কলকাতা 

Satghara High Madrasah: সাতঘড়া হাই মাদ্রাসাকে মেটিয়াবুরুজ এলাকার শিক্ষার প্রসারে অন্যতম দিশারী করে তুলতে হবে তিন ধরে অনুষ্ঠিত বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার শেষ দিনে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বললেন পরিচালন সমিতির সম্পাদক তথা বিশিষ্ট শিক্ষাব্রতী সমাজসেবী ব্যবসায়ী সেখ মুহাম্মদ নূরনবী

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বিশেষ প্রতিনিধি : করোনা কালে লকডাউনের জেরে স্বাভাবিক মানুষের কাজকর্ম বেশ কয়েক মাস বন্ধ ছিল একইসঙ্গে স্কুলের পঠন পাঠন সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলিতে ক্রীড়া প্রতিযোগিতাও বন্ধ ছিল। দু বছর পর রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলছে। জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।

আর স্কুল মাদ্রাসা গুলোতে শুরু হয়েছে বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। এরপর জেলায় জেলায় এই প্রতিযোগিতা হবে পরবর্তীতে রাজ্য স্তরেও এই প্রতিযোগিতা হবে বলে শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর।

Advertisement

এদিকে প্রায় দু বছর পর কলকাতার মেটিয়াবুরুজের একমাত্র মডেল মাদ্রাসা মেটিয়াবুরুজের সাতঘড়া হাই মাদ্রাসায় উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে তিন দিন ধরে অনুষ্ঠিত হল বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।

গত মঙ্গলবার ৩১ শে জানুয়ারি থেকে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় বৃহস্পতিবার দুসরা ফেব্রুয়ারি এই প্রতিযোগিতা শেষ হয়।

কলকাতার সবচেয়ে ঘনবসতি বাঙালি মুসলিম এলাকায় অবস্থিত এই মডেল মাদ্রাসাটির বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাকে ঘিরে ছেলেমেয়েদের মধ্যে উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়। প্রথমদিন গত মঙ্গলবার মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মাদ্রাসা পরিচালন সমিতির সম্পাদক শেখ মোঃ নূরনবী এবং সভাপতি আলহাজ্ব শেখ গোলাম রহমান।

আর এই জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সূচনা করা হয়। এদিন দৌড় প্রতিযোগিতা ১০০মিটার ২০০ মিটার অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম দিন মূলত নির্বাচিত করা হয় ফাইনালিস্ট প্রতিযোগিদের।

দ্বিতীয় দিন বুধবার চূড়ান্ত পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিযোগীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন বিভাগের খেলা। এর মধ্যে ছিল দৌড় প্রতিযোগিতা, অংক দৌড় প্রতিযোগিতা, পোশাক পড়ার প্রতিযোগিতা ছেলেদের, ছিল বল কিক প্রতিযোগিতা। ঐদিনই বেশ কয়েকটি ইভেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয় তাদের মধ্য থেকে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় তিনজনকে বেছে নেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার ছিল তৃতীয় দিন এই দিন বেশ কয়েকটি বিভাগের চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলার পাশাপাশি মেয়েদের মিউজিকাল চেয়ার প্রতিযোগিতা সকলের আকর্ষণ করে ।

একই সঙ্গে যেমন খুশি সাজো প্রতিযোগিতাও সকলের নজর কেড়েছে। এছাড়াও ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষক শিক্ষিকা ও পরিচালন সমিতির সকলের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় খেলা ছিল বল পাসিং।

এই খেলাটি সকলের উপভোগ করেন এবং অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে পরিচালন সমিতি সব সদস্য এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সবাই এই খেলায় অংশ নেন।

সবশেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাতঘড়া হাই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা এস টি আলীর সন্তান তথা মাদ্রাসা পরিচালন সমিতির সম্পাদক তথা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিক্ষাব্রতি এবং সমাজসেবী সেখ মোহাম্মদ নূরনবী বলেন, সাতঘড়া হাই মাদ্রাসাকে নিয়ে আমার বাপ চাচারা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের সময় এসে গেছে।

এই মাদ্রাসাকে এমন ভাবে গড়ে তুলতে হবে আগামী দিনে মেটিয়াবুরুজ এলাকার শিক্ষার আলো যেন প্রতিটা মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। শিক্ষার কোন বিকল্প হতে পারে না।

তিনি শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা সম্মিলিতভাবে এই প্রচেষ্টায় শামিল হন যাতে আগামী দিনে সাতঘড়া হাই মাদ্রাসা শুধু মডেল মাদ্রাসা নয়, এটা যেন সমগ্র বাংলাকে পথ দেখাতে পারে, এটা করতে গেলে আমার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহযোগিতা প্রয়োজন হবে।

তিনি আরো বলেন, আপনারা শিক্ষার প্রসারে কাজ করুন এলাকার ছেলেমেয়েদের মেধার বিকাশে কাজ করুন আমরা আপনাদের পাশে আছি ।আপনাদের সঙ্গে আছি । আমাদের পরিবার যে স্বপ্ন দেখেছিল সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে পারেন আপনারাই তাই আপনারা এগিয়ে আসুন সম্মিলিতভাবে শিক্ষার প্রসারে ব্রতী হন আমরা আপনাদের সঙ্গে থাকব। সাতঘড়া হাই মাদ্রাসাকে এই এলাকার শিক্ষার প্রসারে অন্যতম দিশারী করে তুলতে হবে বলে তিনি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য এই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পেছনে বর্তমান সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ নূর নবীর বাবা এবং কাকাদের অবদান স্মরণ করতেই হবে। তারা যেমন জায়গা দান করে গেছেন একই সঙ্গে বিল্ডিং তৈরি করে দিয়েছেন। সাধারণত জায়গা দান করা হয় কিন্তু বাড়ি তৈরি করে শিক্ষার প্রসারে জায়গা সহ দান করার খুব কমই নজির রয়েছে। সেই কাজটি এস টি আলি পরিবার করেছেন যা ইতিহাস হয়ে রয়েছে।

এই মাদ্রাসাটি এখন মেটিয়াবুরুজ এলাকার শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে চলেছে। তা এখানে গেলেই স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়বে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে যে অনুপাতে ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে সেই অনুপাতে শিক্ষক নেই । সেদিকে সরকারের নজর দেয়া উচিত বলে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা মনে করছেন। এই এলাকার মেয়েদের শিক্ষার প্রসারে এই মাদ্রাসাটি বর্তমান সময়ে যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে আগামী দিনেও রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পরিচালন সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব শেখ গোলাম রহমান, সহ-সভাপতি শাহজাদী মেহতাব, পরিচালন সমিতির সদস্য নিজাম উদ্দিন মোল্লা, আসলাম আলী মোল্লা, মেহতাব উদ্দিন মোল্লা, মাদ্রাসার শিক্ষক সেখ শফিউল হক, মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সেখ মনির উদ্দিন, মীর হাসানুজ্জামান, সমিরন জানা, আব্দুল মুকিত, আনিচ আলি শেখ, সেখ মিনার, শিক্ষিকা খোদেজা খাতুন, মীনা সাবাহ, তানজিলা আফরিন, সানজিদা বানু, সিরিন সুলতানা প্রমুখ।

সমগ্র খেলাটি পরিচালনা করেন সাতঘড়া হাই মাদ্রাসার ক্রীড়া শিক্ষক কুতুব উদ্দিন মোল্লা।

তিন দিন ধরে এই অনুষ্ঠানটির সুচারুভাবে সঞ্চালনা করেন শিক্ষিকা রিয়া সোনার শিক্ষক ও মাদ্রাসার একাডেমিক কাউন্সিলের সম্পাদক শান্তনু ব্যানার্জি এবং শিক্ষক অলিউর রহমান।

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ