অন্যান্য কলকাতা 

বঙ্গ সন্তান অমর্ত্য সেনকে যে ভাষায় বিশ্বভারতীর উপাচার্য আক্রমণ করেছেন অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়ার দাবি উঠুক বাংলা জুড়ে

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সেখ ইবাদুল ইসলাম : নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বরাবরই বামপন্থী মানসিকতার মানুষ । কংগ্রেস দিল্লিতে যখন ক্ষমতায় ছিল সেই সময় তিনি কংগ্রেস সরকারের আর্থিক নীতির তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন । এমনকি অর্থনীতিতে নোবেল পাওয়ার পর ভারতের সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি সেই সময়কার সরকারের উদারনীতির সমালোচনা করেছিলেন । তা সত্ত্বে কোনো সময়ে কংগ্রেস দলের কোনো নেতা অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করতেন না । এটাই সেই সময়কার শাসক দলের প্রধান বৈশিষ্ট্য । আজকের শাসক বিজেপি দল এবং সরকার সরাসরি অমর্ত্য সেনকে নিশানা করেছে । প্রতিনিয়ত বাংলা তথা ভারতের এই সুসন্তানকে আক্রমণের লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত করেছে ।

একজন উদার মানুষ হিসাবে অমর্ত্য সেন স্বাভাবিকভাবেই সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিবাদীর বিরুদ্ধে থাকবেন এটাই স্বাভাবিক । দূনীতি বড় , না, সমাজের পচন বড় সেই প্রশ্নটি অমর্ত্য তুলেছেন । দূনীর্তি একটি সামাজিক সংকট, সমস্যা যেটা চেষ্টা করলে মেটানো যেতে পারে । কিন্ত সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিবাদী শক্তি যদি একবার মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে তাহলে আগামী দিনে যে সংকট তৈরি হবে তাতে দেশ বিপন্ন হবে , সংহতি বিপন্ন হবে, দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হবে । এটাই  অমর্ত্য সেনের প্রধান বক্তব্য । তিনি চাইছেন এদেশকে সাম্প্রদায়িক মুক্ত করতে । সমাজে সকলে ভাই ভাই হিসাবে বিরাজ করবে এটাই তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য । আর একথাগুলি বলতে গিয়ে স্বাভবিকভাবেই মোদী সরকারের সমালোচনা করেছেন ভারতরত্ন অমর্ত্য সেন ।

Advertisement

আর তা নিয়ে গোঁসা হয়েছে আমাদের বিজেপির নেতাদের । তাঁরা নানাভাবে কুটক্তি করার পর এবার আসরে নামিয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে । রবীন্দ্রনাথের বিশ্ববিদ্যালয়ের বসে যেভাবে তিনি অমর্ত্য সেনের উদ্দেশ্যে নানা অশালীন মন্তব্য করে চলেছেন তা মেনে নেওয়া যায় না । বাংলার আপামর মানুষ এখনও কেন নিরব রয়েছে তা নিয়ে আমি বিস্মিত । অমর্ত্য সেন আমাদের গর্ব। পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্য তাঁর জমি নিয়ে যে বিবাদ দেখা দিয়েছে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সূত্র বের করা যেতে পারত । এমনকি ওই সামান্য জমি যেটা নাকি দখল করে রেখেছেন অমর্ত্য দাবি বিদ্যুতের সেটা এমন কিছু নয় । তবু জনমানসে অমর্ত্য সেনকে হেয় করার উদ্দেশে এই ধরনের মন্তব্য করে চলেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যদি সামান্যতম মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি , সৌজন্যবোধ এবং রবীন্দ্রনাথের প্রতি শ্রদ্ধা থাকে তাহলে রবীন্দ্র বিরোধী কাজ করার জন্য অবিলম্বে উপাচার্যকে সরিয়ে দেবেন ।

আর বাংলার মানুষের প্রতি আমাদের আবেদন বঙ্গ সন্তান তথা আন্তর্জাতিক খ্যতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদকে যেভাষায় আক্রমণ করেছেন বিশ্বকবি প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তার জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সোচ্চার প্রতিবাদ হওয়া জরুরি । মনে রাখবেন আজ অমর্ত্যকে অপমান করছে, কাল আমাদের সবাইকে অপমান করতে পারে । বাঙালি কৃষ্টি সংস্কৃতিকে অপমান করতে পারে , তাই প্রতিবাদ জোরালো প্রয়োজন ।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ