সংখ্যার গর্ব শেষ,শরীকের মান ভাঙাতে ছুটছেন অমিত, পারবেন কী শরীকের অভিমান ভাঙাতে
বুলবুল চৌধুরিঃ ২০১৪ সালের পর কেন্দ্রের শাসক দল ভেবেছিল নিশ্চিন্তে অন্ততঃ ১০ বছর রাজত্ব করতে পারবে। এটা ভাবার কারণ অবশ্যই ছিল,১৯৮৪ সালের পর ২০১৪তে দেশের প্রথম কোন রাজনৈতিক দল একক গরিষ্ঠতা নিয়ে দিল্লিতে ক্ষমতাসীন হয়। বিজেপির সঙ্গে অনেকেই জোটে ছিল। কিন্ত নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি এককভাবে ২৮২টি লোকসভা আসন জয় করার পর বিজেপি এবং মোদী-অমিত শাহ জুটি নিজেদেরকে সবচেয়ে শক্তিশালী মনে করতে শুরু করেন। এনডিএ শরীকদের মতামতকে কোন গুরুত্ব না দিয়ে মোদী-অমিত শাহ নিজেদের সিদ্ধান্ত জোর করে চাপিয়ে দিতে শুরু করেন।ফলে জোটের মধ্যে সংকট দানা বাধতে শুরু করে। সংখ্যার উদ্ধত্যে আমাদের প্রাক্তণ মুখ্যমন্ত্রী যেমন বলতেন আমরা ২৩৫,ওরা ৩০। এই মনোভাবই দেখা যায় মোদী-অমিত শাহের মধ্যে। কিন্ত মোদী-অমিত শাহ হয়তো টেরই করতে পারেননি তাঁরা যাদেরকে অবহেলা করছেন তারাই একদিন তাঁদের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
সম্প্রতি কর্ণাটক কান্ডের পর দেশের ১০টি রাজ্যে ৪টি লোকসভা ও ১১টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়। সেই উপনির্বাচনে বিজেপি মুখ থুবড়ে পরে। মহারাষ্ট্রের একটি আসন তো শিবসেনা-বিজেপি দলের কোন্দলে কংগ্রেস বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় লাভ করে। এটা দেখেই কুশলী রাজনীতিবিদ অমিত শাহ বুঝতে পারেন সমস্যা অনেক গভীরে চলে গেছে। সামনে ২০১৯-এর লড়াই এর আগে ঘর গোছাতে না পারলে দিল্লির মসনদ পুনরায় দখল করা যাবে না এটা বিলক্ষণ জানেন মোদী-অমিত জুটি। তাই ক্ষমতার দম্ভ ত্যাগ করে এবার শরীকদের দরজায় দরজায় ছুটে যাচ্ছেন অমিত শাহ।
গতকাল তিনি বৈঠক করলেন দীর্ঘদিনের বিজেপির সঙ্গী শিবসেনার নেতা উদ্ধব ঠাকুরের সঙ্গে। বৈঠকের দিনেই শিবসেনার মুখপত্রে তীব্র ভাষায় বিজেপিকে আক্রমন করা হয়েছে। বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে উদ্ধব ঠাকুর অমিত শাহর বৈঠক নাকি ফলপ্রসূ হয়েছে। অন্যদিকে বিশেষ সুত্রে জানা গেছে, এই বৈঠকের শুরুতেই উদ্ধব ঠাকুর নাকি অমিত শাহর কাছে বিজেপি দলের ঔদ্ধত্য ও শরীকদের প্রতি অপমান করার মানসিকতার তীব্র নিন্দা করেন। প্রথম থেকেই উদ্ধব ঠাকুর নানা তথ্য প্রমান তুলে ধরে দেখানোর চেষ্টা করেন কীভাবে বিজেপি তাদেরকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে।অমিত শাহ অবশ্য সব কথা মন দিয়ে শুনেছেন। বিষয়গুলিকে আরও ভালভাবে পর্যালোচনা করার কথা বলেছেন। জানা গেছে অমিতের কথায় উদ্ধব ঠাকুরের মন এখনও গলেনি।
আজ অমিত শাহ দেখা করবেন অাকালী দলের প্রধানের সঙ্গে।তারাও জোট ভেঙে বেরিয়ে যেতে চায়। চন্দ্রবাবু নাইডু থেকে শুরু করে চন্দ্রশেখর রাও সবাই এখন বিজেপির সঙ্গ ছাড়তে চাইছেন। অমিত শাহ কী পারবেন তাঁর ভাঙা সংসার আবার জোড়া লাগাতে। ২০১৯-এর আগে যদি এনডিএকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে না পারেন মোদী-অমিত শাহ জুটি তাহলে নরেন্দ্র মোদীর রেসের ঘোড়া থমকে যাবে।ভারতকে কংগ্রেস মুক্ত করার স্বপ্ন অমিত-মোদীজিদের কাছে স্বপ্নই থেকে যাবে।