তোমরাও লেখো, আমরা তোমাদের লেখা পড়বো–গণিত দিবসে ছাত্রদের উদ্দেশে শিক্ষাবিদ বাসব চৌধুরী
বিশেষ প্রতিবেদন : বিস্ময়কর গণিত প্রতিভা শ্রীনিবাস রামানুজনের ১৩৭-তম জন্মবর্ষ উপলক্ষে অনুসন্ধান আয়োজন করেছিল এক সপ্তাহ ব্যাপী বিশেষ কর্মসূচি। চতুর্থ থেকে নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ছিল বিশেষ গণিত অন্বেষা পরীক্ষা। বাইশ ডিসেম্বর রামানুজনের জন্মদিন জাতীয় গণিত দিবসে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মানে পৌঁছে যাওয়া ১৬ জন ছাত্র-ছাত্রীকে সম্মাননা জানানো হয় অনলাইনে। এরপর শ্রেণিমতো তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে সার্টিফিকেট ও বিশেষ উপহার, জানান আয়োজক সংস্থা অনুসন্ধান সোসাইটির সম্পাদক ও বিশিষ্ট শিক্ষক গৌরাঙ্গ সরখেল।
এদিন স্মারক বক্তৃতা দেন গণিতের অধ্যাপক ও বিশিষ্ট প্রশাসক ডঃ পার্থ কর্মকার। শূন্য থেকে অসীম শ্রীনিবাস রামানুজন শীর্ষক বক্তৃতায় তিনি তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেন। তিনি বলে, বিশ্বের তাবড় গণিতবিদদের সঙ্গে তাঁর গণিত আলোচনার এক একটি দিক ও তার গভীরতা আজও বিস্ময়কর হয়ে রয়ে গিয়েছে।
এদিন দ্বিতীয় পর্বে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল ‘গণিত ও বিজ্ঞান ভাবনা : শিশু মনে’। আলোচনার সূত্রপাত করতে গিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটির অবসরপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক বাসব চৌধুরী বলেন, গণিত কেবল একটি বিষয় নয় গণিতকে অনুভব করতে হয়। গণিত মানে আসলে অনুভূতি, একে ভাবতে হয়, মানসপটে এর দৃশ্য তুলে ধরতে হয়। অনুসন্ধান এর পক্ষ থেকে জাতীয় গণিত দিবস উপলক্ষে এদিন চার পৃষ্ঠার “গণিত শেখা শিখি” নামক সুদৃশ্য ব্রসিয়োর প্রকাশ করা হয়। বরিষ্ঠ গণিত শিক্ষক ও গণিতবিদদের লেখায় ভরপুর এই সুন্দর ব্রসিয়োর প্রকাশ করতে গিয়ে অধ্যাপক বাসব চৌধুরী বলেন, এর পরের বারের ম্যাগাজিন ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের লেখায় দেখতে চাই। তোমরাও লেখালিখিতে এগিয়ে এসো। এবার আমাদের পড়ার পালা। আমরা খুব খুশি হবো তোমাদের লেখা পড়ে।
শিশু-কিশোরদের বিজ্ঞান ও গণিত ভাবনা প্রসঙ্গে বিজ্ঞানের জনপ্রিয় লেখক ও আকাশবাণীর বিজ্ঞান প্রযোজক ডঃ মানস প্রতিম দাস বলেন, এজন্য সব থেকে যেটা বেশি প্রয়োজন, তা হল গণিতকে দেখতে শেখা, ভাবতে শেখা। বেশ কিছু উদাহরণও তিনি তুলে ধরেন। বিজ্ঞান পাঠ প্রসঙ্গে তিনি বলেন বিদ্যালয় শিক্ষা আজ দ্রুত আকর্ষণ হারাচ্ছে। তার মূল কারণ, শিশু ও কিশোরমতি পড়ুয়াদের চাপ পড়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বিষয়টি ভালো লাগানোর জন্য যে সমস্ত ব্যবস্থা প্রয়োজন তা ভাবা হচ্ছে না। পরীক্ষা, মার্কস ইত্যাদির চাপে বিষয় তাদের কাছে আর শিখে ওটা হচ্ছে না। প্রথিতযশা বিজ্ঞানীদের অনেকেই ক্লাস পরীক্ষায় অনেক অনেক নম্বর পাননি, তার যথেষ্ট উদাহরণ আছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভাবনার দিন এসে গিয়েছে।
এদিনের আলোচনায় বক্তব্য রাখেন ওয়েস্ট বেঙ্গল বায়ো- ডাইভার্সিটির অবসরপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ডঃ অশোক কান্তি সান্যাল, রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ের সভাপতি বিশিষ্ট গণিতবিদ ডঃ অমরেন্দ্র মহাপাত্র এবং সকল বক্তব্যের সারসংক্ষেপ বলেন বিশিষ্ট কৃষি বিজ্ঞানী ভারতীয় কৃষিবিজ্ঞান সংস্থার প্রিন্সিপাল সায়েন্টিস্ট অনুসন্ধান সোসাইটির চিফ অ্যাডভাইজার ডঃ মতিয়ার রহমান খান। এদিন সভায় পৌরহিত্য করেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কারিগরি শিক্ষা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত ডাইরেক্টর ডঃ অমলেন্দু বসু। সভা সঞ্চালনা করেন নায়ীমুল হক ও গৌরাঙ্গ সরখেল।