কলকাতা 

আরজিকর কাণ্ডে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা সরকারের কাছে ৬ দফা দাবি পেশ করলো, এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে কর্মবিরতি চলবে চাপের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : লাগাতার আন্দোলনের চাপে সোমবার সকালেই পদত্যাগ করেছেন আরজিকরের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। কিন্তু জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের এই জয়কে তারা প্রকৃত জয় বলে মনে করছেন না। তারা আরো ছয় দফা দাবি প্রকাশ করে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করল। মনে করা হচ্ছে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের প্রভাব পশ্চিমবাংলায় পড়েছে। কারন জুনিয়ার চিকিৎসকরা যেভাবে আর জি কর কর মেডিকেল কলেজের জুনিয়ার তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আন্দোলন দানা বেঁধেছে সমগ্র দেশ জুড়ে তাতে আন্দোলনকারীরা মনে করছে সরকারের উপরে আরো চাপ বাড়াতে হবে। এ কথা বলতে কোথাও অসুবিধা নেই আরজিকরের ঘটনা কার্যত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের ভিতকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এ কথা বলতে কোথাও অসুবিধা নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে স্বাস্থ্যব্যবস্থার উপরে যে দালাল চক্র বাসা বেধেছে তাদের অনৈতিক কাজ কর্মের ফলে আজ সরকারকে এতটা খেসারত দিতে হচ্ছে।

যাইহোক জুনিয়র চিকিৎসকরা এবার আন্দোলনের ধারাকে আন্দোলনের পরিধিকে আরো ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে নিল বলে মনে করা হচ্ছে।সোমবার দুপুরে তাঁরা একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানেই জানান, তাঁদের ছয় দফা দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চলবে।

Advertisement

কী কী দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা?

প্রথমত, যুবতী চিকিৎসক খুনের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। দোষীদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। সিসিটিভি ফুটেজ এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট-সহ তদন্ত সংক্রান্ত যাবতীয় নথি আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিকে দেখাতে হবে।

দ্বিতীয়ত, উচ্চ পদস্থ আধিকারিককে (অধ্যক্ষ, এমএসভিপি, ডিন অফ স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার, রেসপিরেটরি মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান) লিখিত ভাবে পদত্যাগ বা অপসারণ করতে হবে। তাঁদের লিখিত ভাবে ক্ষমাও চাইতে হবে। ভবিষ্যতে আর কখনও যাতে কোনও প্রাতিষ্ঠানিক পদে তাঁদের দায়িত্ব না দেওয়া হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

তৃতীয়ত, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিহত চিকিৎসকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

চতুর্থত, রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ২৪ ঘণ্টা সিসি ক্যামেরার নজরদারির বন্দোবস্ত করতে হবে। মহিলা এবং পুরুষ নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করতে হবে। হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ পিকেটিং এবং পুলিশের টহলদারির ব্যবস্থা করতে হবে। কর্তব্যরত চিকিৎসকদের জন্য উপযুক্ত ঘরের বন্দোবস্ত করতে হবে, যাতে কাউকে আর সেমিনার হলে বিশ্রাম নিতে না হয়।

পঞ্চমত, আন্দোলনরত ডাক্তারি পড়ুয়া এবং জুনিয়র চিকিৎসকদের উপর অত্যাচারের জন্য কলকাতা পুলিশকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

ষষ্ঠত, সমাজমাধ্যমে যে মানহানি করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে পদক্ষেপ করতে হবে।

এই সমস্ত দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে জরুরি বিভাগ-সহ সর্বত্র কর্মবিরতি চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সেই সঙ্গে আরজি করের আন্দোলনের সঙ্গে গলা মিলিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে যে সমর্থন আসছে, তা-ও স্বাগত জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ