কলকাতা 

কালীঘাটের কাকুকে হেফাজতে রাখতে চাইলো না সিবিআই! রহস্য কী?

শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিনিধি : প্রচারের ঢক্কা নিনাদে কালীঘাটের কাকুকে সিবিআই হেফাজতে নেয়া হয়েছিল। গত মঙ্গলবার সিবিআই হেফাজতে কালীঘাটের কাকু চলে যাওয়ার পর কলকাতার এক ইউটিউবার তার চ্যানেলে বলেছিলেন আসছে বছর জেলে যাবে। লক্ষ্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই কালীঘাটের কাকুকে আর নিজেদের হেফাজতেই রাখতে চাইছেন না সিবিআই আধিকারিকরা। শনিবার বিচার ভবনে হাজির করে সিবিআই আইনজীবী বলেন কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র সিবিআই হেফাজতে কিছু খাচ্ছেন না এমনকি ওষুধ খাচ্ছেন না। এই অবস্থায় তাকে আর সিবিআই নিজের হেফাজতে রাখতে চাইছে না।

তবে এদিন সিবিআই আইনজীবী বিচারকের কাছে অভিযোগ করেন তদন্তে নাকি সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু সহযোগিতা করছেন না। বিচারক জানতে চান কি ধরনের সহযোগিতা করতে চাইছেন না তখন সিবিআই আইনজীবী বলেন যে চাকরি প্রার্থীরা ঘুষ দিয়েছেন বা টাকা দিয়েছেন সে কথা তিনি বলতে চাইছেন না এবং কোন আধিকারিক ঘুষ নিয়েছেন সেটাও তিনি বলতে চাইছেন না। এর উত্তরে অবশ্য বিচারক বলেন সিবিআই যা বলবে তার সঙ্গে সব কথার সহমত প্রকাশ করবে এটা হতে পারে না।

Advertisement

এরপরেই সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের আইনজীবী বিচারকের কাছে দাবি করেন যেহেতু সিবিআই আর হেফাজতে রাখতে চাইছে না অতএব কালীঘাটের কাকুকে জামিন দেওয়া হোক। যদিও শেষ পর্যন্ত বিচারক কালীঘাটের কাকুকে জেল হেফাজতে পাঠান।

প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির মামলার তদন্তে সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চাইছে সিবিআই। শনিবার সেই আবেদনও জানায় তারা। তবে সে ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম মেনে যাতে নমুনা সংগ্রহ করা হয়, সে বিষয়টিও আদালতের নজরে আনেন সুজয়কৃষ্ণের আইনজীবী। মঙ্গলবার সুজয়কে হেফাজতে নেওয়ার পর সিবিআই কী করল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী। আইনজীবীর বক্তব্য, তাঁর মক্কেল কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তি নন। কোনও সরকারি দফতরের সঙ্গেও যুক্ত নন। দেড় বছর ধরে জেলবন্দি রয়েছেন তাঁর মক্কেল। হেফাজতে থাকাকালীন সুজয়কৃষ্ণের স্ত্রীবিয়োগের কথাও তুলে ধরেন তিনি। বর্তমানে যে হেতু সিবিআই তাঁকে আর হেফাজতে চাইছে না এবং ইডির মামলাতেও তিনি জামিন পেয়েছেন— এমন অবস্থায় যে কোনও শর্তে সুজয়ের জামিনের আর্জি জানান তাঁর আইনজীবী। প্রয়োজনে জামিন দিয়ে গৃহবন্দি করে রাখার প্রস্তাবও দেন।

সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন তিনি জেরায় সাহায্য করেননি বলে অভিযোগ তদন্তকারী সংস্থার। সিবিআইয়ের দাবি, জেরার সময় চাকরিপ্রার্থীদের নাম, তাঁদের থেকে কত টাকা নেওয়া হয়েছে কিছুই বলেননি তিনি। সরকারি আধিকারিকদেরও নাম বলছেন না। সুজয় বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ সিবিআইয়ের। যদিও তদন্তকারী সংস্থার এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট ছিল না আদালত। কী ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য ‘কাকু’ দিয়েছেন, তা সিবিআইয়ের থেকে জানতে চান বিচারক। আদালতের বক্তব্য, চাকরিপ্রার্থীদের নাম এবং কত টাকা দিয়েছেন সেই তথ্য সিবিআই আগে থেকেই জানে। সুজয়কৃষ্ণ সেই তথ্য দেওয়া বা না-দেওয়ায় কী যায়-আসে? তা নিয়ে প্রশ্ন করে আদালত। বিচারক বলেন, “(তদন্তে) সহযোগিতা মানে এটা নয় যে সিবিআই যা বলবে, তাতেই হ্যাঁ বলতে হবে।”

সুজয়কৃষ্ণ জামিন পেলে তদন্ত কী ভাবে প্রভাবিত হতে পারে, সে প্রশ্নও করেন বিচারক। তখন সিবিআই জানায়, তিনি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন। এই মামলার তদন্তে অনেক সরকারি আধিকারিকের নামও উঠে আসতে পারে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু সিবিআইয়ের বক্তব্য, সুজয়কৃষ্ণ তাঁদের নাম বলছেন না।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ