কলকাতা 

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্য সব জানতেন, বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েই মানিকের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হতো ! সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট পেশ করে দাবি সিবিআইয়ের

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতি নিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যে রায় দিয়েছিলেন তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে চাকরি-হারা প্রার্থীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই যে রিপোর্ট পেশ করেছে তা থেকে বাংলার শিক্ষা দুর্নীতি স্পষ্ট হয়ে প্রকাশ পেয়েছে। শুধু তাই নয় দিনের পর দিন নিয়ম পরিবর্তন করে বা বিধি পাল্টে দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদে মানিক ভট্টাচার্যকে রেখে দেয়া হয়েছিল কেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সিবিআই।

শীর্ষ আদালতে সিবিআইয়ের দেওয়া রিপোর্টে জানানো হয়েছে, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে মানিক সবই জানতেন। পর্ষদ সভাপতি হিসাবে পর্ষদের কাজে তাঁর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল। ফলে তাঁর সম্মতিতেই বেআইনি নিয়োগ হয়েছে। অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদেরও টেট উত্তীর্ণ হিসাবে দেখানো হয়েছে।

Advertisement

রিপোর্টে সিবিআই টেট উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের জেলাভিত্তিক একটি দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করেছে। টেট পাশের জন্য সংরক্ষিত প্রার্থীদের দরকার ৮২ নম্বর। অসংরক্ষিত প্রার্থীরা ৯০ পেলে পাশ করেন। সেখানে দেখা গিয়েছে, প্রার্থীদের কারও নামের পাশে রয়েছে ৫, কারও প্রাপ্ত নম্বর ৩। ১২, ১৩, ৩৩, ৪৫ নম্বরও পেয়েও পাশ করেছেন প্রার্থীরা। মুর্শিদাবাদের ২৬ জন, উত্তর চব্বিশ পরগনার ১১ জন, বীরভূমের ১৩ জন সিবিআইয়ের তালিকায় রয়েছেন। অভিযোগ, তাঁরা টেট উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য প্রাপ্ত নম্বরের চেয়ে অনেক কম নম্বর পেয়েছেন।

এ ছাড়া, কলকাতা, পুরুলিয়া এবং কোচবিহারের আরও ৩৬ জন প্রার্থীর নামের তালিকাও রিপোর্টে দেখিয়েছে সিবিআই। তাঁদেরও বেআইনি ভাবে পাশ করিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তালিকায় ছিলেন দু’জন উর্দু মাধ্যমের চাকরিপ্রার্থীও।

২০১৪ সালের টেটে ২৭৩ জন চাকরিপ্রার্থীকে বাড়তি ১ নম্বর দিয়ে পাশ করিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগে মামলা গিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সিবিআই জানিয়েছে, বাড়তি ১ নম্বর করে দেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষা দফতরের সম্মতি ছিল। কিন্তু ৩ বা ৫ নম্বর পেয়ে যাঁরা পাশ করেছেন, তাঁদের টেট উত্তীর্ণ হিসাবে দেখানোর জন্য শিক্ষা দফতরের অনুমতি নেওয়া হয়নি।

২০১১ সালে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দায়িত্বে এসেছিলেন মানিক। তাঁর মেয়াদ শেষ হয় ২০১৬ সালে। ওই বছর তাঁর অবসরের বয়স ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ করা হয়। ২০১৮ সালে সেই মেয়াদ আবার বৃদ্ধি করা হয় ৬৮ বছর পর্যন্ত। সিবিআইয়ের দাবি, কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য সিদ্ধ করার জন্যই এ ভাবে মানিকের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল।

মানিক বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন। তাঁকে সেখানেই এই অকৃতকার্য প্রার্থীদের প্রসঙ্গে জেরা করা হয়। সিবিআইয়ের অভিযোগ, এই মামলায় অন্য অভিযুক্তদের বয়ানের সঙ্গে মানিকের বয়ান মেলেনি।

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ