কলকাতা 

“কেউ সমালোচক (ক্রিটিক্যাল) হতে পারেন, কেউ অতিসমালোচক (সুপার ক্রিটিক্যাল) হতে পারেন, কিন্তু ভণ্ড সমালোচক (হিপোক্রিটিক্যাল) হলে চলবে না।’’: রাজ্যপাল

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : হাওড়ার শিবপুর এবং হুগলি জেলার রিষড়ার ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিরোধী দলনেতার বাক যুদ্ধের মধ্যেই এবার রাজ্যপালের সঙ্গে বিরোধী দলনেতার বাকযুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। আজ মঙ্গলবার রাজ্যপাল উত্তরবঙ্গের সফর কাটছাঁট করে রিষড়ায় চলে আসেন। তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বাংলায় শান্তি ফেরানোর কথা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন।

এরপরই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যপালকে গোপালকৃষ্ণ গান্ধী এবং জগদীদ ধনখড়ের মতো কড়া অবস্থান নেয়ার পরামর্শ দেন। শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন রাজ্যপাল শুধু রিপোর্ট চাইছেন কিন্তু কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। সাধারণত রাজ্যপালকে এই ভাষায় কোন বিরোধী দলনেতা ইদানিং আক্রমণ করেছেন বলে মনে পড়ছে না। তবে বিরোধী দলনেতার এই বক্তব্য প্রচার হওয়ার পরেই এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন,‘‘আমি তাঁকে এ জন্য ধন্যবাদ জানাই। সমালোচকরা সব সময় শ্রেষ্ঠ শিক্ষক, কারণ তাঁরা আপনার সামনে আয়না তুলে ধরেন। আমার সমালোচনা করার জন্য আমি শ্রী অধিকারীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। কেউ সমালোচক (ক্রিটিক্যাল) হতে পারেন, কেউ অতিসমালোচক (সুপার ক্রিটিক্যাল) হতে পারেন, কিন্তু ভণ্ড সমালোচক (হিপোক্রিটিক্যাল) হলে চলবে না।’’

বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেছিলেন, রাজ্যপাল শুধু রিপোর্ট চেয়ে পাঠাচ্ছেন, ‘অ্যাকশন’ কিছুই হচ্ছে না। তার জবাবে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘আমি আজ (মঙ্গলবার) অকুস্থলে গিয়েছিলাম। কোনও রিপোর্ট লিখতে আমি ঘটনাস্থলে যাইনি। আমি গিয়েছিলাম এটা দেখতে, যে রিপোর্ট আমাকে পাঠানো হয়েছে, তা কতটা সত্যি। আমি আমার নিজস্ব ধারণা তৈরি করেছি।’’

রাজ্যপাল আরও বলেন, ‘‘আমার কী কাজ সে সম্পর্কে আমার সম্যক ধারণা আছে। রাজ্যপাল হিসাবে বন্ধু, দার্শনিক এবং পথ প্রদর্শকের দায়িত্ব পালন করা এবং রাজ্যের প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা যাতে সংবিধান প্রদর্শিত পথেই থাকে তা নিশ্চিত করা আমার কাজ।’’ রাজ্যপালকে প্রশ্ন করা হয়, বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করছেন, তিনি রাজ্যের কাছ থেকেই কেবল রিপোর্ট চাইছেন, কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ চাইছেন না। জবাবে রাজ্যপাল বোস বলেন, ‘‘আমার কেন্দ্রকে রিপোর্ট পাঠানো কাজ। কেন্দ্রের থেকে রিপোর্ট চাওয়া নয়।’’

হুগলির রিষড়ায় সোমবার রাতের অশান্তির পর, শিলিগুড়ি সফর কাটছাঁট করে কলকাতা ফিরে এসেছেন রাজ্যপাল। রাজভবনে ফেরার আগে রাজ্যপাল গিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে। সেখানে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেন, নিজে ঘুরে দেখেন অশান্ত এলাকা। ফেরার পথে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি আহত যুবককে দেখে রাজভনে ফেরেন তিনি। রাজ্যের অশান্তি কবলিত এলাকায় ৩৫৫ ধারা জারির দাবি তুলেছেন শুভেন্দু। তারও জবাব দেন রাজ্যপাল। এবিপি আনন্দকে তিনি বলেন, ‘‘এটা তো একটা দাবি। বিরোধী দলনেতার এই ধরনের দাবি করার অধিকার আছে। বিরোধীদের কাজই হল বিরোধিতা করা। তাই বিরোধী দলনেতা কিছু দাবি করছেন, এটা গণতন্ত্রে খুব স্বাভাবিক। রাজ্যপাল হিসাবে আমি সংবিধানের পথেই হাঁটব।’’

 

 

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ