বেলডাঙ্গায় সাম্প্রদায়িক অশান্তির পেছনে প্রশাসনের ব্যর্থতা প্রকটভাবে ধরা পড়ছে!
বিশেষ প্রতিনিধি : শনিবার রাতে মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙায় কাত্তিক লড়াই পুজো মন্ডপে বাইরে আলোকসজ্জায় একটু বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের আবেগে আঘাত দেওয়া হয়েছে এই অভিযোগে গোষ্ঠী সংঘর্ষ হয়। প্রথমের দিকে প্রতিবাদ করতে আসা বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হন এবং তাদের উপরে পরিকল্পিত হামলা করা হয় বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ। এরপরই ঘটনাস্থল কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।বেলডাঙার যত্রতত্র গন্ডগোল শুরু হয়। ভাঙচুর চালানো হয় দোকান এবং বাড়িঘরে।
অগ্নিসংযোগ ঘটানো হয় বেশ কিছু জায়গায়। ধারালো অস্ত্র হাতে দাপাদাপি করতে দেখা গিয়েছে বেশ কিছু ব্যক্তিকে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, মুহুর্মুহু বোমাবাজি হয়েছে। তাতে বেশ কয়েক জন আহতও হয়েছেন। পাশাপাশি রাত থেকে বেশ কয়েক জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
বেলডাঙার বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ টহল দিচ্ছে। দু’পক্ষকে সংযত থাকার বার্তা দেন জেলা পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। আমরা দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করছি। সবাইকে অনুরোধ করব, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশকে সাহায্য করুন। উভয় পক্ষের কাছে আবেদন, আপনারা কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।’’
বিক্ষোভের জেরে বেলডাঙা স্টেশনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল ভাগীরথী এক্সপ্রেস। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব। তিনি মাইকিং করে দুই পক্ষকে সতর্ক করেন। রাত থেকে বেলডাঙার বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের বেশ কয়েক জন আহত বলেও পুলিশ সূত্রে খবর। রবিবার সকাল থেকে অবশ্য থমথমে এলাকা। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের প্রশাসন কি ইচ্ছা করে এই ধরনের সহিংসতাকে করতে দিচ্ছে? তা না হলে গতকালের যে ঘটনা তাতে গোয়েন্দা ব্যর্থতা প্রকট হয়ে ধরা পড়েছে! বেলডাঙ্গা এলাকাটি এমনিতেই স্পর্শকাতর এলাকা বলে পরিচিত।! গত লোকসভা নির্বাচনের সময় এই এলাকাতে সহিংসতা হয়েছিল এবং তা নিয়ে কম বিতর্ক তৈরি হয়নি। এমনকি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রীতিমতো মুসলিম সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে হুমকিও দিয়েছিল। তারই প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবিরও পাল্টা হুমকি দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি ওই এলাকার একজন সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন তারপর কি হয়েছে তা আর জানা যায়নি! আসলে এই ধরনের কাজে যারা যুক্ত থাকেন বা যারা এই ধরনের প্রচার করেন বা যারা বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ তৈরি করার চেষ্টা করেন তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়াটা যেকোনো গণতান্ত্রিক প্রশাসনের প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব!