কলকাতা 

ব্যক্তি থেকে সমষ্টির কল্যাণ সাধনে উত্তীর্ণ হওয়ায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানের লক্ষ্য- এ কে আজাদ

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সংবাদদাতা বাংলার জনরব: সমাজের কল্যাণকামী দৃষ্টিভঙ্গিকে সামনে রেখেই জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল বাংলার জনরব বিগত তিন বছর যাবৎ ভার্চুয়ালি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নানা অনুষ্ঠান করে আসছে। সেই উদ্দেশ্যকে পাথেয় করেই গত ২৩ এপ্রিল ২০২৩ রবিবার সন্ধ্যায় এক ভাবগম্ভীর ব্যতিক্রমী আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল। যার মূল বিষয় ছিল সদ্য সমাপ্ত জাতীয় উৎসব ঈদকে কেন্দ্র করে ‘ সম্প্রীতির বার্তায় ঈদ উৎসবের অবদান ‘ শীর্ষক আলোচনা। যাতে আমন্ত্রিত আলোচক হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন ঢাকা বাংলাদেশ থেকে বিশিষ্ট সাহিত্যিক এ কে আজাদ, গুয়াহাটি অসম থেকে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সমাজসেবক মুকুল রঞ্জন দাস, পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সমাজসচেতন ব্যক্তিত্ব নায়ীমূল হক ও বিশিষ্ট ঔপন্যাসিক জারিফুল হক।

বাংলার জনরবের সম্মানীয় সম্পাদক সেখ ইবাদুল ইসলামের স্বাগত ভাষণ এবং উদ্দেশ্য ব্যাখ্যার মধ্যে দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন বিশেষ আমন্ত্রিত শিল্পী মৃণাল দত্ত। তিনি পরিবেশন করেন বাংলার জনরবের সাহিত্য সম্পাদক সেখ আব্দুল মান্নান রচিত গান ‘রমজানের আজ মধুর ক্ষণে উঠল খুশির চাঁদ/ চাঁদের পীঠে তারার আলো ভোলায় অবসাদ’। সংগীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট শিল্পী ইন্দ্রাণী সাহাও।

Advertisement

এরপর নির্ধারিত বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে কবি, গীতিকার, প্রাবন্ধিক এ কে আজাদ সম্প্রীতি রক্ষায় ঈদের অবদান নিয়ে দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন যে কোন ধর্মের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য ব্যক্তি থেকে সমষ্টির কল্যাণে উত্তীর্ণ হওয়া।তিনি সম্প্রীতি কী এবং কিভাবে তা রক্ষা করা যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন। শিক্ষাবিদ নায়ীমূল হক উল্লেখিত বিষয়ে বক্তব্য রাখতে প্রিয় নবীজী সাঃ সাল্লামের জীবন চর্যার উদহারন দিয়ে সম্প্রীতি রক্ষায় ঈদের অবদানের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করেন। তিনি ঈদের ‘ফিতরা’র তাৎপর্য বোঝাতে গিয়ে বলেন যে ফিতরা জাতিধর্ম নির্বিশেষে গরিব দুঃখিদের হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমেও সম্প্রীতি বজায় রাখা যায়। শিক্ষাবিদ মুকুল রঞ্জন দাস বলেন সব ধর্মের মূল কথাই ঈশ্বর বিশ্বাসী হয়ে এমনভাবে ধর্মাচারণ করা চাই যাতে মানুষের কল্যাণ সাধন হয়। সব ধর্ম বিশ্বাসীরা ঈশ্বরের সন্তান, এই আদর্শ সামনে রেখে একমাস কঠোর রমযান পালন ধর্মাচারণের সাথে সাথে সব মানুষকে ভালোবাসতে উদ্দীপ্ত করে। ঔপন্যাসিক জারিফুল হক তাঁর সংক্ষিপ্ত কথনে উল্লেখ করেন যে একমাস কঠোর সিয়াম সাধনার পর ঈদের খুশি কেবল মুসলমানদের জন্য নয়, তা আমাদের সব প্রতিবেশীর। তাই তো ধর্ম নির্বিশেষে রমযান মাসে সবাইকে নিয়ে ইফতারির প্রচলন। ঈদের নামাজের পরে সবার মধ্যে সৌহার্দ্য বিনিময় করা হয়। ঠিক যেমন দুর্গাপূজা, বড়দিনে আমরা সবাই আনন্দ উপভোগ করি। তাই জাতিতে জাতিতে বিভেদ তৈরির কোন অবকাশ নেই। যা কিছু বিভেদ, বৈষম্য সৃষ্টি হয় তা রাজনৈতিক মদতপুষ্ট হয়েই সংঘটিত হয়। যা মোটেই কাম্য নয়।তিনি আরও বলেন একমাস রমজানের পালন করে ঈদগাহে ঈদের নামাজের শেষে একে অপরের মনে জমানো যা কিছু বিবাদ বৈষম্য ভুলে গলায় গলায় আলিঙ্গনে আবদ্ধ হয়। সারা বছরে জমানো মনের যাবতীয় গ্লানিকে ধুয়েমুছে একে অপরের কাছে আসার আর এক নাম ঈদ

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সম্প্রীতি বিষয়ক নিজের অনুভূতি তুলে ধরে রমযান এবং ঈদের তাৎপর্য বিষয়ক কবিতা পাঠ করে শোনান বর্ষিয়ান কবি শংকর কুমার ঘোষ। শিল্পী ইন্দ্রাণী সাহা গানের পরিবর্তে আবৃত্তি করেন কবি শংকর কুমার ঘোষের মননশীল কবিতা ‘ ঈদের গান’। শিল্পী মৃণাল দত্ত তাঁর দরদি কন্ঠে কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী গান ‘ত্রিভূবনের প্রিয় মহম্মদ এলোরে দুনিয়ায়’ পরিবেশন করে সবাইকে মুগ্ধ করে দেন। সঙ্গে সঙ্গে মনোমুগ্ধকর গানটির রচনার প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করেন সেখ ইবাদুল ইসলাম।

এদিনের মনোগ্রাহী সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুচারুভাবে সঞ্চালনা করেন সংস্থার সাহিত্য সম্পাদক তথা বিশিষ্ট সাহিত্যিক সেখ আব্দুল মান্নান।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ