আন্তর্জাতিক 

ইসরাইলের উপরে ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইরান, পাল্টা হুশিয়ারি ইসরাইলের! ইরান কী পারবে ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে?

শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিনিধি : এ কোন সভ্য সমাজ। একের পর এক রাষ্ট্র নায়কদের হত্যা করার পরেও নীরব ছিল আমেরিকা নিরব ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি লেবাননের হিজবুল্লার নেতা নাসরুল্লাহ কে হামলা চালিয়ে মেরে দেওয়ার পরেও কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি আমেরিকা কিংবা যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু গতকাল রাতে ইরান যখন ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ঠিক তখনই রে রে করে তেড়ে এলো আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি যে বিঘ্নিত হবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

প্যালেস্টাইনের নিরীহ জনতার উপরে যেভাবে প্রায় এক বছর ধরে টনটন বোমা ফেলে সাধারণ নাগরিককে খুন করেছে ইসরাইল সেই সময় আমেরিকা ফ্রান্স এমনকি যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। কেন ইসরাইল কে নিরস্ত করা গেল না সেই নিয়ে কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে চাইছেন না বাইডেন কিংবা যুক্তরাষ্ট্র। অথচ মজলুম নাগরিক যখন ঘুরে দাঁড়িয়ে আক্রমণ করতে চাইছে তখন তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছে আমেরিকা ও যুক্তরাষ্ট্র।

Advertisement

ইরান হামলার পরে মঙ্গলবার রাতেই মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন নেতানিয়াহু। সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের বলেছেন, ‘‘ইরান হামলা করে ঠিক কাজ করেনি। এর ফল ভুগতে হবে তাদের।’’ ইসরাইলি সেনা জানিয়েছে, মঙ্গলবার ইরান পর পর ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। যদিও সেই হামলা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। ইরানি হামলায় এখনও পর্যন্ত তেমন ক্ষতির কথা জানায়নি ইসরাইল। ইরান হামলার নিন্দা করে ইসরাইলের পাশে দাঁড়াল আমেরিকা। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, ইসরাইলকে সম্পূর্ণ সমর্থন করা হবে। আমেরিকা সেনা সাহায্য করবে ইসরাইলকে। তবে থেমে নেই ইরানও। নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারির পর বুধবার ইরানি সেনা জবাবে জানিয়েছে, ইসরাইল যদি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ নেয়, তবে পাল্টা হামলা চালানো হবে।

গাজ়ায় হামলার বর্ষপূর্তির ঠিক আগেই লেবাননে ‘গ্রাউন্ড অপারেশন’ শুরু করেছে ইসরাইলি সেনা। মঙ্গলবার ইসরাইলি সেনার ট্যাঙ্ক বহর দক্ষিণ লেবাননে অনুপ্রবেশের পর প্রত্যাঘাত শুরু করে ইরান! মঙ্গলবার রাতে ইসরাইলের রাজধানী তেল আভিবকে নিশানা করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে ইরান সেনা। এই হামলার ঘটনার পরই দেশের নাগরিককে সতর্ক করেছে ইসরাইল সরকার।

গত ৭ অক্টোবর গাজ়া ভূখণ্ড থেকে স্বাধীনতাপন্থী প্যালেস্টাইনি সংগঠন হামাস হামলা চালিয়েছিল গাজ়ায়। তার পর একে একে লেবাননের শিয়া সশস্ত্র সংগঠন হিজ়বুল্লা এবং ইয়েমেনের বিদ্রোহী হুথি গোষ্ঠী তেল আভিবের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। কিন্তু এই প্রথম বার পশ্চিম এশিয়ায় কোনও রাষ্ট্রশক্তি সরাসরি ইসরাইলকে নিশানা করল।

মনে করা হচ্ছে আগামী দিনে এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হবে। আর এর ফলে মধ্যপ্রাচ্য সহ বিশ্বজুড়ে সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। মধ্যপ্রাচ্যের এই পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী আমেরিকা এবং তার সঙ্গীরা। জাতিসংঘকে যেভাবে অকেজো করে দিয়ে আমেরিকার ইসরাইলকে মদদ দিচ্ছে তা এক কথায় অপরাধ বলা যেতে পারে।

এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ইরান কি পারবে ইসরাইলের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ করতে? নাকি লেবাননের মতই পরিণতি হতে পারে ইরানের! যদিও ইরান প্রায় কয়েক দশক পর এই ধরনের যুদ্ধে অবতীর্ণ হচ্ছে এর আগে ইরাকের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ করলেও সেটা ছিল একপ্রকার সম্প্রদায়গত যুদ্ধ এই প্রথম অন্য রাষ্ট্রের প্রতি আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে যুদ্ধ করতে যাচ্ছে ইরান! কিন্তু এই যুদ্ধে যদি ইরান জয়লাভ করতে না পারুক যদি দীর্ঘস্থায়ী করতে পারে যুদ্ধকে তাহলে কিন্তু ইসরাইলের পরিণতি খুব খারাপ হবে বলে বিশ্ব রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা মনে করছেন!


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ