চার বছরের নিজের পুত্র সন্তানকে খুন করার পরেও চোখে মুখে কোন অনুশোচনা নেই সূচনার দাবি তদন্তকারীদের
বাংলার জনরব ডেস্ক : চার বছরের শিশু পুত্রকে খুন করার পরেও মনের মধ্যে কোন হেলদোল নেই মা সূচনার। পুলিশি জেরার মুখে তিনি সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন শান্ত মেজাজে কোনরকম ভাবেই উত্তেজিত হচ্ছেন না। আর এই মানসিক অবস্থা দেখেই তদন্তকারীদের মনে হয়েছে যে অনেক বেশি শক্ত মনের অধিকারী বেঙ্গালুরুর স্টাট আপ সংস্থার সিইও সূচনা শেঠ। নিজের পুত্র সন্তানকে খুন করেও চোখে মুখে কোথাও অনুশোচনা দেখা যাচ্ছে না বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময় শান্ত ভাবেই প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন সূচনা। হেফাজতেও তাঁকে কোনও কিছু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে বা বিচলিত হতে দেখা যায়নি। গত ৮ জানুয়ারি সূচনা যে ভাড়া গাড়ি চেপে গোয়া থেকে বেঙ্গালুরুর পথে রওনা দিয়েছিলেন, সেই গাড়়ির চালকও জানিয়েছেন, গাড়িতে চড়ার পর থেকে চুপচাপই ছিলেন তিনি। এমনকি, পুলিশ যখন তাঁকে গ্রেফতার করে, তখনও তিনি শান্তই ছিলেন বলে দাবি করেছেন ওই ভাড়া গাড়ির চালকের।
পুলিশ সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে, কেন তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন সে বিষয়ে এখনও মুখ খোলেননি সূচনা। ছেলে কী ভাবে মারা গিয়েছে, সে বিষয়ে তাঁর কোনও ধারণা নেই বলেও নাকি পুলিশের কাছে দাবি করেছেন তিনি।
বেঙ্গালুরুর স্টার্টআপ সংস্থার সিইও-র সন্তানের হত্যার ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ এ-ও জানতে পেরেছে যে, শিশুপুত্রকে খুনের অভিযোগ ওঠার দিন কয়েক আগেই প্রাক্তন স্বামীকে ছেলের সঙ্গে দেখা করে নেওয়ার কথা বলেছিলেন সূচনা। তদন্ত চলাকালীন পুলিশ জানতে পেরেছে যে, গত ৬ জানুয়ারি প্রাক্তন স্বামী বেঙ্কট রামনকে মেসেজ করেছিলেন সূচনা। বেঙ্কট চাইলে পরের দিন ছেলের সঙ্গে দেখা করতে পারেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সূচনা ছেলেকে নিয়ে গোয়া চলে যাওয়ায় দেখা করতে পারেননি বেঙ্কট। এর পর ওই দিনই বেঙ্কট ইন্দোনেশিয়া চলে যান বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। পুলিশের অনুমান, ছেলের সঙ্গে শেষ বার দেখা করার জন্যই প্রাক্তন স্বামীকে ডেকে পাঠান সূচনা। কিন্তু পরে মত বদলে দেন।
উল্লেখ্য ২০১৯ সালে সূচনা শেঠের এক পুত্র সন্তান হয়। এরপরেই ২০২০ সালে লকডাউন চলাকালীন সময়ে স্বামী বেঙ্কট রামনের মতবিরোধ শুরু হয় যা থেকে পরবর্তীকালে ডিভোর্স হয়ে যায় দুজনের মধ্যে। জাতীয় সংবাদ মাধ্যমেই প্রকাশিত একটি খবর থেকে জানা যাচ্ছে পুলিশি জেরার মুখে সূচনা বলেছেন ছেলের মুখ দেখলেই তার পরিবর্তন স্বামীর কথা মনে পড়ে যেত যে জন্যেই শেষ পর্যন্ত ছেলেকে খুন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যাইহোক নিজের পুত্র সন্তানকে খুন করার পর একজন মা কোনরকম অনুশোচনা না করে যেভাবে স্বাভাবিক রয়েছেন তাতেই ধন্দে পড়েছে তদন্তকারী অফিসাররা।