অন্যান্য কলকাতা 

মরহুম বদরুদ্দিন সইদ আযহারী সারা জীবন দ্বীন এবং সমাজের স্বার্থে নীরবে কাজ করে গেছেন / মাওলানা আবদুল ওহাব

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

মাওলানা আবদুল ওহাব : অনেক পীর,মাওলানা,হাফেজ,দরবেশ,ইমাম,ইসলামী বক্তা ও ওস্তাদ দেখেছি  আমার এই ৫৮ বছর বয়সে।  আমি ১৯৭৮ সালে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হওয়ার অল্প দিনের মধ্যে ছাত্র শিক্ষকের যে সর্ম্পক হওয়া উচিত সেটি হয়ে গেল। সাধারণত যেটা হয়ে থাকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছাত্রেরা ক্লাস করে চলে যায়। শিক্ষকদের সঙ্গে ততটা  ঘনিষ্ট হতে পারে না । আল্লাহর অশেষ করুণায় আমি এবং আমার সঙ্গী মাওলানা  মোজাফ্ফর হোসেন, মাওলানা নাসের, মাওলানা রফিকুল হাসানরা, ওতপ্রোতভাবে প্রায় সকল শিক্ষকদের সঙ্গে একেবারে কাছের হয়ে যাই ।ওস্তাদদের মধ্যে যেমন মরহুম আইনুল বারী,মরহুম আবদুল আহাদ,মরহুম আবদুল মান্নান,মরহুম একেএম মাসুমি এবং যবিহুর রহমান প্রমুখ ।

বিশেষ করে মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান সাহেব এবং মরহুম মাওলানা বদরুদ্দিন আযহারী সাহেবের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে পড়ি। এই দুজনের মধ্যে মোহম্মাদ মনিরুজ্জামান গত বছর ১৫ই মে ২০২১ তারিখে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চিরতরে পরলোকগমন করেন । আর এই বছর ১৪ই এপ্রিল,২০২২ এ মরহুম বদরুদ্দিন আযহারী আখেরাতের দিকে  পাড়ি দেন। আল্লাহ পাক সকলকে জান্নাত-উল-ফিরদৌস নসীব করুন ।

Advertisement

আযহারী সাহেব ছিলেন ফুরফুরা শরীফের মেজো হুজুরপীর কেবলার(রহ) বিশিষ্ট খলিফা ।কলকাতায় আলিয়া মাদ্রাসার মোহাদ্দেস ছিলেন তিনি। পীরানে পীরদের তরিকা অনুযায়ী জিকির আসগারের মজলিস ও ওয়াজ  নসীহতের মাধ্যমে তাঁর ভক্ত মুরীদ ও মুত্তাকি দ্বীনদের মধ্যে ইসলামী শিক্ষা ও ওজিফা দিতেন। তিনি যেমন ধর্মীয় প্রচার এবং পীরের খলিফা হিসাবে দ্বীনের সেবা করেছেন একই সঙ্গে তাঁর সামাজিক অবদানও কম ছিল না । তিনি নিরবে প্রচারের আড়ালে সমাজের সেবা করে গেছেন ।

আযহারী সাহেবের ইখলাক-স্বভাব চরিত্র আচার আচরণ ব্যবহার ভক্তদেরকে মুগ্ধ করতেন ।তাঁর জীবনের আরেকটি ছোটো উদাহরণ দিলে বুঝতে পারবেন যে তিনি কেমন প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। আমি, মরহুম মনিরুজ্জামান স্যার ও মাওলানা মোজাফ্ফার হোসেন প্রায় ওনার বাড়িতে যাতায়াত করতাম। আমরা এই তিনজনে সামাজিক কাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় স্কুল, মাদ্রাসা ,মসজিদ,মিশন প্রতিষ্ঠা করার জন্য দৌড় ঝাঁপ করি । এই  সব কাজ করতে গিয়ে প্রচুর টাকা পয়সার প্রয়োজন হয়ে থাকে।

এক সময় পানীয় জলের জন্য টিউবওয়েল বসানোর প্রয়োজন হয় তাতে অনেক টাকার দরকার পড়ে তখন আমার বন্ধু মোজাফ্ফর হোসেন ও অতি কাছের মানুষ এবং শিক্ষক মরহুম মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান সাহেবকে বলি চলুন আমরা একবার আযহারী সাহেবকে বলি নিশ্চয় কিছু টাকা পাওয়া যাবে। আমরা একদিন দিনক্ষণ ঠিক করে উনার নিকট গেলাম উনি খুব খুশি হলেন।উনার দরবারে জোহর এবং আসরের নামাজ পড়ে খাওয়া-দাওয়া করলাম আসার সময় আমাদের নিয়েত অনুযায়ী উনাকে প্রস্তাব দিলাম যে হুজুর টিউওয়েলের জন্য কিছু টাকা লাগবে।উনি শুনে মুচকি হাসলেন এবং বলেন ‘বেটা এই জন্য এসেছিস?’ আমি বললাম এক সাক্ষাত , দ্বিতীয় টাকার জন্য। এক কথায় উনি এমন টাকা দিলেন যে পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়ে যায় । গোপনীয়ভাবে আরো অনেক কাজ তিনি করেছেন এটি তাঁর একটি উাহরণ মাত্র। আল্লাহ তাঁর জান্নাত-উল-ফিরদৌস নসীব করুন। আমীন ।

লেখক : মরহুম বদরুদ্দিন সইদ আযহারীর প্রিয় ছাত্র ।সাধারণ সম্পাদক আল-আমীন মিল্লি মিশন ।

শিক্ষক, মনু মেমোরিয়াল ইন্সটিটিউশন(হাই মাদ্রাসা)


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ