অশোক ভাদুড়ীর প্রয়াণে নাট্যজগতে বিষণ্ণতা
দীপাঞ্জন দে: বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব অশোককুমার ভাদুড়ীর প্রয়াণে বাংলার নাট্যজগতে বিষণ্ণতা নেমে এলো। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ (শনিবার) ভোরবেলায় কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে অশোককুমার ভাদুড়ী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। নাট্যপ্রাণ এই মানুষটি একাধিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আজীবন যুক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন কৃষ্ণনগরের একাধিক সংগঠনের অভিভাবকস্বরূপ। তাঁর প্রয়াণে সমগ্র সাংস্কৃতিক জগতে বিষণ্ণতা ছেয়ে গেছে। কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজ প্রাক্তনী সংসদ, শক্তিনগর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তনী সংগঠন, নাট্যসংস্থা কৃষ্ণনগর সেতু, স্টুডেন্ট হেলথ হোম (কৃষ্ণনগর আঞ্চলিক শাখা), নর্মান বেথুন ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশন প্রভৃতির মতো একাধিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে তিনি ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ছিলেন। কৃষ্ণনগরের সাংস্কৃতিক সংস্থা ‘মুক্তধারা’-রও অভিভাবকস্বরূপ ছিলেন তিনি। অশোককুমার ভাদুড়ীর প্রয়াণে এই সকল সংগঠনগুলিকে বিশেষভাবে শোকজ্ঞাপন করতে দেখা যায়।
সাংস্কৃতিক জগতের এমন বহু মানুষ আছেন যাদের পথপ্রদর্শক ছিলেন অশোক ভাদুড়ী। তাঁর প্রথম পরিচয়— তিনি একজন নাট্যপ্রাণ মানুষ। বহু নাটকে অভিনয় করেছেন। তেমনি তাঁর নির্দেশিত নাটক একাধিক জায়গায় মঞ্চস্থ হয়েছে। জিরাফ, খাঁচা, শ্রীকান্ত — এরকম বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য নাটক রচনাও করেছেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে নাট্যকর্মীদের অনেকেই গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। নাট্যচর্চার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজিক কাজের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। নর্মান বেথুন মেমোরিয়াল ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশনে বিশেষ ভূমিকা ছিল তাঁর। জেলা হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতিতেও তিনি বিশেষ সক্রিয়তা দেখিয়েছিলেন। রবীন্দ্র স্মৃতিধন্য কৃষ্ণনগরের রানীকুঠির হেরিটেজ ভবনের স্বীকৃতি অর্জনের পশ্চাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া রবীন্দ্রভবনের বেসরকারিকরণ রোধ, কৃষ্ণনগর কলেজের মাঠ বাঁচাও আন্দোলন, কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার দাবিতে আন্দোলন— এই ধরনের একাধিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। তাঁর মতো ব্যক্তির চলে যাওয়া এক গভীর শূন্যতা সৃষ্টি করলো।
লেখক : আঞ্চলিক ইতিহাস লেখক, নদিয়া।