আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যালঘু স্টাটাস ফিরে পেল? কী নির্দেশ দিলেন প্রধান বিচারপতি সহ সাত বিচারপতি!
বাংলার জনরব ডেস্ক : আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়কে সংখ্যালঘু বিশ্ববিদ্যালয়ের তকমা দেওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করলেন দেশের চারজন বিচারপতি। এই চারজন বিচারপতি হলেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, পরবর্তী প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা, বিচারপতি মনোজ মিশ্র। সংখ্যালঘু তকমার বিরোধিতা করেছেন ৩ বিচারপতি বিচারপতি সূর্যকান্ত বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি সতীশ চন্দ্র। এলাহাবাদ হাইকোর্ট ১৯৬৭ সালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু স্টাটাস বাতিল করেছিল সেই মামলায় এতদিন ধরে সাতজন বিচারপতি কে নিয়ে গঠিত সাংবিধানিক বেঞ্চে চলছিল। যদিও প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৯৮১ সালে আইন সংশোধনের মাধ্যমে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংখ্যালঘুদের জন্য বিশেষ সংরক্ষণ চালু করেছিলেন। আবার ২০০৬ সালে এই আইনটিকেও খারিজ করে দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
প্রধান বিচারপতি বি-ওয়াই চন্দ্রচূড়ের অবসর নেওয়ার আগে এই সংক্রান্ত সাংবিধানিক বেঞ্চের রায় ভারতের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট শুরুর প্রথমেই এই সংক্রান্ত মামলার রায় দিতে গিয়ে সাদ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের ৪ সদস্য এলাহাবাদ হাইকোর্টের সংখ্যালঘু স্টাটাস সংক্রান্ত রায়কে বাতিল করে দেন। এই সংক্রান্ত রায়টি সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় নিজে লেখেন।
সাংবিধানিক বেঞ্চের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের রায়টি লেখেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সহমত পোষণ করে বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা, বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র। অন্য দিকে, বিরুদ্ধমত পোষণ করে স্বতন্ত্র রায় দেন বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি সতীশ চন্দ্র। সংখ্যাগরিষ্ঠের মতানুসারে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তকমা ফেরার পথ প্রশস্ত হলেও এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নতুন বেঞ্চ নেবে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংখ্যালঘু তকমা পেলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকে। যদিও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ সরকারের সংরক্ষণ নীতি মেনে চলে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ স্কুল-কলেজের পড়ুয়ার জন্য সেখানে ৫০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকে।
মোদী সরকার প্রথম থেকেই আলিগড় এবং দিল্লি জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’ তকমা দেওয়ার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে রাজনৈতিক বিরোধিতার মুখে পড়লেও মোদী সরকারের যুক্তি হল, এই তকমা অসাংবিধানিক। সংসদের আইনের মাধ্যমে যে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে, পরে তাকে ধর্মের ভিত্তিতে বিশেষ তকমা দেওয়া দেশের ধর্মনিরপেক্ষ নীতির বিরুদ্ধে। তা ছাড়া, সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অর্ধেক আসন সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত থাকায় তফসিলি জাতি, উপজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির পড়ুয়াদের বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। কারণ, সেখানে জাতপাতের ভিত্তিতে সংরক্ষণ থাকে না। এর আগে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের আইনজীবী তথা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা তাঁর সওয়ালে বলেন, ‘‘১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্-স্বাধীনতা যুগেও জাতীয় স্তরের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল। তাই তাকে কেবলমাত্র সংখ্যালঘুদের জন্য বলা যেতে পারে না।’’