“আমরা দেশপ্রেম একতা, ধর্মনিরেপক্ষতার মিশেল, কোনও অশুভ শক্তি এই ঐক্যকে ভাঙতে পারবে না, হিংসামুক্ত ভারতবর্ষ চাই আমরা, যারা বিদ্বেষের বিষ ছড়াচ্ছে তাদের দেশ থেকে তাড়াতে হবে”: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
বাংলার জনরব ডেস্ক : স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ১৫ আগস্ট ঠিক রাত ১২টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেসবুক লাইভে সরাসরি এই ভাষণ সম্প্রচারিত হয়। ইংরেজিতে দেওয়া এই ভাষণ ছিল মাত্র ৮ মিনিটের। কয়েক মিনিটের এই বক্তব্যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষের মন কেড়ে নিয়েছেন বলে ওয়াকিবহাল মহলে দাবি। তিনি এদিন বলেন,আমাদের সংবিধান রক্ষা করতে হবে। দেশের ঐক্য রক্ষা করতে হবে। হিংসামুক্ত ভারতবর্ষ চাই আমরা। বিদ্বেষ বিষ যারা ছড়াচ্ছে তাদের উৎখাত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, যারা বিভেদ সৃষ্টি করছে তাদের দেশ শাসন করতে দেওয়া যাবে না।
তিনি এদিন ঘুরিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আক্রমণ করে বলেন,“আট বছর ধরে আমরা সময় নষ্ট করেছি। আরও পাঁচ-সাত বছর নষ্ট করতে চাই না। আমাদের এবার রাস্তায় নেমে কাজ করতে হবে। ইতিহাস সৃষ্টি করতে হবে। এক হতে হবে। তবেই স্বপ্নের দেশ গড়তে পারব। দেশের সামাজিক ঐক্যকে রক্ষা করতে পারব। সংবিধান রক্ষা সম্ভব হবে।”
স্বাধীনতা দিবসে দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, “এমন দেশ গড়তে হবে যেখানে প্রত্যেকের কথা বলার অধিকার থাকবে। তারজন্য শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়ব। দেশকে বিভেদকামী শক্তির শাসনে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। আমরা দেশপ্রেম একতা, ধর্মনিরেপক্ষতার মিশেল। কোনও অশুভ শক্তি এই ঐক্যকে ভাঙতে পারবে না। হিংসামুক্ত ভারতবর্ষ চাই আমরা। যারা বিদ্বেষের বিষ ছড়াচ্ছে তাদের দেশ থেকে তাড়াতে হবে।”
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি থেকে দেশের অর্থনীতি, নারী স্বাধীনতা, সামাজিক সুরক্ষা– একের পর এক ইস্যুতে কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বের সরকারকে নিশানা করে অভিষেক বলেন, “বৈচিত্রের মধ্যে একতা আমাদের দেশের বৈশিষ্ট্য। তাকে নষ্ট করা হচ্ছে। বিরোধীদের দেশদ্রোহী বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে।” এই স্বাধীনতার স্বপ্নই কি দেখেছিলেন গান্ধীজি, নেতাজি, ভগৎ সিংরা– প্রশ্ন তুলে অভিষেক বলেন, “কেন্দ্রের সরকার বলছে আমরা অমৃতকালে আছি। নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন তো এটাই কি অমৃতকাল? যেখানে টাকার দাম রোজ পড়ছে, জ্বালানির দাম আকাশছোঁয়া, অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে।”
দেশপ্রেমের প্রসঙ্গ তুলে এর পরই কেন্দ্রকে তুলোধনা করে অভিষেক বলেন, “দেশের জন্য আমাদের ভালবাসা অনেক গভীরে। এই দেশ আমাদের বড় করেছে, রক্ষা করেছে। কারও কাছে দেশপ্রেম শিখতে হবে না। বিশেষ করে তাদের কাছে তো নয়ই, যারা বিশ্বাস করে আমাদের দেশ বৈচিত্রের নয়, একনায়কতন্ত্রের।” ব্যক্তিস্বাধীনতার প্রসঙ্গ টেনেও বিঁধেছেন কেন্দ্রকে। বলেছেন, “দিল্লির মসনদে বসে একজন বলে দেবেন আমি কী পরব, কার সঙ্গে মিশব, কী খাব, কাকে ভালবাসব? এটা চলতে পারে না। আমি আমার সিদ্ধান্ত নিজে নিতে চাই।”