কলকাতা 

কলকাতায় ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিশাল প্রতিবাদ – গাজায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ইসরাইলি পরিকল্পনার নিন্দা, সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান

শেয়ার করুন

কলকাতা: আজ কলকাতায় গাজাবাসীর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ এবং ইসরাইলের নৃশংস আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে এক বিশাল প্রতিবাদ মিছিল ও কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সতর্ক করেন যে গাজায় ইসরাইলের সামরিক বা রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার যেকোনো প্রচেষ্টা অবরুদ্ধ এ অঞ্চলে ইতোমধ্যেই চলতে থাকা মানবিক বিপর্যয়কে আরও তীব্র করবে।

হাজারো মানুষ ধর্ম, মতাদর্শ ও সামাজিক পটভূমি অতিক্রম করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই প্রতিবাদে যোগ দেন। অসংখ্য নাগরিক, শিক্ষার্থী, সামাজিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট সিভিল সোসাইটির কর্মীরা এই প্রতিবাদে অংশ নেন। প্রায় সব ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পটভূমির মানুষের অংশগ্রহণ এক শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে যে— ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি কেবল মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং ভারতের শান্তি ও ন্যায়বিচারপ্রেমী সবার অভিন্ন উদ্বেগ।

Advertisement

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা ইসরাইলের নৃশংস আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে এটিকে চলমান গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তারা উল্লেখ করেন যে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে প্রায় এক লাখ ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি, নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি বাড়িঘর, হাসপাতাল, স্কুল ও শরণার্থী শিবিরগুলোকে পদ্ধতিগতভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। প্রতিবাদকারীরা আরও তুলে ধরেন যে ব্যাপক অনাহার, স্বাস্থ্যসেবা ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার প্রায় সম্পূর্ণ পতনের ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, এবং অবরোধ না উঠলে আসন্ন দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়েছে।

প্রতিবাদকারীদের দাবি:

১) ভারত সরকারকে অবিলম্বে ইসরাইলের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাতে হবে এবং তার সঙ্গে সব ধরনের সামরিক ও কৌশলগত সহযোগিতা বন্ধ করতে হবে।

২) ভারতকে তার দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য বজায় রেখে নিপীড়িতদের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করতে হবে।

৩) গাজায় খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও চিকিৎসা সামগ্রী প্রবেশের জন্য জরুরি মানবিক করিডর খুলতে হবে।

৪) আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে এবং ইসরাইলের সঙ্গে সামরিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে।

৫) ভারতের সিভিল সোসাইটি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সচেতনতা প্রচার, ইসরাইলি পণ্যের বয়কট এবং শান্তিপূর্ণ সংহতি কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে।

প্রতিবাদ থেকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর প্রতিও জোরালো আহ্বান জানানো হয় যেন তারা ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করে রক্তপাত বন্ধ করতে বাধ্য করে। অংশগ্রহণকারীরা জোর দিয়ে বলেন, গণহত্যার মুখে নীরব থাকা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সরকার, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিসহ সবাইকে নৈতিক ও সাংবিধানিক দায়িত্বের আলোকে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ