ডাক সেবক নিয়োগে মাদ্রাসা বোর্ড থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীদের আবেদন পত্র গ্রহণ না করে কেন্দ্র সংবিধান বিরোধী কাজ করেছে এবং রাজ্যের ঘোষিত সংখ্যালঘু দরদী মুখ্যমন্ত্রী নিরব কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কংগ্রেস নেতা সরদার আমজাদ আলি
বুলবুল চৌধুরি : রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় ডাক সেবক নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র সরকার । সেই মতে এই রাজ্যে ডাক সেবক নিয়োগ করার জন্য বিঞ্জপ্তি দেওয়া হয় । এতে মাধ্যমিক কিংবা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা আছে এমন প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবে বলে ডাক বিভাগ বিঞ্জপ্তিতে জানায় । মাদ্রাসা বোর্ড থেকে পাশ হাই মাদ্রাসা ডিগ্রিধারীদের এই রাজ্যে মাধ্যমিক শিক্ষাগত যোগ্যতার স্বীকৃতি দেওয়া হয় । কিন্ত দেখা গেল মাদ্রাসা থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা অন লাইনে আবেদন করতে গিয়ে সেই আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে না । এরপর বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় এই রাজ্যের এসআইও নামে এক মুসলিম ছাত্র সংগঠন । কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেয় , হাইমাদ্রাসা পাশ করা শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক মানের শিক্ষাগত চাকরি আবেদন করতে পারবে । সেই মত কেন্দ্রীয় সরকারের এই যোগ্যতার সব পরীক্ষায় তারা আবেদন করতে পারবে । তাই ডাক সেবক চাকরিতেও তাদেরকে আবেদনের সুযোগ দিতে হবে । প্রয়োজন হলে অফ লাইনেও তারা আবেদন করতে পারবে । হাইকোর্টের এই রায়ের পর মাদ্রাসা বোর্ড থেকে পাশ করা বেশ কিছু প্রার্থী অফ লাইনে আবেদন করে । এর ঠিক কয়েক মাস পরেই দেখা যায় ডাক বিভাগ ওই আবেদনপত্র গ্রহণ না করে এই রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে ডিভিসন বেঞ্চে আবেদন করে ।
সেই মামলা এখন চলছে । এই প্রেক্ষাপটে রাজ্যের সংখ্যালঘু জনমানসে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ,এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কেন সরাসরি প্রধানমন্ত্রী কিংবা ডাক বিভাগের সঙ্গে কথা বলছেন না । প্রসঙ্গত বলা প্রয়োজন , এর আগে অটলবিহারী বাজপেয়ী যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ঠিক সেই সময়েও বিএসএফের নিয়োগ নিয়ে একই সমস্যা দেখা দিয়েছিল । সেবার রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এ বিষয়ে সরাসরি কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করেছিলেন এবং মাদ্রাসা বোর্ড থেকে পাশ করা প্রার্থীরা আবেদনও করতে পেরেছে । অনেকে আবার চাকরিও পেয়েছে ।
আর ডাক বিভাগে নিয়োগের ক্ষেত্রে মাদ্রাসা বোর্ড থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীদের আবেদনের সুযোগ করে দেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী নিজে উদ্যোগ নিলে সমস্যার সমাধান হয়ে যেত বলে সংখ্যালঘুরা মনে করছে । আর এ বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি আক্রমন করেছেন রাজ্যের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী , প্রবীণ আইনজীবী , প্রাক্তন সাংসদ ও কংগ্রেস নেতা সরদার আমজাদ আলী ।
তিনি বলেছেন , রাজ্য সরকার স্বীকৃত মাদ্রাসা বোর্ড থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীদের গ্রামীণ ডাক সেবক চাকরিতে আবেদনের সুযোগ না দিয়ে কেন্দ্র সংবিধান বিরোধী কাজ করেছে । কারণ সরকার স্বীকৃত বোর্ডকে মান্যতা দিতে কেন্দ্র সরকার বাধ্য । তারপরেই তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের সব কাজ করে দিয়েছেন বলে যিনি দাবি করেন সেই মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে কেন নীরব ? তিনি কেন এ বিষয়ে সরাসরি কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলছেন না । তিনি বলেন এর আগেও এমন একটা ঘটনা ঘটে ছিল তখন তো তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টচার্য নিজে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে মাদ্রাসা বোর্ড থেকে পাশ করাদের আবেদনের ব্যবস্থা করেছিলেন । আমজাদ সাহেব প্রশ্ন তোলেন তাহলে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী কেন বিষয়টি নিয়ে কথা বলছেন না ? সামনে ভোট আসছে বলেই কী অন্য কোনো কারণে তিনি নিরব রয়েছেন ? আমজাদ সাহেবের বিস্তারিত বক্তব্যের ভিডিও শুনুন ।