কলকাতার পর এবার পান্ডুয়ায় পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ যুবককে, গ্রেফতার দুই
বাংলার জনরব ডেস্ক : রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে পিটিয়ে মারার অভিযান। লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই এই পরম্পরা এতটাই বেড়ে চলেছে যে সরকার এবং সুশীল সমাজ খুবই চিন্তায় পড়ে গেছে। কোথাও ছেলে ধরার সন্দেহে কোথাও বা চোর সন্দেহে পিটিয়ে মারা হচ্ছে। এমনকি খোদ কলকাতা শহরের এক নাগরিককে পিটিয়ে মারল ছাত্রদের একাংশ। চোর সন্দেহের। বউবাজারের ঘটনা রেশ কাটতে না কাটতেই আবার দেখা গেল হুগলির পান্ডুয়া তে পিটিয়ে মারার ঘটনা।
জানা গেছে সামান্য বচসা থেকে এক যুবককে পিটিয়ে মারা হয়েছে দুজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।স্থানীয় সূত্রে খবর, নিহতের নাম আশিস বাউল দাস। ২৬ বছর বয়সি ওই যুবক দ্বারবাসিনীরই গরুইগেঁড়ে গ্রামের বাসিন্দা।
জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় একটি মেলা দেখে মোটরবাইকে চেপে বন্ধুদের সঙ্গে ফিরছিলেন আশিস। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গমুকপাটি এলাকায় মনসাপুজো হচ্ছিল। সেখানে লাউডস্পিকারে গান বাজানো নিয়ে গন্ডগোল চলছিল। ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আশিসের বাইকের সামনে পড়েন এক গ্রামবাসী। কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু সেখান থেকে শুরু হয় বচসা। অভিযোগ, এর পর আশিসকে বাইক থেকে জামার কলার ধরে টেনে নামিয়ে মারধর করা হয়। রাস্তায় ফেলে তাঁর বুকে লাথি মারা হয় বলেও অভিযোগ। সঙ্গে থাকা আশিসের বন্ধু তাঁকে সেখান থেকে কোনও রকমে ছাড়িয়ে বাড়ি নিয়ে যান। কিন্তু রাত থেকেই বুকে ব্যথা অনুভব করেন ওই যুবক। পরদিন সকালে বাবা বিকাশ দাসকে ঘটনার কথা বলেন আশিস। সেই সঙ্গে নিজের শারীরিক অসুবিধার কথাও জানান তিনি।
পর দিন ওই গ্রামে গিয়ে ছেলেকে কেন মারা হয়েছে জানতে চাইলে বিকাশের উপরেও কয়েক জন গ্রামবাসী চড়াও হন বলে অভিযোগ। এর মধ্যে আরও অসুস্থ হতে শুরু করেন আশিস। তাঁর পরিবার সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত থেকে রক্তবমি শুরু হয় তাঁর। তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল পান্ডুয়া হাসপাতালে। পরে সেখান থেকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় যুবককে আইসিইউ-তে রাখার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু, ওই হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি করানোর জন্য সময় লাগত। তাই আশিসকে কল্যাণীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার। সেখান থেকে কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যাওযার পথে মৃত্যু হয়েছে যুবকের। রবিবার তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি, পিটিয়ে খুনের অভিযোগের তদন্তও শুরু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।