কলকাতা 

কলকাতা প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে নজরুল ও কল্যাণের বাকবিতণ্ডায়, তৃণমূলের ইমেজে ধাক্কা !

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বুলবুল চৌধুরী: কলকাতা প্রেস ক্লাবে আইনজীবীদের এক সংগঠনের আমন্ত্রণে বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস ড. নজরুল ইসলাম একইভাবে এই সভাতে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাষায় যেভাবে নজরুল ইসলামের বক্তব্য চলাকালীন সময়ে আচরণ করেছেন তা একজন আইনজীবী করতে পারেন এটা বিশ্বাস হচ্ছে না।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সাংসদ হিসেবে পরিচিত কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে নজরুল ইসলামের মত একজন জনপ্রিয় আইপিএস অফিসারকে অপমান করার চেষ্টা করেছেন তা নিঃসন্দেহে নিন্দনীয় বলা যেতে পারে। আর এর ফলে তৃণমূল কংগ্রেসের সংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমানষে।

Advertisement

কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক সময় নজরুল ইসলামকে বিশেষ নজরে দেখতেন। কিন্তু নজরুল ইসলামের সততা ও নিরপেক্ষতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়তো পছন্দ হয়নি তাই ক্ষমতায় আসার আগে নজরুল ইসলামকে ব্যবহার করা হলেও ক্ষমতায় আসার পর তাকে ছুড়ে ফেলা দেয়া হয়েছিল।এই ইতিহাস বাংলার মানুষ ভুলে যায়নি, এটা মনে রেখেছে।

শুধু তাই নয় যে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা প্রেসক্লাবে দাঁড়িয়ে নজরুল ইসলামকে অপমান করার চেষ্টা করেছেন সেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ভিখারী পাশওয়ান মামলায় নজরুল ইসলামকে তদন্ত কমিটির মাথাতে বসাতে চেয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে। কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে সওয়াল করেছিলেন একমাত্র নিরপেক্ষ স্বচ্ছ আইপিএস অফিসার নজরুল ইসলামকে ভিখারী পাশওয়ান মামলার তদন্ত করতে দিতে হবে ।তার এই দাবি কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রেকর্ড করে গেছেন।

তারপরেও তিনি কলকাতা প্রেসক্লাবে দাঁড়িয়ে নজরুল ইসলামকে বক্তব্য রাখতে বাধা দিয়েছেন। এত দ্বিচারিতা ছাড়া আর কিছু নয়, কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত স্বনামধন্য আইনজীবীর কাছে এই আচরণ কি প্রত্যাশিত ছিল? আমাদের মনে হয় এই কারণেই তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব এখন তা তাকে খুব একটা পছন্দের চোখে দেখছেন না। অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস নজরুল ইসলাম কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোন খারাপ আচরণ করেছেন একটু জানাবেন?

আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাছে আমাদের প্রশ্ন  আপনি বাঙালি সংস্কৃতির কথা বলেন বাঙালি সংস্কৃতির প্রথম বৈশিষ্ট্য হল অপরের গণতান্ত্রিক অধিকারের হস্তক্ষেপ না করা অপরের বক্তব্যকে মন দিয়ে শোনা সেটা না করে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের যা করেছেন কলকাতা প্রেস ক্লাবে দাঁড়িয়ে, সেটা কি শাসক দলের পক্ষে খুব ভালো হয়েছে?

আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধী নই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একান্ত অনুগত ভক্ত হিসাবে বলে যাচ্ছি এই সকল নেতাদের জন্যই আজ তৃণমূল কংগ্রেস জনমানষে নিজেদের ভাবমূর্তিকে হারাচ্ছে। আর তৃণমূলের ভাবমূর্তি বলতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইমেজ। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আজ কলকাতা প্রেস ক্লাবে যা করেছেন তাতে আর যাই হোক মমতা  বন্দোপাধ্যায়ের ইমেজে ধাক্কা লেগেছে। এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।

যদি অন্য কোন কারণ থাকে হতে পারে কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত একজন স্বনামধন্য আইনজীবীর সামনে দাঁড়িয়ে মুর্শিদাবাদের ডোমকলের এক ভূমিপুত্র দরিদ্র পরিবারের সন্তান আইপিএস হওয়ার দৌলতে বক্তব্য রাখছেন এটা তিনি সহ্য করতে হয়তো পাচ্ছেন না! এছাড়া আর কিবা হতে পারে? আশা করবো কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী দিনে আরো বেশি সতর্ক হবেন নিজের উগ্রতা জাহির করার আগে অন্তত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইমেজের দিকে একটু তাকাবেন! আপনাদের মত সাংসদদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।

 

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ