কলকাতা 

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তিকে ম্লান করতে সংখ্যালঘু সমাজের কিছু মানুষ তৎপরতা দেখাচ্ছে , এটা বিপজ্জনক প্রবণতা

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সেখ ইবাদুল ইসলাম : সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে এই রাজ্যে কংগ্রেস এবং সিপিএম চেষ্টা করেছিল মুসলিম ভোট ব্যাংকে ভাঙন ধরাতে । তারা পারেনি । কারণ রাজ্যের সংখ্যা্লঘু জনগোষ্ঠী মনে করেছে, বিজেপির মতো দলের বিরুদ্ধে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিকল্প হতে পারেন, অন্যরা নয় । কিন্ত চেষ্টার ত্রুটি করেনি, সিপিএম-কংগ্রেস তারা শেষ পর্যন্ত ফুরফুরা শরীফের এক জনপ্রিয় জলসার পীরজাদা বক্তাকেও সঙ্গী করেছিল।  কারণ লক্ষ্য একটাই মমতাকে হারাতে হবে । সেই কাজে তারা সফল হতে পারেনি । কারণ মানুষ সচেতন ছিল । সিপিএম-কংগ্রেসের নেতারা বুঝে উঠে পারেননি যে , এই বাংলার সংখ্যালঘুরা তাঁদের চালাকি ধরে ফেলেছে । বিজেপিকে বাংলায় ক্ষমতায় আনার জন্য গোপন ষড়যন্ত্র বুঝতে বাকী ছিল না এই রাজ্যের মুসলিমদের । ফলে তারা কংগ্রেস এবং বামেদেরকে বিধানসভায় শুন্য করে দিয়েছে । স্বাধীনতার পর বিধানসভায় শুন্য হওয়ার পরও থেমে নেই কংগ্রেস সিপিএম ।

তাঁদের কিছু তথাকথিত সংখ্যালঘু মুখকে সামনে এনে মমতা সরকারের ভাবমূর্তি ম্লান করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে । এরাই ভারতীয় সংবিধানে প্রদত্ত সংখ্যালঘুদের অধিকারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে তা খর্ব করেছে । যার ফলশ্রুতিতে অসমে মাদ্রাসা বন্ধ হয়ে গেছে । ভারতীয় সংবিধানের ৩০ নং ধারায় যে অধিকার সংখ্যালঘু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে তা অনেকটাই খর্ব হয়েছে সাম্প্রতিক এক রায়ে । বিশেষ করে মাদ্রাসা শিক্ষার উপর এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে । সমগ্র দেশজুড়ে এই মামলার রায় নিয়ে মুসলিম সমাজে প্রতিক্রিয়া হয়েছে । কিন্ত আমাদের রাজ্যে যারা মামলা করেছিলেন তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই , নেই লজ্জাবোধও ।

Advertisement

সাংবিধানিক অধিকারকে নিজেরাই খর্ব করে আজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি দিয়ে বলা হচ্ছে, মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যে বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করা হয়েছে তাতে মাদ্রাসা বোর্ডের কেউ নেই কেন ? কিন্ত জানা উচিত মাদ্রাসা বোর্ড পরিচালিত হয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বিধি অনুসারে । এমনকি রাজ্যের শিক্ষা দফতর যে সিদ্ধান্ত নেবে তাকেই বাস্তবায়ন করে থাকে মাদ্রাসা বোর্ড। রাজ্যের শিক্ষা দফতর যদি সিদ্ধান্ত নেয় এবার মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হবে না । তাহলে তার বিরোধিতা করতে কী পারবে মাদ্রাসা বোর্ড? তাহলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে কী প্রচারে থাকার লক্ষ্য ? নাকি মমতা সরকারকে সংখ্যালঘু বিরোধী বলে প্রচার করার কৌশল ? কোন পথে হাঁটতে চলেছে ওই সব স্বঘোষিত সিপিএম-কংগ্রেস মদতপুষ্ট সংখ্যালঘু নেতারা । যাঁদের জন্যই আজ সমগ্র দেশের মুসলিমরা সাংবিধানিক অধিকার হারিয়েছে !

এদিকে, সংখ্যালঘু সমাজে জনপ্রিয় একটি সংবাদপত্রে রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়নমন্ত্রীর এক সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে ২৩৫টি আন-এডেড মাদ্রাসাকে রেকগনাইজড করতে পেরেছি । এটা কী বাস্তব ? যদি একথা সত্য হয় তাহলে মমতা সরকারের উচিত এখনই নির্দেশিকা জারি করে প্রচার করা । না হলে, ভবিষ্যতে মন্ত্রীর এই সাক্ষাৎকার বিরোধীদের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে । আমার মনে হয় না , এই ধরনের স্পষ্ট কথা মন্ত্রী বলেছেন । সাংবাদিকের ভুল হতে পারে । রেকগনাইজড কথাটা অর্থ হলো স্বীকৃতি । আন-এডেড মাদ্রাসার স্বীকৃতি পাওয়া সবচেয়ে বড় ব্যাপার এটা মানতেই হবে । আর স্বীকৃতি মানে হলো সরকার এই মাদ্রাসাগুলিকে আগামী দিনে সব রকম সাহায্য করতে বাধ্য থাকবে । এর আগেও আমরা দেখেছি, কয়েক বছর এই আন-এডেড মাদ্রাসাগুলি সাহায্য পেয়েছিল, শিক্ষকদের বেতন হয়েছিল । তারপর ফের বন্ধ হয়ে যায় । সেরকম হবে না তো ! এটা মন্ত্রীকে ভাবতে হবে ! আবেগে বললেই হবে না ! না হলে মমতার ভাবমূর্তিতেই আঘাত লাগবে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই ।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

7 + 3 =