হাইকোর্টের নির্দেশে মুক্ত কলতান! আদালতের নির্দেশ ছাড়া শুধু গ্রেফতার নয় তদন্তও করা যাবে না
বাংলার জনরব ডেস্ক : বাম যুব নেতা কলতান দাশগুপ্তকে মুক্তি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ৫০০ টাকার বন্ডে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে আদালতের অনুমতি ছাড়া এই সংক্রান্ত মামলায় কলতান দাশগুপ্তকে গ্রেফতার করা যাবে না।আদালতের অনুমতি ছাড়া তার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারবে না পুলিশ বলে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের এই নির্দেশের পর কার্যত রাজ্য সরকারের মুখ পুড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।
এর ফলে মমতা প্রশাসন বেশ খানিকটা ব্যাকফুটে চলে গেল বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। গতকাল প্রথম শুনানির দিন কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারের কাছ থেকে জানতে চেয়েছিল কী কারনে কলতান দাশগুপ্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ? গতকাল কলতান দাশগুপ্তের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এই মামলার শুনানিতে বলেছিলেন কলতান দাশগুপ্ত অডিওতে যে কথোপকথন চালিয়েছেন তার পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তি হলে তিন বছর জেল হওয়ার কথা আর এক্ষেত্রে পুলিশ কোন নোটিশ না দিয়ে কিভাবে সরাসরি গ্রেফতার করতে পারে? আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের এই সওয়ালের পর কলকাতা হাইকোর্ট ও প্রশ্ন তুলে নোটিশ না দিয়ে কেন গ্রেফতার করা হলো তা হলফনামা দিয়ে জানাতে বলা হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে এই মামলার শুনানিতে সঞ্জীব দাস কে অর্জুন বলা হলেও কলতান দাশগুপ্ত কে কৃষ্ণ বলে সম্বোধন করে সরকারি আইনজীবী। সরকারি আইনজীবী দাবি করেন যে এই সঞ্জীবের সঙ্গে কল লিস্টে দেখা যাচ্ছে ১০০ বারের বেশি কথাবার্তা বলেছেন। তাহলে পূর্ব পরিচিতি অবশ্যই ছিল। তবে একথা ঠিক বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন যে কোথাও তো হামলা করার কথা আমার মক্কেল বলেননি। এরপর শুনানি শেষ হয় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই মামলার রায় দিতে গিয়ে স্পষ্ট করে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিল কলতান দাশগুপ্ত কে মুক্তি দিতে হবে। একইসঙ্গে এই মামলায় কলতান দাশগুপ্ত কে গ্রেফতার করা যাবে না আদালতের অনুমতি ছাড়া এবং কোন তদন্ত করা যাবে না আদালতের অনুমতি ছাড়া।
বাম যুবনেতা কলতান দাশগুপ্তকে মুক্তি দিল কলকাতা হাই কোর্ট। ৫০০ টাকার বন্ডে তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, আদালতের অনুমতি ছাড়া এই সংক্রান্ত মামলায় কলতানকে গ্রেফতার করা যাবে না। আদালতের অনুমতি ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তও করতে পারবে না পুলিশ। এই মামলায় চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। পাল্টা চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিতে পারবেন কলতানও। আগামী ১৮ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নায় বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সিপিএমের তরফেও লালবাজার অভিযানের আয়োজন করা হয়েছিল। এই আবহে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ একটি অডিয়ো প্রকাশ করেন। তাতে শোনা গিয়েছিল, কেউ বা কারা সল্টলেকে জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নাস্থলে হামলার ছক কষছেন। কুণালের অভিযোগ ছিল, ধর্নাস্থলে হামলা চালিয়ে তৃণমূলের ঘাড়ে তার দায় চাপানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। ওই অডিয়ো প্রকাশের পরেই পুলিশ তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে। গ্রেফতার করা হয় কলতানকে।
কুণালের অডিয়ো মামলায় সঞ্জীব দাস নামের আরও এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় স্পষ্ট নয়। পুলিশ জানিয়েছিল, অডিয়োর সত্যতা তারা যাচাই করে দেখেছে। তাতে যে গলা শোনা যাচ্ছে, তার একটি কলতানের। তবে আইনানুগ পদ্ধতিতে কলতানের গলার স্বর পরীক্ষা করে এ বিষয়ে প্রমাণ নির্দিষ্ট করা হবে, জানিয়েছিল পুলিশ। কলতান নিজে অবশ্য গ্রেফতারির পরেই দাবি করেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে।