কলকাতা বিনোদন, সংস্কৃতি ও সাহিত্য 

পৃথিবীর সবকিছু বদলে গেলেও শিকড়ের নথি বদলায় না: অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সংবাদদাতা, বাংলার জনরব: ‘পৃথিবীর সবকিছু বদলে গেলেও আমাদের শিকড়ের নথি কখনো বদলায় না। আজকের তথ্য প্রযুক্তির যুগে পৃথিবীর যতকিছুরই দ্রুত বদল ঘটুক না কেন, আমাদের পূর্বপুরুষ বাবা, ঠাকুরদাদের শিল্প, সাহিত্য-সংস্কৃতির স্মৃতি কখনোই বিস্মৃতির আড়ালে হারিয়ে যাবে না।‌ যাঁরা কালে কালে একশ শতাংশই প্রাসঙ্গিক হয়ে থাকবেন। অনুরূপভাবে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের শিল্প-সাহিত্য-গান-কবিতাও‌ প্রাসঙ্গিক হয়ে আছে এবং থাকবে। এ ব্যাপারে কোনো সংশয়ের অবকাশ নেই। নতুন প্রজন্মদের মধ্যে রাবীন্দ্রিক চিন্তা চেতনাকে জাগরুক রাখতে গেলে তাদের বইপাঠে আগ্রহীকরে তুলতে হবে।’ – গত ১৫ মে রবিবার সন্ধ্যায় নিউজ পোর্টাল বাংলার জনরবের সাহিত্য বিভাগ দ্বারা আয়োজিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১ তম ভার্চুয়াল রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর আলোচনায় অংশ নিয়ে কথাগুলি বলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক হিস্ট্রি এ্যন্ড কালচারের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ।

‘তথ্য প্রযুক্তির যুগে রবীন্দ্রনাথের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক এদিনের আলোচনার আগে অনুষ্ঠানের সূচনা হয় বাংলাদেশের আমন্ত্রিত বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী সমীর কান্তি দেবনাথের পরিবেশিত দুখানি রবীন্দ্র সংগীত দিয়ে। তিনি প্রথমে পরিবেশন করেন ‘তোমার গোপন কথাটি সখি রেখ না মনে’ প্রেম পর্যায়ের গান। পরে তাঁর দরদি কন্ঠে পূজা পর্যায়ের ‘যখন তুমি বাঁধছিলে তান সে যে বিষম ব্যথা’ পরিবেশন করে অনুষ্ঠানকে এক ভাবগম্ভীর মাত্রায় বেঁধে দেন।

Advertisement

এরপর অনুষ্ঠান অনন্য মাত্রায় পৌঁছে যায় উত্তর পূর্বাঞ্চল তথা মুম্বাইয়ের যশস্বী বাচিক শিল্পী ও নাট্যব্যক্তিত্ব সুকুমার বাগচির রবীন্দ্র কবিতা আবৃত্তিতে। দুইটি পর্বে তিনি বিভিন্ন আঙ্গিকের চারটি কবিতা আবৃত্তি করেন। তিনি তাঁর ভরাট কন্ঠে প্রথমে ‘ প্রশ্ন’ ও ‘জীবন দেবতা’, পরে ‘বাঁশি’ ও ‘ বিদায়’ কবিতা আবৃত্তি করেন। কবিতা আবৃত্তির মাঝে আলোচনার নির্ধারিত বিষয়কে সামনে রেখে তিনি বলেন ‘রবীন্দ্রনাথ নিজেই বলে গেছেন যে তাঁর সব সৃষ্টি ‌চলে গেলেও তাঁর গান রয়ে যাবে চিরদিন।’

বাগচি বাবুর আবৃত্তিতে মোহিত হয়ে বাংলার জনরবের সম্মানীয় সম্পাদক সেখ ইবাদুল ইসলাম বলেন ‘ শ্রদ্ধেয় সুকুমার বাগচির দরদভরা ভরাট কন্ঠের আবৃত্তি মনে করিয়ে দেয় প্রয়াত কিংবদন্তি আবৃত্তি শিল্পী গৌরী ঘোষ আর পার্থ ঘোষের কথা। তিনি বলেন আজ সুকুমার বাগচির কন্ঠে সেই পার্থ ঘোষের ছায়া দেখতে পেলাম। বাংলা মনোজ্ঞ কবিতা আবৃত্তির যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তার অনেকটাই বাগচি বাবু পুরণ করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

বাংলার জনরবের সাহিত্য সম্পাদক কথাশিল্পী ও কবি সেখ আব্দুল মান্নান সুচারুরূপে সঞ্চালনা করেন এদিনের কথা,গান, কবিতায় সাজানো এই মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান । তিনিও আলোচনার নির্ধারিত বিষয় সম্পর্কে বলেন ” ১৩০২ সালের ২ফাল্গুন কবিগুরু ‘১৪০০ সাল’ কবিতা রচনা করে আশা ব্যক্ত করেছিলেন ‘আছি হতে শতবর্ষ পরে/ কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি/ কৌতুহলভরে,/ আছি হতে শতবর্ষ পরে।…’। সুতরাং এই কবিতা রবীন্দ্রনাথের প্রাসঙ্গিকতার‌ এক প্রকৃষ্ট উদাহরন।’

অনুষ্ঠানের অন্তিম পর্বে শিল্পী সমীর কান্তি দেবনাথ বহুশ্রুত জনপ্রিয় রবীন্দ্র সংগীত ‘তোমায় গান শোনাবো তাইতো আমায় জাগিয়ে রাখ ওগো ঘুম ভাঙানিয়া’ পরিবেশনের আগে বলেন ‘ আমরা ভীষণ তথ্য নির্ভর হয়ে পড়ছি। শুধু তথ্য নির্ভর নয়, আমাদের তাত্বিক হতে হবে। তবেই বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির পথিকৃৎ রবীন্দ্রনাথের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা নিবেদন অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন একজন বাংলা পড়তে পারা মানুষ সারা জীবন ধরে রবীন্দ্র সাহিত্য না বুঝে রিডিং পড়তে চাইলেও পড়ে শেষ করতে পারবে না।’

 

 

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ