দেশ 

দেশ থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা তুলে দেওয়ার সুপারিশ করলো জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন!

শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিনিধি : মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খন্ড বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ঝুলি থেকে বিড়ালটি বের করার আবারো চেষ্টা করল। এবার সমগ্র দেশ থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছে জাতীয় শিক্ষা অধিকার সুরক্ষা কমিশন বা এনসিপিসিআর।

আজ শনিবার এনসিপি সিআর-এ র চেয়ারপারসন প্রিয়াঙ্কা কানুনগো সব সব রাজ্যের মুখ্য সচিবদের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে স্পষ্ট করে বলেছেন মাদ্রাসা শিক্ষায় টাকা দেওয়া বন্ধ করুন। যেসব অমুসলিম ছাত্র-ছাত্রী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছে তাদের অবিলম্বে সাধারণ স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করা হোক।

Advertisement

তিনি ওই চিঠিতে এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে সংবিধান বিরোধী এবং শিক্ষার আইনবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে ভারতের সংবিধান যেখানে সংখ্যালঘুদের শিক্ষা সংস্কৃতি প্রসারে বিশেষ ব্যবস্থায় রেখেছে সেখানে শুধুমাত্র দেশের একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় শিক্ষার উপরে নিষেধাজ্ঞ কেন জারি করার চেষ্টা করছে এনসিপিসিআর এর বকলমে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। মনে করা হচ্ছে মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খন্ড বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ধরনের বিষয়টিকে সামনে এনে ভোট মেরুকরণের চেষ্টা করতে চাইছে বিজেপি দল।

এন সি পি সি আর চেয়ারম্যান আরো বলেছেন,মাদ্রাসা শিক্ষা সংবিধান এবং শিক্ষার অধিকার আইনের পরিপন্থী। আইনে ভারতে শিক্ষার মাধ্যমে সাম্য, সামাজিক ন্যায় এবং গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করার কথা বলেছে। মাদ্রাসা শিক্ষার সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই। নাগরিকের মৌলিক অধিকার আর সংখ্যালঘুর অধিকারের মধ্যে ফারাক আছে। কানুনগোর যুক্তি, শিক্ষার অধিকার আইনে রাষ্ট্রকেই প্রতিটি শিশুর মৌলিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। সেখানে সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আলাদা করে থাকতে পারে না।

এনসিপিসিআর-এর চেয়ারম্যানের এমন সুপারিশে অনেকেই বিস্মিত। সংবিধানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের শিক্ষা বিষয়ে অধিকারের যে বিশেষ অনুচ্ছেদ রয়েছে তার অধীনে শুধু মাদ্রাসাই নয়, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ এবং জৈন সম্প্রদায় পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও আছে। শিশু অধিকার কমিশনের চেয়ারপারসন শুধু মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধের সুপারিশ করায় সরাসরি বিজেপির এজেন্ডা নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।

আসলে এইসব কমিশন গুলির আড়ালে বিজেপি তার উদ্দেশ্যকে জনতার কাছে পৌঁছে দিতে চাইছে। লক্ষ্য একটাই বিভেদের রাজনীতি করে সমাজকে দুটুকরো করে ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখা। ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের ধাক্কা খাওয়ার পর বিজেপির এখন লক্ষ্য হচ্ছে যেকোনো ভাবেই ক্ষমতায় টিকে থাকা তাই তাদেরকে মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খন্ড জিততে হবে। হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনের আগে হযরত মুহাম্মদ সা. বিরুদ্ধে এক হিন্দুত্ববাদী নেতা কে দিয়ে কুরুচি কর মন্তব্য করিয়ে হিন্দু ভোটকে মেরুকরণের চেষ্টা করা হয়েছিল অন্যদিকে মহারাষ্ট্র ঝাড়খন্ড বিধানসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। এন সি পি সি আর এর এই ধরনের সুপারিশ করার নেপথ্যে যে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের পুরোপুরি সবুজ সংকেত রয়েছে তার নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ