মহুয়ার প্রশ্নবানে জর্জরিত বিজেপি! এথিক্স কমিটির তদন্ত করলেও দেশের মানুষের কাছে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক ও জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ
সেখ ইবাদুল ইসলাম : তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগ উঠেছিল। আর এই অভিযোগ করেছেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দূবে। অথচ সংসদে দাঁড়িয়ে এই মহুয়া মৈত্র বিজেপির সাংসদ নিশিকান্ত দুবের বিরুদ্ধে একাধিক তথ্য প্রমাণ পেশ করে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। যে অভিযোগ ছিল মূলত নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এবং একজন সাংসদ সেই তথ্য গোপন করেছেন এই বিষয়ে।
কিন্তু তৃণমূল সাংসদ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ যাওয়ার পরে পরেই সংসদের এথিক্স কমিটির তদন্ত শুরু করে দিল। অথচ নিশিকান্ত দুবে সহ একাধিক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও এথিক্স কমিটির কাছে সেই অভিযোগ পাঠানো হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে দেশের গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার এবং আইনের চোখে সবাই যদি সমান হয় তাহলে বিজেপির সাংসদদের ক্ষেত্রে আলাদা নিয়ম কেন?
আর এই প্রশ্নটাই তুলে ধরেছেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র। কৃষ্ণনগরের এই সাংসদ স্পষ্ট করে বলেছেন আমার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে আমার কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু আমি যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি তার তদন্ত কবে হবে? একজন গণতান্ত্রিক দেশের সাংসদ যখন এই কথাটি স্পষ্ট করে বলেন তখন গণতন্ত্রের বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
স্বাভাবিকভাবে দেশের আম জনতা জানতে চাইছে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে সামান্য এক মানহানি মামলাকে কেন্দ্র করে কোনরকম অপেক্ষা না করে উচ্চ আদালতের দিকে না তাকিয়ে যেভাবে সাংসদ পদ কেড়ে নেওয়া হয়েছিল তাতে আর যাই হোক গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার যে দেশে আর থাকছে না সেটা প্রমাণিত হয়েছে। এখন মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগটা কি তিনি নাকি আদানি বিরোধী কোনো কর্পোরেট মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন তার কাছ থেকেই অর্থ এবং উপহারের বিনিময়ই তিনি সংসদে নানা প্রশ্ন করেন! এখানে আমাদের প্রশ্ন একটাই মহুয়া মৈত্র যদি অন্যের কাছ থেকে অর্থ এবং উপহারের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করেন সেটা অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে আনা উচিত। এটাও তো ঠিক কথা আদানির বিরুদ্ধে মহুয়া মৈত্র যে প্রশ্নগুলো তুলেছেন সেটার তদন্ত হবে না কেন?
আর মহুয়া মৈত্রের মতো একজন সংসদের বাঘিনীকে কেন টার্গেট করেছে বিজেপি, এটাও বড্ড জানতে ইচ্ছা করে। মহুয়া মৈত্রীর মতো একজন শিক্ষিত সংস্কৃতি প্রবণ সাংসদ সংসদে দাঁড়িয়ে যে ভাষায় তিনি কথা বলতে পারেন তাতে আর যাই হোক শাসক বিজেপি যে অস্বস্তিতে থাকে তা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। তবে একটা কথা বলে নেওয়া ভালো স্পিকার ওম বিড়লা মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে এথিক্স কমিটি বসিয়ে দেশের রাজনীতিতে তাকে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক করে দিলেন। আর শাসক বিজেপির চরিত্রকে সবার সামনে আরেকবার খুলে দিলেন।
তবে সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে এথিক্স কমিটি তদন্ত করার যে সিদ্ধান্ত স্পিকার নিয়েছেন তার বিরুদ্ধে কোন মন্তব্য তিনি করেননি। এদিকে নিশিকান্ত দূবে এবং তাঁর আইনজীবীর বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র। ফলে মহুয়া ইসুতে আরো বেশি নাকানি চোবানি খেতে হতে পারে শাসক বিজেপিকে।