কলকাতা 

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে খসড়া সিলেবাসে পরিবর্তন চাইছেন কলেজ অধ্যাপকরা

শেয়ার করুন
  • 3
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

শেখ আবদুল হামিদ

মাঝে একটা বছরের ব্যাবধান। তারপরে আবার পরিবর্তন আসছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসে। নতুন সিলেবাস বিধি নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। ‘চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম’ বা সিবিসিএসবিধিতে যে খসড়া সিলেবাস তৈরি হয়েছে, সেখানে কোনো সংশোধনী থাকলে, কলেজগুলিকে তাও জানাতে বলেছে সিলেবাস কমিটি। ৩০ এপ্রিল শেষ সময়সীমা হওয়ায়, কলেজগুলি যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে মাঠে নেমেছে।
জানা যাচ্ছে, ২৮ এপ্রিল, শনিবার একাধিক কলেজের অধ্যাপক ও অধ্যাপিকারা একটি বৈঠক করেন। পর্যালোচনা করেন নতুন খসড়া সিলেবাস নিয়ে। সিলেবাসে বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে ‘সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন’ বিভাগে কিছু সংশোধনী আনা নিয়ে একাধিক পরামর্শ উঠে এসেছে। ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনায় আগ্রহী হওয়ার সাথে সাথে কাজের প্রতিয়োগীতার বাজারে নিজেকেও সামিল করতে পারবে- এমন সিলেবাস চান তাঁরা। যাদবপুর-বিজয়গড় জ্যোতিষ রায় কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত, ‘সাংবাদিকতার মতো প্রফেশনাল কোর্সে সকলেই অনেক স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হতে আসে। কিন্তু,আমাদের সিলেবাসে হাতে কলমে কাজ শেখানোর সুযোগ কম থাকায় আমরাও বেশি কিছু করতে পারি না। তাই নতুন করে ভাবার সময় এসেছে আমাদের।’
৩০ এপ্রিল, সোমবার। শবেবরাতের সরকারি ছুটি। তাই বাধ্য হয়ে, নতুন সিলেবাসে কিছু ‘সংশোধনী প্রস্তাব’ একত্রিত করে মেল মারফত পাঠাচ্ছেন তা বিভিন্ন কলেজের অধ্যাপকেরা।’প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বাস্তব সম্মত সিলেবাস দরকার, তাই আমাদের এই প্রয়াস’ বলে জানিয়েছেন নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যাপিকা সামিমা ইয়াসমিন।
কি থাকছে এই সিবিসিএসের নয়া বিধিতে?
শিক্ষা বিশারদদের মতে, এই বিধিতে শুধু অনার্সের নম্বরের ভিত্তিতে প্রথম শ্রেণী বা ফল বিচার করা হবে না। অনার্স এবং পাশের নম্বর যোগ করে তার গড় বের করে ফলপ্রকাশ করা হবে।তবে আগের মতো আরমার্কশিটে প্রথম শ্রেণী বলে কিছু উল্লেখ থাকবে না। বদলে দেওয়া হবে গ্রেড পয়েন্ট। উল্লেখ্য, আগামী জুলাই থেকেই আর্টস এবং সায়েন্সে সিবিসিএস চালু হয়ে যাচ্ছে। গত বছর কমার্সে এটি চালু হয়েছে। শুধু তাই নয়, এইবিধিতে রয়েছে একাধিক নতুন ধারাও। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ইউজিসি’র রূপরেখা মেনেই বিশ্ববিদ্যালয় তাদের এই বিধি তৈরি করেছে। আগামী সিন্ডিকেট বৈঠকে তা পেশ হওয়ার কথা।
সিবিসিএস অনুযায়ী, প্রত্যেক পরীক্ষার পর যে মার্কশিট দেওয়া হবে, তাতে গ্রেড হিসেবে নম্বর থাকবে। সেইসাথে, অনার্স এবং জেনারেলের মোট নম্বরের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতদিন অনার্স পড়ুয়ারা১৬০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতেন। তার মধ্যে অবশ্য জেনারেলের নম্বরও যুক্ত ছিল। কিন্তু সিবিসিএসের অধীনে সেই নম্বর বাড়িয়ে ২৬০০ করা হয়েছে। এর মধ্যে অনার্সে ১৪০০, ডিসিপ্লিন স্পেসিফিক বিষয়ের জন্য৪০০, স্কিল এনহ্যান্সমেন্ট পেপারে থাকবে ২০০, জেনারেল ইলেক্টিভের জন্য ৪০০ এবং আবশ্যিক ভাষা ও পরিবেশ বিদ্যা মিলিয়ে ২০০ নম্বর থাকবে। সব মিলিয়ে ২৬০০। অন্যদিকে, যাঁরা শুধু জেনারেল নিয়ে পড়বেন, তাঁদের সর্বমোট নম্বর ১৪০০ থেকে বেড়ে ২২০০ হয়েছে। এর মধ্যে জেনারেল কোর বিষয়ে ১২০০, ডিসিপ্লিন স্পেসিফিক বিষয়ে ৪০০, স্কিল এনহ্যান্সমেন্ট পেপারে ৪০০ এবং আবশ্যিক ভাষা ও পরিবেশ বিদ্যা মিলিয়ে২০০ নম্বর থাকবে। শিক্ষকদের বক্তব্য, নম্বরের সম্প্রসারণ করা হয়েছে। আরও একটি মহলের মতে, এতে ছাত্রছাত্রীদের পড়ার বোঝা বাড়বে।
আরও একটি নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তা হল, অনার্স কিংবা জেনারেল বিষয় নিয়ে পড়লেও তাতে বিশেষ পত্র থাকবে। ধরা যাক, কেউ ফিজিক্সে অনার্স পড়ছেন। তাঁর মোট অনার্সের পত্র আটটি। তার মধ্যেকয়েকটি নির্দিষ্ট বিষয় থাকবে, যা সবাইকেই পড়তে হবে। কিন্তু বাকি স্পেশাল পেপারের মধ্যে ডিসিপ্লিন স্পেসিফিক এবং স্কিল এনহ্যান্সমেন্ট-এর উপর পেপার থাকবে। এগুলির মধ্যে অবশ্য অপশন থাকবে। পড়ুয়ারাতাঁদের পছন্দের বিষয় বেছে নিতে পারবেন।

Advertisement

শেয়ার করুন
  • 3
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

4 + 20 =