কৃষ্ণনগরে কবি হেমচন্দ্র বাগচীকে স্মরণ
নিজস্ব সংবাদদাতা: কবি হেমচন্দ্র বাগচী কল্লোল যুগের একজন অন্যতম কবি। কিন্তু তিনি অনেকটাই অনালোচিত থেকে গিয়েছেন। ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ছিল নদিয়ার ভূমিপুত্র কবি হেমচন্দ্র বাগচীর ১১৯তম জন্মজয়ন্তী। কৃষ্ণনগরে কবি হেমচন্দ্র বাগচীর জন্মজয়ন্তী পালন করতে দেখা গেল ‘কবি হেমচন্দ্র বাগচী স্মৃতিরক্ষা সমিতি’-র সদস্যদের। তারা প্রতি বছর কবি হেমচন্দ্র বাগচীর জন্ম দিবস ও প্রয়াণ দিবস পালন করে থাকেন। কবিতা, গান, গল্পপাঠ, আলোচনার মধ্যে দিয়ে তারা কবিকে বিশেষভাবে শ্রদ্ধা-স্মরণ করে থাকেন। এবছরও তারা সেভাবেই কবির জন্মদিনে কবিকে স্মরণ করলেন।
হেমচন্দ্র বাগচী (১৯০৪-১৯৮৬ খ্রি.) তাঁর সমকালীন অন্যান্য কবিদের তুলনায় অনেকটাই ব্রাত্য। সরকারি বা বেসরকারি কোনও প্রতিষ্ঠানই তাঁকে সেভাবে স্মরণ করে না। ধীরে ধীরে কবি হেমচন্দ্র বাগচী লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে গিয়েছেন। ২০২১ সাল থেকে কৃষ্ণনগরে ‘কবি হেমচন্দ্র বাগচী স্মৃতিরক্ষা সমিতি’-র উদ্যোগে কবি অনুরাগীরা হেমচন্দ্র বাগচীকে শ্রদ্ধা-স্মরণ করে অসছেন। এর মধ্যে দিয়ে আবার তাঁকে চর্চায় ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে। ‘কবি হেমচন্দ্র বাগচী স্মৃতিরক্ষা সমিতি’-র সম্পাদক দীপাঞ্জন দে তাঁদের এই উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন— “কৃষ্ণনগরে কবি অনুরাগীরা একত্রিত হয়েছেন এক মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে। কবি হেমচন্দ্র বাগচীকে বিস্মৃতির অতল গহ্বরে তলিয়ে যেতে দেওয়া হবে না। হেমচন্দ্রের জীবনী পাঠ, তাঁর রচনাগুলি সম্পর্কে জনমানসে আগ্রহ তৈরি করা, তাঁর দুর্লভ সাহিত্যসম্ভার পুনরায় মুদ্রণ প্রভৃতি কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি।” কবি হেমচন্দ্র বাগচী স্মৃতিরক্ষা সমিতির সদস্যরা সাগ্রহে এগিয়ে এসেছেন।
ল
কবি হেমচন্দ্র বাগচীর ১১৯তম জন্মজয়ন্তীর সকালে ঘূর্ণির পুতুলপট্টি মোড়ে স্থাপিত কবির আবক্ষ মূর্তির সম্মুখে সকলে একত্রিত হন এবং ছোটো একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কবির প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। এদিনের অনুষ্ঠান তারা দুটি পর্বে সাজিয়েছিলেন। সকালে কবির আবক্ষ মূর্তিতে মাল্য অর্পণ ও পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করা হয়। উপস্থিত সকলে কবির আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেন। কবির আবক্ষ মূর্তির সম্মুখে দাঁড়িয়ে এদিন সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন সম্পদনারায়ণ ধর, মলয় বিশ্বাস, পার্থ স্বর্ণকার প্রমুখরা। কবিতা পাঠ করেন কবি অনুরাগী অমৃতাভ দে ও শর্মিষ্ঠা আচার্য। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তরুণকুমার সাহা, সতীনাথ ভট্টাচার্য, সর্বাণী দত্ত, কল্যাণ বিশ্বাস প্রমুখরা। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন স্মৃতিরক্ষা সমিতির সম্পাদক দীপাঞ্জন দে। এদিনের দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান হয় কৃষ্ণনগরের গ্রেস কটেজে, যেটি নজরুল ইসলামের স্মৃতিধন্য ভবন। বিকেল পাঁচটা থেকে সেখানে ‘কবি হেমচন্দ্র বাগচী শ্রদ্ধা-স্মরণ’ অনুষ্ঠান শুরু হয়, যা প্রায় দুই ঘন্টা চলে। ‘সুজন-বাসর’ ও ‘কবি হেমচন্দ্র বাগচী স্মৃতিরক্ষা সমিতি’-র যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।