জেলা 

জামিনের আবেদন খারিজ অনুব্রতের, আরও চার দিন সিবিআই হেফাজতেই থাকতে হবে তৃণমূল নেতাকে

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল আসানসোলের বিশেষ আদালত। তাকে আরো চার দিনের জন্য সিবিআই হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। ২৪ আগস্ট অনুব্রত মণ্ডলকে ফের সিবিআই এর বিশেষ আদালতে হাজির করা হবে।

শনিবার আদালতে পৌঁছনোর আগেই অনুব্রতর (Anubrata Mandal) অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। তিনি জানান, কিছু ফিক্সড ডিপোজিট পাওয়া গিয়েছে। সবটাই তাঁর স্ত্রী ছবি মণ্ডলের মৃত্যুর পর লাইফ ইন্সিওরেন্স থেকে পাওয়া টাকা। রাইস মিলের কথাও বলা হচ্ছে। সেটি শ্বশুরবাড়ির তরফে উপহার পেয়েছিলেন মক্কেলের মেয়ে ও স্ত্রী।

Advertisement

পালটা অনুব্রতকে আরও চারদিন হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানায় সিবিআই। যুক্তি হিসাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, অনুব্রত মণ্ডল প্রভাবশালী। উনি জামিনে মুক্তি পেলে সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন। ভয় দেখাতে পারেন। সিবিআইয়ের আইনজীবী আরও বলেন, “শুরু থেকে সিআরপিসি’র ১৬০ ধারায় নোটিস দেওয়া হয়েছিল। এর আগে বহুবার নোটিস দেওয়া হয়েছিল। তদন্তকারী সংস্থাকে সহযোগিতা করেনি। উনি সাধারণ অভিযুক্ত নন। রাজ্য সরকারের সঙ্গে ওনার যোগাযোগ আছে। সায়গল মধ্যস্থতাকারী। দেহরক্ষীর মাধ্যমে এনামুল হকের থেকে টাকা নেন। এটা একজনের ব্যবসা নয়। একটা চেন। এর পিছনে ষড়যন্ত্র আছে। অনুব্রতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই তাঁকে সিবিআই হেফাজতে নেওয়া দরকার।”

এছাড়া বিচারকের সামনে আরও একবার অনুব্রত ও তাঁর মেয়ে সুকন্যার বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ জানান সিবিআইয়ের আইনজীবী। বলেন, “ওনাকে বারবার ডাকা হলেও হাজিরা দেননি। কলকাতায় থাকলেও নিজাম প্যালেসে আসেননি। হাই কোর্টের নির্দেশের পরেও আসেননি। এমনকী চিকিৎসককে চাপ দিয়ে সার্টিফিকেট নিয়েছেন। অভিযুক্ত নানাভাবে তদন্ত প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।”

পালটা অনুব্রতর আইনজীবী জানান, “উনি ইচ্ছা করে হাজিরা দেননি এমন নয়। শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাই উপস্থিত থাকতে পারেননি।” বিচারক তখন বলেন, “এরকম কো-ইন্সিডেন্ট বারবার কি হতে পারে?” পালটা অনুব্রতর আইনজীবী জানান, “কো-ইন্সিডেন্ট নয়। ২০১১ সাল থেকে ওনার চিকিৎসা চলছে। শ্বাসকষ্ট, মধুমেহ, ফিসচুলার মতো একাধিক রোগ রয়েছে তাঁর। আমাদের কাছে সব নথিপত্র আছে। দু’সপ্তাহের জন্য বেড রেস্ট নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা।” বিচারক ফের প্রশ্ন করেন, “উনি (অনুব্রত মণ্ডল) কলকাতায় কতবার গিয়েছিলেন?”

আইনজীবীর উত্তর, “মাত্র একবার। অনুব্রতর শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় তাঁর সুবিধা মতো জায়গায় বাড়িতে বা অন্য কোথাও গিয়েও সিবিআই দেখা করতে পারত। মেডিক্যাল ডকুমেন্টসও দেওয়া হয়। কিন্তু সিবিআই ৮ ফেব্রুয়ারি নোটিস দেয়। অসুস্থতার জন্য যেতে পারেননি মক্কেল। সেদিনই আবার সিবিআই নোটিস দেয় ১০ ফেব্রুয়ারি আসুন। উনি পালিয়ে যাননি বাড়ি থেকে। পলাতক ছিলেন না।”

অনুব্রতর আইনজীবী বলেন, “গরু নিলামে প্রচুর গরমিল ধরা পড়েছে। পশুর হাট থেকে কিনে সেগুলো পাচার করা হয়েছে। এনামুল ও সায়গলের কথা হয়েছে। এগুলো যথাযথ নয়।” পালটা সিবিআই আইনজীবী জানান, “সায়গল হোসেন ছিল অন্যতম মধ্যস্থতাকারী। বিভিন্ন সময় গরু পাচারের ক্ষেত্রে ব্যাকডেটেড নথি দেখানো হয়েছে। বহু নতুন তথ্য উঠে এসেছে। তাই ফের অনুব্রতকে হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।”

বিচারক সিবিআইয়ের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, “কি ধরনের নতুন তথ্য পেয়েছেন? একটা বলুন।” বিচারক প্রশ্ন করেন, “স্বাস্থ্য ঠিক আছে আপনার?” অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “শরীর আমার বরাবরই খারাপ। কালও জ্বর ছিল। কাশি আছে।” বিচারক বলেন, “চিকিৎসকরা আপনাকে দেখছেন তো? চেকআপ করছেন তো?” অনুব্রত বলেন, “এসএসকেএম হাসপাতালের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ খাচ্ছি।” সওয়াল জবাব শোনার পর কিছুক্ষণ রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারক। পরে ৪দিনের সিবিআই হেফাজতের দেন তিনি।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ