কলকাতা 

রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত দুই ব্যবসায়ীর বাড়িতে ইডি এবং সিবিআইয়ের তল্লাশি

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : কলকাতা টিভির কর্ণধার তথা মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ট বলে পরিচিত ব্যবসায়ী কৌস্তুভ রায়ের বাড়ি ও কলকাতা টিভির দফতরে তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি ও সিবিআই।তদন্তকারী আধিকারিকেরা দিল্লি থেকে এসেছেন বলেও খবর। ঘটনাচক্রে, বুধবার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে গিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জেরা করেছে ইডি। পাশাপাশিই গরুপাচার-কাণ্ডে সিবিআই জেরা করছে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। দুই তদন্তই জোরকদমে চলছে। রাজ্য প্রশাসনের ‘ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন’ কৌস্তুভের বাড়ি এবং দফতরে তল্লাশির সঙ্গে পার্থ বা অনুব্রত-কাণ্ডের কোনও যোগ রয়েছে কি না জানা যায়নি।

শুধু কৌস্তুভ নন, কলকাতার আরও এক ‘শাসক-ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ীর দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতেও অফিসেও তল্লাশি চলছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

ঘটনাপ্রবাহ বলছে, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ যখন প্রথম বার সিবিআইয়ের তলবে নিজাম প্যালেসে গিয়েছিলেন, তখন তাঁর গাড়িতে গিয়েছিলেন কৌস্তুভ। হাওড়ার আমতায় মৃত ছাত্রনেতা আনিস খানের বাড়িতেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল। তখন সিপিএম অভিযোগ তুলেছিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দূত’ হিসাবেই আনিসের বাড়িতে গিয়েছিলেন ওই ব্যবসায়ী। তাঁকে নিয়ে বিজেপিরও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। বিধানসভা ও পুরসভা নির্বাচনের সময় কৌস্তুভ শাসকদলের হয়ে ‘সক্রিয়’ ভাবে কাজ করেছিলেন বলে দাবি বিরোধী শিবিরের।

শাসকদলের একাংশের বক্তব্য, কৌস্তুভ স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও ‘আস্থাভাজন’। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, কৌস্তুভকে দলের বিভিন্ন কাজেও লাগানো হত। মুকুল রায় যেদিন বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরলেন, সে দিন তাঁর সল্টলেকের বাড়ি থেকেই তাঁর গাড়িতে ছিলেন কৌস্তুভ। গত মে মাসে কৌস্তুভকে সরকারি একটি কমিটির চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ করা হয়েছিল। তাঁর জন্য মহাকরণে একটি ঘরেরও বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু কৌস্তুভের নিয়োগ নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তার পরেই কৌস্তুভকে আর ওই কমিটিতে দেখা যায়নি। কিছু দিন আগে কৌস্তুভের চ্যানেল অন্য বিতর্কে জড়িয়েছিল। তখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ছাড়পত্র আটকে দিয়েছিল অমিত শাহের দফতর। পরে বিষয়টি মিটে যায়।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে সিবিআই গ্রেফতার করেছিল কৌস্তুভকে। সেই সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে ৫১৫ কোটি টাকার রাষ্ট্রায়ত্ত দু’টি ব্যাঙ্কে জালিয়াতির অভিযোগ ছিল। তবে বাম আমলে সেই সরকারের সঙ্গেও ‘ঘনিষ্ঠতা’ ছিল কৌস্তুভের। কম্পিউটার, সফটঅয়্যার এবং সংবাদমাধ্যমের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এই ব্যবসায়ী বাম সরকারের আমলে একাধিক মন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ ছিলেন।

সূত্রের খবর, ইডি এবং আয়কর বিভাগের কর্তারা শুধু কৌস্তুভের বাড়ি এবং অফিসে নয়, তাঁর বিভিন্ন সংস্থার পদস্থ কর্তাদের বাড়িতেও তল্লাশি চালাচ্ছেন। ইডির একটি সূত্রের দাবি, কৌস্তুভের নামে-বেনামে অনেক সংস্থার খোঁজ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। বেশ কিছু নথিও উদ্ধার হয়েছে। হিসাব-বহির্ভূত সম্পত্তিরও খোঁজ মিলেছে।

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ