আন্তর্জাতিক 

Sri Lanka Crisis:তীব্র গণবিদ্রোহের জেরে প্রেসিডেন্টের পর এবার পদত্যাগ করলেন শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী! কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হলো? নেপথ্যে রহস্য কি? জানতে হলে ক্লিক করুন

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : গত তিন মাস আগে শ্রীলংকা গণবিক্ষোভে হবে উত্তাল হয়েছিল। তারপর বেশ কয়েক মাস সবকিছু ঠিকঠাক ছিল মনে হচ্ছিল শ্রীলংকার রাজনৈতিক সংকট আসতে আসতে কেটে যাচ্ছে। কিন্তু বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে শ্রীলঙ্কাতে আবারও সংকট দেখা দেয় ডিজেল পেট্রোলের। কয়েকদিন আগে সংবাদ মাধ্যমের দৌলতে আমরা জানতে পারি একজন নাগরিক পেট্রোল কিনতে গিয়ে রীতিমতো সেনাবাহিনীর হাতে হেনস্থা হয়েছেন এবং লাথি মেরেছে ওই সেনাবাহিনীর এক কর্মী। এই ঘটনার অব্যবহিত পরেই সমগ্র শ্রীলঙ্কা আবারও গণবিক্ষোভে উত্তাল হয়ে পড়ে।

আজ ৯ই জুলাই শনিবার রীতিমতো হাজার হাজার মানুষ শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো শহরে জড়ো হয় এবং প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ঘিরে ফেলে। এরপর জানা যায় প্রেসিডেন্ট রাজা পক্ষে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন তারপর জনতা সমগ্র প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ দখল করে ফেলে।

Advertisement

প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের পরে পরে ই শনিবার সন্ধ্যা বেলা পদত্যাগের ঘোষণা করলেন শ্রীলংকার নব মনোনীত প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহ। শনিবার এক বিবৃতিতে ইস্তফা দেওয়ার ব্যাপারে ইচ্ছাপ্রকাশের কথা জানান রনিল। তার পরই পদত্যাগ করেন তিনি।

টুইটারে বিক্রমসিংহ জানিয়েছেন, দেশের মানুষের সুরক্ষার কথা ভেবে সর্বদলের সরকার গঠন যাতে করা যায়, সে কারণেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দ্বীপরাষ্ট্রের সঙ্কট কাটাতে শনিবার সর্বদল বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

গত কয়েক মাস ধরেই আর্থিক ভাবে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় গণবিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভের জেরে আগেই প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন বিক্রমসিংহ। কিন্তু তার পরও শ্রীলঙ্কার সঙ্কটময় পরিস্থিতির বদল হয়নি। প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের ইস্তফার দাবি জানিয়েছেন বিরোধী নেতা সাজিত প্রেমদাসা।

অন্য দিকে, শুক্রবার থেকে দ্বীপরাষ্ট্রে বিক্ষোভ নতুন চেহারা নিয়েছে। রাজধানী কলম্বোয় প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের প্রাসাদে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। এর আগেই প্রেসিডেন্টকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়। বাসে, ট্রেনে, গাড়িতে করে দলে দলে মানুষ আসতে থাকেন রাজধানী কলম্বোয়। বিপদ আঁচ করে শুক্রবার রাতেই প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষেকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয় সেনা। প্রবল উৎকণ্ঠায় রাত কাটলেও জনতার ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে সকালে। কার্ফু উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ কলম্বোয় রাজাপক্ষের সরকারি প্রাসাদ ঘিরে ধরেন।কাঁদানে গ্যাসের গোলা ছুড়ে, শূন্যে গুলি ছুড়েও তাঁদের রুখতে ব্যর্থ হয় পুলিশ।

একটি অংশের দাবি, তাতেই আরও উত্তপ্ত হয় জনতা। এক সময় ব্যারিকেড ভেঙে স্রোতের মতো মানুষ ঢুকে পড়তে শুরু করেন রাজাপক্ষের প্রাসাদে।

আসলে শ্রীলঙ্কার ঘটনা সমগ্র বিশ্বের কাছে শিক্ষনীয় বলা যেতে পারে। সংখ্যাগুরু গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে সে দেশে যেভাবে মুসলিম এবং তামিলদের উপরে অত্যাচার করা হয়েছিল সেই তুলনায় সে দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নের কথা চিন্তা করা হয়নি। ফলে সংকট ঘনীভূত হয়েছে। শ্রীলংকার রাষ্ট্রীয় কোষাগরের আয়ের সিংহভাগ উৎস হলো পর্যটন শিল্প লকডাউনের জেরে সেই পর্যটন শিল্পের উপরে প্রচন্ড আঘাত লাগে। তার ফলে আর্থিক দিক দিয়ে শ্রীলঙ্কা অনেকটাই ব্যাগ ফুটে চলে যায়। এদিকে ধর্মীয় প্রচার এবং দুটি সম্প্রদায়কে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে খুব বাড়ছিল উগ্র শ্রীলংকান জাতীয়তাবাদ এবং উগ্র মুসলিম বিরোধিতা ও তামিল বিরোধিতা এদেশের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বাতাবরণকে ভেঙে তছনছ করে দিয়েছিল যার আসু পরিবর্তনে হল আজকের এই সংকট।

মনে করা হচ্ছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর সর্বদলীয় সরকার গঠিত হবে। কিন্তু বিগত সরকার যেভাবে দেশের আর্থিক উন্নয়ন কে ব্যাহত করেছে আর্থিক মেরুদন্ড ভেঙে দিয়েছে তারপর কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে শ্রীলংকার পরবর্তী সরকার সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে বিশ্ববাসী।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ