খালিদা রহিমা হকের স্মৃতিচারণায় হাতিয়াড়ায় ইফতার মজলিশ
বিশেষ প্রতিনিধি: পবিত্র রমজান মাসের প্রথম দশ দিন রহমতের দশক হিসেবে পালিত হয়। উত্তর ২৪ পরগনার হাতিয়াড়ার হক মঞ্জিলে রমজান মাসের দশম দিনটিকে অন্যান্য পবিত্রতার সঙ্গে সঙ্গে গত ছ’ বছর ধরে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে পালন করা হয় বিশিষ্ট সমাজকর্মী খালেদা রহিমা হকের স্মৃতিচারণায় দোয়ার মজলিশ। ২০১৭ সালের বিশেষ এই দিনটিতে খালেদা হক চলে যান পরপারের ডাকে। সেই থেকে মূলত তাঁর পরিবারের সদস্যরা দশ রোজার দিন একত্রিত হন, ছোট থেকে বড়রা সকলে মিলে সমবেত হয়ে দোয়ার সাথে সাথে আয়োজন করেন ইফতার মজলিশ।
গত রবিবার ১০ রোজার দিন হাতিয়াড়ার হক মঞ্জিলে সকলের সঙ্গে এই দোয়ার মজলিশে বিশেষ অতিথি হয়ে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখিকা ও সমাজকর্মী সৈয়েদা কানিজ মোস্তফা। তিনি খালেদা হকের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেন একদিকে তিনি যেমন ছিলেন একজন নিষ্ঠাবান ধর্মপ্রাণ মানুষ, অন্যদিকে তিনি ছিলেন একজন পুরোদস্তুর সমাজকর্মী। তাঁর জীবনের প্রতিটি ধাপ ছিল সমাজ গঠনের কোনো না কোনো দিকে বাঁধা। সবার আগে নিজের পরিবারকে আদর্শ করে তুলতে চেয়েছিলেন তিনি। আর এই কাজে তিনি সারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন নিজেকে। কোন বাধাই তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।
তাঁর পিতা ছিলেন প্রখ্যাত সামাজ কর্মী ও রাজনীতিবিদ রাজ্যসভার সদস্য মোহাম্মদ ইসহাক এবং শশুর মশাই ছিলেন প্রখ্যাত আলেম-এ-দ্বীন ও হাতিয়াড়া হাই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ মাওলানা এজাহারুল হক। তাঁদের কর্ম প্রেরণা মন্ত্রের মতো কাজ করেছিল তাঁর মধ্যে। স্বামী বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রধান শিক্ষক কাজী নুরুল হকও বিভিন্ন ভাবে এগিয়ে এসেছিলেন তাঁর পাশে। পরিবারে মূলত মহিলাদের সুশিক্ষিত করে তোলা ও শিরদাঁড়া সোজা করে এগিয়ে চলার শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে তাঁর কর্ম প্রচেষ্টায় উপ্রকৃত হয়েছিলেন বহু পরিবার। আজও তাঁরা সশ্রদ্ধে সে কথা স্মরণ করেন।
এদিন তাঁর কন্যা ফাতিমা পারভীন মায়ের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেন তাঁর নিরলস পরিশ্রমের কথা। নাছোড়বান্দা ছিলেন তিনি। কোনো লক্ষ্য স্থির করলে, তা পূরণ না করে ছাড়তেন না আম্মা। অবশ্য এসব কাজে আম্মার প্রতি আববুর একশো শতাংশ বিশ্বাস, ভরসা ও সাহায্য-সহযোগিতা ছিল এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যা সত্যিই আগামী বহুদিন সমাজকে পথ দেখাবে।