আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদে সাংসদ পদ ছাড়লেন জহর সরকার, অস্বস্তিতে মমতা
বিশেষ প্রতিনিধি : তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ও প্রাক্তন আমলা জহর সরকার আরজিকর হাসপাতালের অভ্যন্তরে কর্তব্যরত চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় সাংসদ পদ ছাড়তে চলেছেন। এ বিষয়ে প্রাক্তন আমলা জহর সরকার নিজের ক্ষোভ ব্যক্ত করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন।
আরজিকর মেডিকেল কলেজের অভ্যন্তরে কর্তব্যরত চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে এর আগে রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়।তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন এবং কলকাতা পুলিশকে ঘটনার জন্য কাঠগড়ায় তুলেছিলেন। কিন্তু এই প্রথম কোন তৃণমূল সাংসদ আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে নিজের সাংসদ পদে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানালেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে লেখা চিঠিতে জহর বলেছেন, ‘‘আমি গত এক মাস ধৈর্য ধরে আরজি কর হাসপাতালের ঘৃণ্য ঘটনার বিরুদ্ধে সবার প্রতিক্রিয়া দেখেছি আর ভেবেছি, আপনি কেন সেই পুরনো মমতা ব্যানার্জির মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে সরাসরি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলছেন না। এখন সরকার যে সব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা এককথায় অতি অল্প এবং অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।’’
শুরুতে এই আন্দোলনকে বাম-বিজেপির আন্দোলন বলে দাবি করেছিলেন মমতা। সেই পথে হেঁটে তৃণমূলের অন্য নেতারাও সেই দাবি করতে শুরু করেছিলেন প্রকাশ্যে। এই প্রবণতার নিন্দা করেছেন জহর সরকার লিখেছেন, ‘‘আমার বিশ্বাস, এই আন্দোলনে পথে নামা মানুষেরা অরাজনৈতিক এবং স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রতিবাদ করছেন। অতএব রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে এই আন্দোলনকে প্রতিরোধ করা সমীচীন হবে না। এঁরা কেউ রাজনীতি পছন্দ করেন না। শুধু একবাক্য বিচার ও শাস্তির দাবি তুলেছেন।’’
একইসঙ্গে দল ও সরকারে দুর্নীতি প্রসঙ্গ চিঠিতে টেনে তিনি লিখেছেন, ‘‘মাননীয়া মহোদয়া, বিশ্বাস করুন এই মুহূর্তে রাজ্যের সাধারণ মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন ও রাগের বহিঃপ্রকাশ আমরা সবাই দেখছি, এর মূল কারণ কতিপয় পছন্দের আমলা ও দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পেশিশক্তির আস্ফালন। আমার এত বছরের জীবনে এমন ক্ষোভ ও সরকারের প্রতি সম্পূর্ণ অনাস্থা আগে কখনও দেখিনি।’’