জেলা 

২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হল এসডিপিআই-এর বিধানসভা লিডারস কনফারেন্স

শেয়ার করুন

৯ নভেম্বর ২০২৫, বহরমপুর: ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ ভবনের কনফারেন্স হলে আজ অনুষ্ঠিত হলো সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়া (এসডিপিআই)-এর বিধানসভা লিডারস কনফারেন্স। অনুষ্ঠানের সূচনা হয় দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ড. কামাল বাশিরুজ্জামানের আন্তরিক স্বাগত ভাষণের মাধ্যমে। এরপর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস মহম্মদ থুম্বে তাঁর তথ্যসমৃদ্ধ ও চিন্তাশীল বক্তৃতার মাধ্যমে সম্মেলনের মূল আলোচনা শুরু করেন।

তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেন এসডিপিআই-এর নীতি ও আদর্শ নিয়ে। তিনি বলেন, “সমস্ত রাজনৈতিক দল আজ পুঁজিবাদীদের স্বার্থে কাজ করছে। এসডিপিআই-ই একমাত্র রাজনৈতিক দল, যারা প্রান্তিক শ্রেণীকে মূল ধারায় এনে দেশে প্রকৃত সামাজিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়।” তিনি তথ্যসহ ব্যাখ্যা করেন, কীভাবে এসডিপিআই দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আসন জয় করে শক্তিশালী রাজনৈতিক বিকল্প হিসেবে গড়ে উঠছে।

Advertisement

 

সভায় রাজ্য সভাপতি হাকিকুল ইসলাম এবং জাতীয় সম্পাদক তায়েদুল ইসলাম ভারতের বর্তমান রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেন। তাঁরা দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আদর্শ, নীতি এবং জনগণের স্বার্থে তাদের ভূমিকা নিয়ে বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন।

২০২৬ বিধানসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম অভিযোগ করেন— “পরিকল্পিতভাবে রাজ্যের অযোগ্য নেতা-নেত্রীদের ক্ষমতায় বসিয়ে দুর্নীতি, অবহেলা ও বঞ্চনার রাজনীতি চালানো হচ্ছে। সংখ্যালঘু, খ্রিষ্টান, দলিত ও আদিবাসী সম্প্রদায়কে পদ্ধতিগতভাবে পিছিয়ে রাখা হচ্ছে।” তিনি হুংকার দিয়ে বলেন, “আজ সময় এসেছে তৃণমূলের অযোগ্য ও অপদার্থ নেতা-নেত্রীদের ছুড়ে ফেলে এসডিপিআই-এর যোগ্য নেতৃত্বকে বিধানসভায় পাঠানোর।”

সবশেষে সবনম মুস্তারী মহাশয়া সকল বক্তা ও অংশগ্রহণকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

সম্মেলনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হয় সাংবাদিক সম্মেলন, যেখানে রাজ্যের শিক্ষা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন প্রক্রিয়া (SIR) নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন রাজ্য সভাপতি হাকিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম ও জাতীয় সম্পাদক তায়েদুল ইসলাম।

হাকিকুল ইসলাম বলেন, “স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে বেসরকারিকরণের পথে ঠেলে দিয়ে রাজ্যের চিকিৎসা কাঠামোকে ধ্বংস করা হয়েছে; একইভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। বহু হাসপাতাল এখন ভূতুড়ে অবস্থায় পরিণত হয়েছে, আর হাজার হাজার স্কুলে শিক্ষক সংকট প্রকট। সরকারকে অবিলম্বে শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “SIR প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত সন্দেহজনক। আমরা দাবি করছি— ২০০২ সালের মতো স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত পদ্ধতিতে এই সংশোধন কার্য সম্পন্ন হোক।”

এদিনের এই কনফারেন্স ছিল রাজনৈতিক বিশ্লেষণ, এবং সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে। রাজ্যের বিভিন্ন বিধানসভা এলাকার প্রতিনিধিরা এতে অংশগ্রহণ করেন এবং আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে দলীয় কৌশল নির্ধারণে একমত হন। রাজ্য কমিটির সকল সদস্য মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

 

 


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ