অন্যান্য কলকাতা 

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় : NAAC কর্তৃক মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি আজও হলো না কেন? : ড. আবদুস সাত্তার

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

ড. আবদুস সাত্তার : ২০০৭ সালে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও আজ পর্যন্ত NAAC কর্তৃক মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি হয়নি বলে জানা যাচ্ছে। কেন হয়নি ?  তার উত্তরে যা শুনলাম তা নিঃসন্দেহে সুখকর নয় । মূল্যায়নের জন্য সামগ্রিকভাবে নাকি ৮ – ১০ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। তা দেওয়ার মত অর্থ নাকি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাঁড়ারে নেই! এখন নেই কিন্তু পূর্বেও কি ছিল না?

অথচ এই দপ্তরের বাজেট নাকি বহুগুণ বেড়েছে! এও সত্য যে, এই দপ্তরের অধীনে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হলো আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। কর্তৃপক্ষের মনে রাখা প্রয়োজন যে, আইন অনুযায়ী NAAC – এর মূল্যায়ণ ও স্বীকৃতি বাধ্যতামূলক। সম্ভবত, রাজ্যের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে এখনও NAAC হয় নি। ১০ বছরেও কী এই কাজ করা গেল না? সম্ভবত বছর পাঁচ পূর্বে শুনেছিলাম আলিয়ার শিক্ষাগত বিষয়টি উচ্চশিক্ষা দপ্তর দেখভাল করবে। নির্দেশিকাও নাকি প্রকাশ হয়েছিল। অথচ রাজ্যের প্রায় সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় NAAC – এর মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি পেয়েছে। তাহলে উচ্চশিক্ষা দপ্তরও কি এক্ষেত্রে কোনও ভূমিকা পালন করে নি?

Advertisement

ভারতের শিক্ষাগত বৈচিত্র্য ও জাতীয় শিক্ষানীতি ১৯৮৬ কে সামনে রেখে ১৯৯৪ সালে ইউজিসি স্বশাসিত সংস্থা হিসেবে NAAC গঠন করেছিল। বিশ্বায়নের যুগে সরকারি, বেসরকারি হাজারও প্রতিষ্ঠান। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের প্রিয় ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়। গুণমান যাচাই করার জন্য বিশ্বব্যাপী বহু বছর ধরে নানা পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। NAAC- এর মূল্যায়নে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার ক্রমাগত গুণগত মান বৃদ্ধিই প্রাসঙ্গিক ও মুখ্য বিষয়। ছাত্র – ছাত্রী – গবেষক – অধ্যাপক- অধ্যাপিকা- প্রাক্তনী সংগঠন – প্রশাসকমন্ডলী সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে মত বিনিময় করে তাঁরা একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন। মূল্যায়িত এই প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে কমিটি স্বীকৃতি প্রদান করে থাকে। তার ভিত্তিতে ইউজিসি ও রাষ্ট্রীয় উচ্চশিক্ষা অভিযান পরিকাঠামো, গ্রন্থাগারের জন্য পুস্তক ক্রয়, গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনুদান দিয়ে থাকে।

১২ বি – এর উপর ভিত্তি করে কি বেশিদিন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা যায় ? সংশ্লিষ্ট আইন কি বলে?

এখন প্রশ্ন হলো —-

এক. বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন- পাঠন- গবেষণা – গ্রন্থাগার – পরিকাঠামো কোন অবস্থায় আছে তার কোনো মূল্যায়ন ও স্বীকৃতির প্রচেষ্টা আজ পর্যন্ত হলো না কেন?

দুই. বিশ্ববিদ্যালয় কি এতদিন তাহলে ইউজিসি ও রাষ্ট্রীয় উচ্চশিক্ষা অভিযান তহবিল থেকে কোনো আর্থিক সহায়তা পায় নি? এই বিষয়ে মাননীয় উপাচার্যসহ কর্তৃপক্ষের কি কোনো দায় ও দায়িত্ত্ব নেই? সরকারই বা তাঁদের কেন মনে করিয়ে দিলেন না যে আইন অনুযায়ী NAAC বাধ্যতামূলক। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তা সম্পন্ন করতে হবে।

চার. এই মূল্যায়ণ ও স্বীকৃতি না থাকার ফলে কি সব থেকে বেশি ছাত্র- ছাত্রীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না?

পাঁচ. এই ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় অধ্যাপক – অধ্যাপিকাগণেরও কি কোনো ভূমিকা নেই? উচ্চ শিক্ষার প্রাঙ্গণে পঠন- পাঠন সর্বোপরি গবেষণার গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিকতা তো সর্বজনীন।

সর্বশেষ, শোনা যাচ্ছে, কারিগরী প্রশিক্ষণের জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দ নিয়েই নাকি সবাই ব্যস্ত! হয়তো এই সমস্ত কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে তাঁদের নজর দেওয়ার আর অবকাশ হয় নি।

( লেখক : রাজ্যের সাবেক সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছিল মূলত তারই নেতৃত্বে। লেখক এর বক্তব্য সম্পূর্ণ নিজস্ব। তিনি এই লেখা টি ফেসবুকে লিখেছিলেন সেখান থেকে তা সংগ্রহ করে বাংলার জনরবে প্রকাশ করা হলো।)


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ