কলকাতা 

সুকান্তের পর পাথরপ্রতিমার ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবী করলেন দিলীপ ঘোষ

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় এক পাজি কারখানায় বিস্ফোরণে এখনো পর্যন্ত নয় জনের মৃত্যু সংবাদ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যেই বাজি কারখানার দুই মালিকের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এই ঘটনার পর থেকেই রাজ্য জুড়ে ফের রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গেছে।

বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ইতিমধ্যেই চিঠি লিখেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। বিরোধীরা এই ঘটনার পর থেকেই প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। আজ, মঙ্গলবার সকালে গোটা ঘটনায় রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে এনআইএ তদন্তের দাবি করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে এসে প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ এমন দাবিই করলেন।

Advertisement

কদিন আগে এলাকায় বাসন্তী পুজোর প্রস্তুতি হয়েছে। তাই গতকাল রাতে পাথরপ্রতিমার ঢোলাহাট থানা এলাকার বাসিন্দা চন্দ্রকান্ত বণিকের বাড়িতে বেআইনিভাবে বাজি তৈরি হচ্ছিল বলে সূত্রের খবর। রাতে হঠাৎ বাজির স্তূপে আগুন লেগে যায়। তার জেরেই বিধ্বংসী আগুনের সঙ্গে বিস্ফোরণ হতে থাকে। একাধিক গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। বিস্ফোরণ হঠাৎ ঘটেছে বলে বাড়ি থেকে কেউ বের হতে পারেননি। জীবন্ত অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান পরিবারের অধিকাংশ সদস্যই। এই বিষয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‌যতবার বিস্ফোরণ হয় ততবার প্রশ্ন ওঠে বাজি না অন্য কিছু। নৈহাটিতে বিস্ফোরণ হয়েছিল। গঙ্গার অপর প্রান্তে হুগলির কাচ ভেঙে গিয়েছিল। আমি নিজে পিংলা গিয়েছি। বর্ধমান গিয়েছি। শেষে কতজন গ্রেফতার হয়? কতজন সাজা পায়? কেউ জানে না। আমি এগরাতে ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখেছি। কোনও ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া নেই। কিছুদিনের মধ্যে মানুষ ভুলে যায়।’‌

এদিকে মোট আটজনের মৃত্যু হওয়ায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গোটা ঘটনায় কড়া তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আবার পুলিশের বিরুদ্ধেও উঠেছে নানা অভিযোগ। এই নিয়ে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‌আমরা দাবি করছি এনআইএ হোক। কারণ এই সরকার চায় না। ওরা চায় এই ধরনের ঘটনা ঘটুক। মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি হোক। ভোটের আগে এরকম ভয়ের পরিবেশ তৈরি হোক। ভোটারদের প্রভাবিত করে। কেউ যেন আতঙ্কে বাড়ি থেকে না বের হয়। রাজ্যে শান্তিতে থাকার দিন শেষ হয়ে গিয়েছে। আমরা কেন্দ্রীয় এজেন্সির হস্তক্ষেপ চাইছি। পাথরপ্রতিমার কোন ভিতরে প্রত্যন্ত এলাকা। সেখানে এই ধরনের কারখানা কেন? বজবজ বা অন্যন্য এলাকায় তো বাজি ঘরে ঘরে তৈরি হয়। সেখানে এরকম ঘটনা কম ঘটে। কিন্তু এইসব প্রত্যন্ত এলাকায় এরকম ঘটনা ঘটে কেন?’‌

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার চিঠি লিখে এনআইএ তদন্তের দাবি করেছেন। রাজ্যের মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা আজ মঙ্গলবার সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন। আজ প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে এই বিষয়ে মুখ খুললেন দিলীপ। বিজেপি নেতার কথায়, ‘‌ভোট আসছে। সরকার ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে। সেই কারণেই বাজির নামে বোমার কারখানা চালাচ্ছে। কিসের লাইসেন্স ছিল? এই ধরনের বিস্ফোরক তৈরির লাইসেন্স ছিল? এটাই তদন্ত হওয়া উচিত। ওই পাওয়ারফুল বিস্ফোরক আসলে কি ছিল? সেখানে কি অন্য কোনও কাজ হচ্ছিল? প্রশাসনের যাওয়া উচিত। আমরাও সেখানে যেতে চাই। সরকার যেতে দেবে না। কারণ সরকার সমস্ত তথ্য লোপাট করতে চায়। রামনবমীর আগেই দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা হচ্ছে।’‌


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ