাক্তারেরা গুন্ডা নন। আমি নিশ্চিত করে বলছি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হবে। পুলিশ বলতে পারে না আমি কোন দিন কর্মসূচি করব। রানি রাসমণি রোডে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে পুলিশ। তারা আটকে রাখুক।”
দুই আইনজীবীর বক্তব্য শুনে বিচারপতি আবার রাজ্যকে প্রশ্ন করেন, “তা হলে আপনারা কোনও শর্তেই কর্মসূচি করতে দেবেন না?” রাজ্যের আইনজীবী তখন আর্জি জানান, অন্য দিন যাতে এই দ্রোহের কার্নিভাল করা হয়। তিনি আরও জানান, রামলীলা ময়দানে এই কর্মসূচি করা যেতে পারে।
এরপর বিচারপতি রবি কিষান কপূর নির্দেশ দিতে গিয়ে বলেন,“শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার রয়েছে। আদালত বার বার এই নির্দেশ দিয়েছে।” দ্রোহের কার্নিভাল আয়োজনের অনুমতি দিলেন বিচারপতি। একই সঙ্গে কলকাতা পুলিশের ১৬৩ ধারা জারির নির্দেশিকাও খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট। বিচারপতি জানিয়েছেন, রেড রোড এবং রানি রাসমণি রোডের মাঝে ব্যারিকেড করে দেওয়া হবে।
আবারো কলকাতা হাইকোর্টের সামনে রাজ্য সরকার চর খেলেন। কেন এই ধরনের কাজ রাজ্য সরকারের পুলিশ করে চলেছে তা আমাদের মত সাধারন মানুষের বোধগম্য হচ্ছে না। মমতা প্রশাসন কি এতটাই অসহায় হয়ে পড়েছে যে যখন খুশি বিরোধীদের বা সরকারবিরোধী যে কোন প্রচারকে আটকানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। আর এটা করতে গিয়ে রাজ্য সরকারের ইজ্জত যে চলে যাচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।