নতুন দল গড়লেও হুমায়ুনের বিধায়ক পদ খারিজ নিয়ে কোন পদক্ষেপ করবে না তৃণমূল, নেপথ্যে রহস্য?
নতুন দল গড়লেও ভরতপুরের নিলম্বিত (সাসপেন্ড) তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের সদস্যপদ খারিজের জন্য আবেদন করবে না তৃণমূল পরিষদীয়দল। বিধানসভার তৃণমূল পরিষদীয়দল সূত্রে তেমনটাই খবর।
৪ ডিসেম্বর দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের ‘অপরাধে’ হুমায়ুনকে ছয় বছরের জন্য তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড করা হয়। এর পর হুমায়ুন অভিযোগ করেন, তিনি বেলডাঙায় বাবরি মসজিদ তৈরির ঘোষণার কারণেই তাঁকে তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ওই দিনই হুমায়ুন জানিয়ে দেন, তৃণমূলের বিধায়কপদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পাশাপাশি ২২ ডিসেম্বর নতুন রাজনৈতিক দল গড়বেন তিনি।

সোমবার মুর্শিদাবাদে জনসভা করে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জনতা উন্নয়ন পার্টি’র ঘোষণা করেছেন হুমায়ুন। বেশ কিছু আসনে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের নামও ঘোষণা করে দিয়েছেন। সাসপেনশনের ক্ষেত্রে দলত্যাগবিরোধী আইন বলবৎ না হলেও হুমায়ুন নতুন দল গড়ায় বিষয়টি অন্য মাত্রা নিয়েছে। ‘জনতা উন্নয়ন পার্টি’র সদস্য হয়েছেন হুমায়ুন। এই যুক্তিতে তাঁর দলত্যাগবিরোধী আইনের আওতায় পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে দাবি ছিল তৃণমূলের একাংশের। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠছিল নয়া রাজনৈতিক দল গঠনের পর কি হুমায়ুনের বিধায়কপদ খারিজের আবেদন জানাবে তৃণমূল পরিষদীয়দল? এমন প্রশ্নের জবাবে তৃণমূল পরিষদীয়দলের এক বর্ষীয়ান সদস্য জানিয়েছেন, হুমায়ুনকে নিয়ে আর দল কিছুই ভাবছে না। তাঁর বিধায়কপদ খারিজের আবেদন করে অযথা তাঁকে গুরুত্ব দিতে নারাজ দল।
বিধানসভা নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস বাকি। তৃণমূল মনে করছে, হুমায়ুনের বিধায়কপদ খারিজ করে তাঁকে শহিদের মর্যাদা দেওয়ার কোনও অর্থ হয় না। তাই তাঁর বিরুদ্ধে আপাতত কোনও পদক্ষেপ করবে না তৃণমূল পরিষদীয়দল। অন্য দিকে, বুধবার হুমায়ুনের নির্বাচনী ক্ষেত্রের অন্তর্গত ভরতপুর ১ ও ভরতপুর ২ ব্লকের মাদার-সহ যুব, মহিলা ও শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি ও সহ-সভাপতির নাম ঘোষণা করেছে তৃণমূল। তাতে নজরুল ইসলাম (টার্জান) ও মুস্তাফিজুর রহমান (সুমন)-এর মতো পুরনোদেরই নাম রয়েছে। ব্লক সভাপতি পদে তাঁর অপছন্দের লোকেদের বসানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন হুমায়ুন। সূত্রের খবর, ব্লক কমিটিতে স্থান দেওয়ার জন্য যে নাম হুমায়ুন দলের শীর্ষনেতৃত্বকে পাঠিয়েছিলেন, তা খারিজ করে দেওয়া হয়। একাধিক বার আলোচনা করেও পছন্দের লোকেদের ব্লক কমিটিতে স্থান করে দিতে পারেননি ভরতপুরের বিধায়ক।

