আগামীকাল থেকে সংসদে রাহুলের মুখোমুখি মোদি! একাধিক ইস্যুতে উত্তাল হবে সংসদের দুই কক্ষ!
সেখ ইবাদুল ইসলাম : আগামীকাল ২৪ শে জুন সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে লোকসভার বিশেষ অধিবেশন। এই অধিবেশনে দুদিন ধরে চলবে সাংসদদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। এরপর ২৬ শে জুন স্পিকার নির্বাচন করা হবে। শাসকদলের পক্ষ থেকে কে স্পিকার হবেন তা নিয়ে এখনো স্পষ্টভাবে কোন নাম সামনে আনা হয়নি। তবে স্পিকার যেই হোক না কেন তাকে এবার সংসদ চালাতে বেশ বেগ পেতে হবে। কারণ সংসদে এবার শাসকবিরোধীদের সংখ্যা প্রায় সমান সমান। মাত্র ২০/২১ টা আসনের তফাৎ রয়েছে বিরোধীদের সঙ্গে শাসক দলের। বিজেপি এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তাই স্বাভাবিকভাবে সরকারের প্রতিটা সিদ্ধান্ত সংসদে চ্যালেঞ্জ হবে। আর সেই চ্যালেঞ্জ সামলাতে মোদি সরকারের যে নাজেহাল অবস্থা হবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
সংসদ অধিবেশনের প্রতিদিনই হবে আস্থা ভোট : সংসদের প্রত্যেকদিন হবে মোদি সরকারের কাছে আস্থা ভোটের দিন কারণ একটু বিচ্যুতি হলেই বিরোধীরা চেপে ধরবে সরকারকে। বিরোধী দলনেতার পদে এখন রাহুল গান্ধী থাকবে। সুতরাং রাহুলের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর মোদিকে দিতে হবে। ১০ বছর পর দেশ লোকসভায় পেল বিরোধী দলনেতা। মোদি সরকারের আমলে সংসদে কোন বিরোধী দলনেতা ছিল না যা ছিল তা হচ্ছে সংখ্যাধিক্য দলের নেতা। এবার রাহুল গান্ধীকে বিরোধী দলের নেতার মর্যাদা দিতে হবে সরকারকে। আদানির বিরুদ্ধে বলার জন্য যে রাহুলের বক্তব্য লোকসভার কার্যবিবরণী থেকে সেটে বাদ দেয়া হয়েছিল। সেই রাহুল গান্ধীর বক্তব্য আর ছাড়তে পারবে না মোদি সরকার।
আর যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না মোদি সরকার প্রত্যেকটা সিদ্ধান্ত নিতে গেলে বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে সরকারকে। নাহলে সংসদে ভোটাভুটিতে অংশ নিতে হবে আর এই ভোটাভুটিতে অংশ নিতে গেলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে মোদি সরকারকে। কারণ বিরোধীদের অনেক বক্তব্যের সঙ্গে মোদি সরকারের জোটে যারা সঠিক তাদের বক্তব্য মিলে যাবে। সুতরাং জনগণের স্বার্থে মানুষের স্বার্থে সরকারকে সমর্থন করলেও অনেক বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তকে মান্যতা নাও দিতে পারে সুতরাং সংসদ চলাকালীন সময়ে প্রতিদিন হবে মোদি সরকারের কাছে পরীক্ষা।
নিট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে উত্তাল হবে সংসদ : সম্প্রতি নিট পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর নানা অনিয়ম সামনে আসতে শুরু করেছে এবং এই শুরুটা হয়েছে বিজেপি শাসিত সরকার গুলোর পক্ষ থেকে। বিহারে প্রশ্নপত্র ফাঁস ইস্যুতে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথমে সরকার পক্ষ প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করলেও শেষ পর্যন্ত তদন্ত হবে বলে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। রাহুল গান্ধীর নির্বাচনী প্রচারে এবারে মূল বিষয় ছিল প্রশ্নপত্র ফাঁস তরুণ সমাজের কাছে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ক্ষমতায় এলে প্রশ্নপত্র ফাঁস রুখতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্ষমতায় আসতে পারেনি কংগ্রেস বা ইন্ডিয়া জোট এবার বিরোধী আসনে থেকে মোদি সরকারকে বাধ্য করবে এইসব নিয়ে কাজ করতে।
এক কথায় সংসদের এবারের অধিবেশন মোদি সরকারের কাছে চ্যালেঞ্জের অধিবেশন। সংসদের ভিতরে যেমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে সরকারকে একই রকম ভাবে সংসদের বাইরে বিক্ষোভে উত্তাল হবে ছাত্রসমাজ। সংসদকে ঘিরে ধরবে এই দেশের কৃষক সমাজ। সংসদকে ঘিরে ধরবে এদেশের শ্রমিক সমাজ। এক কথায় মোদির কাছে গদি রক্ষাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।