কলকাতা বিনোদন, সংস্কৃতি ও সাহিত্য 

স্মরণসভা, স্মরণ-অনুষ্ঠান , স্মরণিকা ও কিছু কথা/মোহাম্মদ সাদউদ্দিন

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

মোহাম্মদ সাদউদ্দিন : মধ্য কলকাতার তালতলা এলাকার একটি রাস্তার নাম আব্দুল হালিম লেন।বিখ্যাত কমিউনিষ্ট নেতা আব্দুল হালিমের নাম অনুসারে রাস্তাটির নাম।রাস্তাটির সাবেক নাম ইউরোপীয় এসাইলেম লেন। আব্দুল হালিমের জন্ম ১৯০১ সালের ৬ ডিসেম্বরের(১৩০৮ বঙ্গাব্দের ২০ অগ্রহায়ণয়ণ) বীরভূম জেলার নানুর থানার শরডাঙা গ্রাম ।কিন্তু তাদের আদি পিতৃনিবাস পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম থানার কেউগুড়ি গ্রামে।হালিমের মৃত্যু ১৯৬৬ সালের ২০ এপ্রিল।

অরুণ চৌধুরীর সম্পাদনায় একটি স্মরণিকা পুস্তক বের করে সিপিআই(এম)হুগলি জেলা কমিটি।সহযোগী সম্পাদক অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় । এটি প্রকাশিত হয়েছিল ২০০২ সালের জুলাই মাসে। তাতে ১৬ টি প্রবন্ধ , চিঠিপত্র ও আলোকচিত্র রয়েছে। ঐ গ্রন্হটিতে লিখছেন কাকাবাবু মুজফ্ফর আহমেদ, সরোজ মুখার্জি, জ্যোতি বসু, হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের, সুধাংশু দাশগুপ্ত, কনক মুখোপাধ্যায়,এম আব্দুর রহমান, তানিয়া হালিম, নুরুল আলম,অরুণ চৌধুরী, প্রমুখ। প্রতিটি লেখা অত্যন্ত ভালো।কিন্তু যে লেখাটি আমাদের হৃদয়কে সবচেয়ে‌ স্পর্শ করেছে সেটি হল কাকাবাবু মুজফ্ফর আহমেদের ” আমার পয়তাল্লিশ বছরের সাথী” শীর্ষক নিবন্ধটি। ১৯৩৫ সালে কাকাবাবু মুজফ্ফর আহমেদ‌ যখন কানপুর ষড়যন্ত্র মামলায় কারাগারে, তখন কমিউনিষ্ট পার্টিকে চোখের মনির মতো যিনি রক্ষা করেছেন তাদের অন্যতম আব্দুল হালিম। আসলে তার সম্পর্কে খুটিনাটি জানতেন কাকাবাবু।আর তাই লেখাটি অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী।এখন হালিমের নাতনি উজ্জ্বলয়িনী হালিম তার দাদুর জন্মদিন পালন করেন যোধপুর পার্কের বাড়িতে।সেখানে হালিম সম্পর্কে যারা ভালো জানেন তারাই আমন্ত্রণ পান।

Advertisement

কথাটা দু:খের হলেও সত্য যে, এখন স্মরণসভাগুলো হয় বটে।কিছু অবাঞ্ছিত বক্তা জুটে যায়।দেখা যায় যাকে নিয়ে স্মরণসভা করা হচ্ছে তার সম্পর্ক তিনি কিছুই জানেন না , অথচ গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের মতো অবস্হা।আবার অভিজ্ঞতায় দেখা যায় যাকে নিয়ে স্মরণসভা করা হচ্ছে তিনি এমন কাউকে জীবিতকালে দেখতেই পারতেন না, তিনিই সেখানে বক্তা অথবা তিনিই ভিড় করেছেন। আমার মনে হয় এ ব্যাপারে যারা স্মরণসভা করছেন তাদের সতর্ক থাকা দরকার। সচেতন থাকা দরকার।বেশ কয়েক বছর আগে কলকাতা প্রেস ক্লাবে বীরভূমের ভূমিপুত্র প্রয়াত. গল্পকার এ মান্নাফের স্মরণসভা করলো একটা সাহিত্য গোষ্ঠী।তিনি হাজার গল্পের জনক।তার একটা গল্প পড়েছেন কি না জানি না, তবে ঐ না-জানারাই এ মান্নাফের স্মরণসভার বক্তা।বেশ কিছুদিন আগে চতুরঙ্গ পত্রিকার সম্পাদক আব্দুর রাউফের স্মরণসভা করা হল কলকাতার কয়েকটি জায়গায়। কিছু স্মরণসভা অবশ্যই ভালো।আর কিছুতে রাউফ সাহেব জীবিতকালে যাদেরকে দেখতেই পারতেন না তাদের কেউ কেউ জুটে গেলেন। কী মায়া কান্না।ঠিক ঐ অবাঞ্ছিতদের দেখলাম অধ্যাপক ওসমান গণির স্মরণসভায়। এ এক অদ্ভূত অভিনয় ঐ সব অবাঞ্ছিতদের।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ