আন্তর্জাতিক 

হিজবুল্লাহর আক্রমণে নাজেহাল ইসরাইল, নেতানিয়াহুর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ফানুস ভেঙে পড়লো!

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : ইসরাইল ভাবছিল যে এবার তারা লেবাননের হিজবুল্লাহকে খতম করে দিয়েছে। একের পর এক আমার নেতা থেকে শুরু করে হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে বোমা হামলা চালিয়ে মেরে দেওয়ার পর ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যতখানি আশ্বস্ত বোধ করেছিলেন সেই আশ্বস্ত বোধ এখন আর থাকছে না। ইহুদি মিডিয়ার চাপে হয়তো আমরা মনে করছি যে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল একতরফা ভাবে যুদ্ধ করে যাচ্ছে প্রকৃতপক্ষে তা হচ্ছে না বরং ইসরাইলকে যদি আমেরিকার সাহায্য বন্ধ করে দেয় তাহলে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ইসরাইল বাধ্য হবে আত্মসমর্পণ করতে। বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার রক্ষার অন্যতম স্বঘোষিত অভিভাবক আমেরিকার দ্বিচারিতার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে সহিংসতা জারি রয়েছে।

কিন্তু আমেরিকা যে সহিংসতাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে একদিন সেই সহিংসতারই শিকার হতে হবে আমেরিকাকে এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। আমেরিকার রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন মধ্যপ্রাচ্যে হিংসা থামাতে ব্যর্থ হয়েছেন। ইসরাইলের মত একটা রাষ্ট্রকে সহিংসতার যে ছাড় আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট দিয়েছেন তার ইতিহাসে তা স্মরণীয় হয়ে থেকে যাবে। হামাস বলুন কিংবা হিজবুল্লা বলুন এদের কোনটারই বিরুদ্ধে সেই অর্থে প্রতিরোধ করতে পারেনি ইসরাইল। শুধুমাত্র এই দুই সংগঠনের কয়েকজন নেতাকে খুন করা ছাড়া কোন সাফল্য পায়নি নেতানিয়াহু। তার প্রমাণ মিলল গতকাল শনিবার।

Advertisement

শনিবার দুসরা নভেম্বর যেভাবে একের পর এক হামলায় বিপর্যস্ত হল ইসরাইল তাতে এটা প্রমাণিত হয়েছে তাদের যে প্রতিরক্ষা শক্তির দাবি এতদিন ধরে করে আসছিল তার সবটাই ছিল ভ্রান্ত এবং মিথ্যায় পরিপূর্ণ।

জানা গিয়েছে,অন্তত ১৩০টি রকেট ইসরাইলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে শনিবার। সঙ্গে ছিল ড্রোন হামলাও। ইসরাইলের সেনাবাহিনীকে উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে সে দেশের সংবাদমাধ্যম টাইম্‌‌স অফ ইসরায়েল। রকেটগুলি অধিকাংশই উড়ে এসেছে লেবাননের দিক থেকে।

রকেট এবং ড্রোন হামলায় শনিবার উত্তর ইসরাইলে জখম হয়েছেন অন্তত ১৯ জন। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দাবি, আহতের সংখ্যা আরও বেশি। মধ্য ইসরাইলের টিরা শহরে একটি বাড়ির উপর রকেট গিয়ে পড়ে। রাজধানী তেল আভিভ থেকে ২৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত এই শহরে বেশ কয়েক জন জখম হন। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চার জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ইসরাইলি বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, রকেট ছাড়াও শনিবার ১০টি বিস্ফোরকবাহী ড্রোন পাঠানো হয়েছিল তাদের দিকে। তার মধ্যে লেবানন থেকে উড়ে এসেছিল ছ’টি এবং ইরাক থেকে এসেছিল তিনটি ড্রোন। একটি ড্রোনের উৎস জানা যায়নি। এগুলির মধ্যে সাতটি ড্রোনই আটকে দেয় ইসরাইলি সেনা। তবে টিরা শহরে রকেট হামলা ঠেকানো গেল না কেন, কোথায় প্রযুক্তি ব্যর্থ হল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

টিরা শহরে রকেট হামলা এবং ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির ভিডিয়ো ইসরাইলের বিদেশ মন্ত্রক সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, হামলার অভিঘাতে বাড়িটি ভেঙে পড়েছে। ভিতর থেকে ধোঁয়া এবং আগুন বেরোচ্ছে। উদ্ধারকারী দল ছোটাছুটি করছে ঘটনাস্থলে।

লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজ়বুল্লা এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে, ওই গোষ্ঠীকে খতম না করা পর্যন্ত ইসরাইলের বাহিনী বিশ্রাম নেবে না।

২০২৩ সালে প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হয় ইসরাইলের। সেই যুদ্ধ এখনও চলছে। প্রথম থেকেই যুদ্ধে হামাসকে সমর্থন করেছে লেবাননের গোষ্ঠী হিজ়বুল্লা। তাই ইসরাইলও তার জবাব দিয়েছে। যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে লেবানন-সহ পশ্চিম এশিয়ার একাধিক দেশে।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ