দেশ 

মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খন্ড নির্বাচনে রাহুলসহ ইন্ডিয়া জোটের নেতাদের ভয় পাচ্ছে বিজেপি!

শেয়ার করুন

সেখ ইবাদুল ইসলাম: গতকাল ১৬ ই নভেম্বর রাহুল গান্ধী মহারাষ্ট্রের অমরাবতীতে প্রচারে গিয়েছিলেন। নির্বাচনী প্রচারে যাওয়ার সময় তিনি যে হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছিলেন হঠাৎই সেই হেলিকপ্টার তল্লাশি করে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা। ঠিক তার আগের দিন ১৫ ই নভেম্বর ঝাড়খন্ডে প্রচারে এসেছিলেন রাহুল গান্ধী দেওঘর বিমানবন্দরে রাহুল গান্ধীর হেলিকপ্টার তিন ঘন্টা পর ওড়ার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। এর ফলে রাহুল গান্ধীকে অনেকটা পরে নির্বাচনী জনসভায় পৌঁছাতে হয়। অন্যদিকে দেশের প্রধানমন্ত্রী স্বরাগ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমনকি কেন্দ্রীয় একাধিক মন্ত্রী যথাসময়ে হেলিকপ্টারে করে তারা প্রচারে যাচ্ছেন এবং তাদের কোথাও বাধা দেয়া হচ্ছে না বলে বিরোধীদের অভিযোগ।

এর আগে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের স্ত্রী কল্পনা সোরেনের হেলিকপ্টার কে লাতেহার যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি গত ১১ নভেম্বর। গত ১১ ই নভেম্বর ও ১২ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা উদ্ধব ঠাকরের হেলিকপ্টারে প্রথম তল্লাশি চালানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। উদ্ধব ঠাকরের হেলিকপ্টারের তল্লাশি চালানো হয়েছে এই ভিডিও শিবসেনার পক্ষ থেকে ভাইরাল করানোর পরেই নির্বাচন কমিশন নড়েচড়ে বসে। ওই ভাইরাল ভিডিওতে উদ্ভবকে বলতে শোনা যায়, নির্বাচনী আধিকারিক কে লক্ষ্য করে, আমার ব্যাগ তল্লাশি করছেন আমার কোন অভিযোগ নেই কিন্তু আপনি কি নরেন্দ্র মোদির ব্যাগ তল্লাশি করতে পারবেন আপনি কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যাক তল্লাশি করতে পারবেন আপনি কি অমিত স্যার ব্যর্থ তল্লাশি করতে পারবেন আপনি কি দেবেন্দ্র ফরনবিশ এর ব্যাগ তল্লাশি করতে পারবেন একনাথ শিন্দের পারবেন অজিত পাওয়ারের পারবেন? এই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পরে কার্যত নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।

Advertisement

এই ঘটনার পরেই দেশের ডাবর তাবড় রাজনৈতিক ভাষ্যকার রা বলতে শুরু করেছিলেন এবার কমিশন তার নিজের অস্তিত্ব এবং সম্মান বজায় রাখতে সরকার দলের বেশ কিছু নেতার ব্যাগও সার্চ করা হবে। এরপরই দেখা গেল নির্বাচনী আধিকারিকদের কোন ছবি বা আধিকারিকদের প্রকাশ্যে কারু হেলিকপ্টার তল্লাশি করছে এই ছবি বাজারে আসেনি কিন্তু যেটা এসেছে সেটা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় কখনো এখানে কখনো দেবেন্দ্র এর, কখনো অজিত পাওয়ারের বা কখনো নীতিন গডগারি হেলিকপ্টার ও ব্যাগ তল্লাশি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটেই দাঁড়িয়ে শনিবারে রাহুল গান্ধীর হেলিকপ্টার তল্লাশি রাজনৈতিক মহলে আলাদা একটা বার্তা দিতে শুরু করেছে।

কল্পনাকে লাতেহার হেলিকপ্টারে না যাওয়ার অনুমতি দিয়ে যেভাবে ঝাড়খণ্ডে নির্বাচন কমিশন বিজেপির প্রচারকেই ভোতা করে দিল এবং নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতাকে সাধারণ মানুষের কাছে আরও বেশি করে প্রচার করে দিল যে নির্বাচন কমিশন শাসক দলের হয়ে কাজ করছে সেটা বিজেপির পক্ষে ঝাড়খন্ডে ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে গতকাল রাহুল গান্ধীর হেলিকপ্টার তল্লাশি করে মহারাষ্ট্রের সাধারণ নাগরিকদের কাছে বার্তা দেওয়া হল যে নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র বিরোধী নেতাদের নিশানা করেছে। এর ফলে বিজেপির নির্বাচনে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে।

কারন সাধারণ মানুষের মধ্যে যদি একটা বদ্ধমূল ধারণা হয়ে যায়, যে নির্বাচন কমিশন অহেতুক ভাবে বিরোধী নেতাদের হেনস্থা করছে তাহলে তার পরিণতি ভোট বাক্সে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখন দেখার বিষয় তেইশে নভেম্বর কি ফল আমাদের সামনে আসে? সাধারণ মানুষ কল্পনা সোরেন রাহুল গান্ধী উদ্ধব ঠাকরেদের প্রতি যে নির্বাচন কমিশনের আচরণ তাকে জনগণ কিভাবে নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়!


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ